নাট্যাভিনেতা আহসান হাবিব নাসিম। নাটক, মঞ্চ, বিজ্ঞাপনে সরব উপস্থিতি এই অভিনেতার। বর্তমানে তিনি অভিনয়শিল্পী সংঘের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। তার সমসাময়িক ব্যস্ততা নিয়ে আজকের আয়োজন—
অভিনয়শিল্পী সংঘের পাবনা যাওয়ার কারণ কী?
ঢাকার বাইরেই আমাদের অনেক অভিনয়শিল্পী রয়েছেন। নির্বাচনে ভোট দেওয়ার উদ্দেশে পাবনা থেকে পাঁচজন অভিনয়শিল্পগুী ঢাকায় আসার সময় এক দুর্ঘটনার শিকার হন। এই ঘটনায় মোজাম্মেল হক মারা যান এবং আবদুল মালেক সরকার গুরুতর আহত হন। তাকে ঢাকা মেডিকেলে আনার খবর শুনে আমরা অনেকেই তাকে দেখতে যাই। তার পা কেটে ফেলার কথা থাকলেও না কেটে ১৬টি অস্ত্রোপচার করা হয়। আমরা অভিনয়শিল্পী সংঘ সে সময় প্রায় সোয়া দুই লাখ টাকা দিই। এরপর সিদ্ধান্ত নিই, সবাই মিলে পাবনা যাব তাকে সহযোগিতা করতে। সে জন্য সবাই যাই দুই পরিবারের পাশে দাঁড়াতে। মোজাম্মেল হকের পরিবারকে দুই লাখ টাকা দিই। অন্যদিকে আমাদের কথায় স্থানীয় চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকের ছেলেকে সেখানে চাকরির ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন। আসলে সব শিল্পীই শিল্পীদের পাশে থাকবে।
অভিনয়শিল্পী সংঘ নিয়ে পরিকল্পনা?
আমরা শিল্পীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। সিনেমা বা বিজ্ঞাপনে অভিনয়শিল্পী কাজ করার ক্ষেত্রে চুক্তিবদ্ধ হয়ে থাকেন। কিন্তু নাটকে সেটি নেই। আমরা চাই, নাটকের ক্ষেত্রেও তেমনি চুক্তিনামার মাধ্যমে শিল্পীদের শিডিউল দেওয়া-নেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এর ফলে টিভি মিডিয়ার সমস্যা অনেকাংশেই মিটে যাবে। পরিচালকরা অভিনয়শিল্পী সংঘের অন্তর্ভুক্ত শিল্পীদের নিয়ে নাটক বানাবেন। এ ছাড়াও সামনে আমরা সব শিল্পীর চূড়ান্ত একটা ডাটাবেজ তৈরি করার পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চলছে। শিল্পীদের যৌক্তিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবার সর্বাত্মক সহায়তার প্রয়োজন।
শিল্পীদের কাজ করতে কোন কোন সংকটের মুখোমুখি হতে হয়?
অনেক সংকটই রয়েছে। যার মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব, শুটিংয়ে নারী শিল্পীদের নিরাপত্তা, শিল্পীদের পারিশ্রমিকের নিশ্চয়তা, শিডিউল দিয়ে হঠাৎ করে শুটিং বন্ধ করাসহ অনেক সংকটেই ভুক্তভোগী হয়ে আসছে আমাদের শিল্পীরা।
এবার অন্য প্রশ্নে যাই, অভিনয় নিয়ে ব্যস্ততা ...
গত দুই-তিন মাস ব্যস্ত ছিলাম নির্বাচন এবং পারিবারিক বিষয় নিয়ে। সময় দিতে পারিনি। এখন আবার সময় দিচ্ছি। সম্প্রতি মুরাদ পারভেজের রচনা ও পরিচালনায় প্রচারিত হচ্ছে ধারাবাহিক নাটক ‘রেডিও জকি ও কতিপয় গল্প’।
আর চলচ্চিত্রে অভিনয়...
প্রায় দুই-আড়াই বছর আগে অভিনয় করেছিলাম ডা. এমদাদুল হক এবং মোহাম্মদ রনির ‘পুতুল কথা’ চলচ্চিত্রে। ছবিটিতে আমি একজন সাংবাদিকের চরিত্রে অভিনয় করেছি। গল্প রচনা করেছেন ডা. এমদাদুল হক। মূলত বাংলাদেশের মফস্বল শহরে জেলেদের বর্তমান অবস্থা ছবিটিতে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। শুরুতেই কানাডাতে মুক্তি দেওয়া হয়। তবে আশার খবর হচ্ছে, আসছে ৯ তারিখ ৫টায় বাংলাদেশে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে এই ছবিটি মুক্তি পাবে।
মঞ্চে সময় দিচ্ছেন না?
সুবচন নাট্য সংসদে কাজ করছি। অভিনয়শিল্পী সংঘ এবং অভিনয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে নিয়মিত মঞ্চে অভিনয় করা সম্ভব হয়ে উঠছে না।
বিজ্ঞাপনেও তো আপনি অনেক সরব...
বিজ্ঞাপনে চরিত্র আর ভাবনা পছন্দ হলে করি। তবে অবশ্যই সেখানে অভিনয় করার সুযোগ এবং ভালো চরিত্র থাকতে হবে। সম্প্রতি গাজী স্টোভ, প্রাণ ম্যাঙ্গো জুস এবং মেরিন হেয়ার ডাইয়ের কাজ করেছি।
পরিচালনা করার প্ল্যান আছে...
আমার মধ্যে এই বিষয়টা আসে না। আমি অভিনেতা, আমাকে অভিনয়ের মধ্যে থাকাটাই কি শ্রেয় নয়? এমন অনেক মানুষ আছে যারা চারটি সংগঠনের মধ্যে আছেই। সেখানে সে নিজেকে কি বলে পরিচয় দেবে? হ্যাঁ সবারই একটা সাপোর্টিং সোর্স থাকা দরকার। কিন্তু যার যেখানে থাকা উচিত সে সেখানে থাকলে ভালো কিছু আমরা আশা করতে পারি। এসব লেজেগোবরে হওয়ার কারণে আমরা ভালো দর্শক হারাচ্ছি, ঐতিহ্য হারাচ্ছি।