বৃহস্পতিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ওবায়দুল কাদেরের ছবির মহরত

আলাউদ্দীন মাজিদ

ওবায়দুল কাদেরের ছবির মহরত

গাঙচিল চলচ্চিত্রের মহরত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমসহ ছবির অভিনয়শিল্পী পূর্ণিমা, ফেরদৌস, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তসহ অন্যরা

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উপন্যাস ‘গাঙচিল’ নিয়ে একই শিরোনামে চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন ফেরদৌস ও নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুুল। গতকাল চলচ্চিত্রটির মহরত উপলক্ষে ঢাকা ক্লাবে বসেছিল জমজমাট তারার মেলা। অনুষ্ঠানে কলকাতা থেকে ছুটে আসেন টালিগঞ্জের জনপ্রিয় নায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। মহরত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলঙ্কৃত করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। তারকাদের মধ্যে পূর্ণিমা, তারিক আনাম খান, জ্যোতিকা জ্যোতি, দিলারা, ফেরদৌস, প্রয়াত নায়ক মান্নার সহধর্মিণী শেলী মান্না, পরিচালক সমিতির সভাপতি গুলজার, প্রযোজক সমিতির সাবেক সভাপতি নাসিরউদ্দীন দিলু প্রমুখের উপস্থিতিতে ঝলমলে হয়ে ওঠে ‘গাঙচিল’ চলচ্চিত্রের মহরত অনুষ্ঠান।

ছবির গল্পকার মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হলে আগত অতিথিরা তাকে করতালি দিয়ে সাদর অভ্যর্থনা জানান। তারকা খচিত বর্ণিল অনুষ্ঠানের আলোকচ্ছটায় উচ্ছ্বসিত মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি বাংলার সাধারণ মানুষের যাপিত জীবনের ছায়া আমার গল্পে তুলে এনেছি। এতে দুর্দশাগ্রস্ত গাঙচিল অঞ্চলের মানুষের মুক্তির পথ উপস্থাপন করা হয়েছে। আর এই গল্প নিয়ে নায়ক ফেরদৌস ও নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুুল চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন বলে তাদের ধন্যবাদ জানাই। কারণ এদেশের মানুষের জীবনের গল্প নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করলে দর্শক তাতে তাদের পারিপার্শ্বিকতার চিত্র খুঁজে পেয়ে আবার ছবি দেখতে সিনেমা হলে ফিরবে বলে আমার বিশ্বাস।

প্রধান অতিথি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, সংস্কৃতি হচ্ছে একটি দেশের প্রাণ। বঙ্গবন্ধু জেলজুলুম সহ্য করেও চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য এফডিসি প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। দেশীয় সংস্কৃতির উন্নয়নে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। তার পথ অনুসরণ করে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশীয় চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতির বিকাশে অনন্য ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের জীবনঘনিষ্ঠ গল্প নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ এটিই প্রমাণ করে এ সরকারের মন্ত্রীরা শুধু রাজনীতি নয়, সংস্কৃতি চর্চাতেও ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আমাদের দেশে মা বোনেরা এখন সিনেমা হলে যান না। কারণ সিনেমা হলের পরিবেশ ভালো নেই। আমরা সিনেমা হলের পরিবেশ এবং মৌলিক গল্পের ছবি নির্মাণে উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে চলচ্চিত্রের সুদিন ফিরিয়ে আনব।

তথ্যপ্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, ডিজিটাল সিনেমা হল নির্মাণ, চলচ্চিত্রে অনুদানের পরিধিবৃদ্ধিসহ এর মাধ্যমের উন্নয়নে বর্তমান সরকার একের পর এক ভূমিকা রেখে যাচ্ছে এবং এই ধারা অব্যাহত থাকবে। ঋতুপর্ণা বলেন, আমাকে যখন ওপার বাংলার নায়িকা বলা হয় তখন আমি অস্বস্তিবোধ করি। আমিই কিন্তু অনেক আগে থেকে দুই বাংলার ছবিতে অভিনয় করে উভয় বাংলার মধ্যে সংস্কৃতির সেতু তৈরিতে ভূমিকা রেখে আসছি। আমি কখনই দুই বাংলাকে বিভক্ত করে দেখি না। আমি মনে করি দুই বাংলা মিলিয়েই এক বাংলা। অনেক অনেক শুভ কামনা নির্মিতব্য গাঙচিল চলচ্চিত্রের জন্য। আমার বিশ্বাস এই সিনেমা দেখতে দর্শক হলে আসবেন। ফেরদৌস বলেন, মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে আমি খুবই কৃতজ্ঞ যে তিনি তার উপন্যাসটি আমাকে দিয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য। আমার বিশ্বাস গাঙচিল হবে আন্তর্জাতিক মানের একটি চলচ্চিত্র। পূর্ণিমা বলেন, নেয়ামুলের নির্দেশনায় চলচ্চিত্রে এবারই প্রথম কাজ করছি। ভালোলাগার বিষয় হলো ফেরদৌস আমার খুব ভালো বন্ধু। তার প্রযোজিত চলচ্চিত্রে কাজ করতে যাচ্ছি। গাঙচিল এবং ‘জ্যাম’ একসঙ্গে আমি ও ফেরদৌস দুটি চলচ্চিত্রে কাজ করতে যাচ্ছি। তাই আমার চলচ্চিত্রে ফেরাটা অনেক ভালোভাবেই হচ্ছে।

‘গাঙচিল’ ছবির সংলাপ ও চিত্রনাট্য রচনা করেছেন মারুফ রেহমান। অভিনয় করবেন ফেরদৌস, পূূর্ণিমা ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তসহ অনেকে।

ফেরদৌসের প্রযোজনা সংস্থা নুজহাত ফিল্মস এবং পরিচালক নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুলের প্রযোজনা সংস্থা ‘ইচ্ছেমতো’র প্রযোজনায় আগামী অক্টোবরে শুরু হচ্ছে ‘গাঙচিল’ ছবির নির্মাণ কাজ। নির্মাতা নঈম জানান, গল্পটি যেহেতু নোয়াখালী গাঙচিল অঞ্চলের তাই ছবিটির শুটিং হবে ওই এলাকায়।

অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে পাঁচ দিন টানা ঢাকায় এবং এরপর নোয়াখালীর গাঙচিলে ছবিটির শুটিং হবে।

ফেরদৌস ‘গাঙচিল’ চলচ্চিত্রটি প্রয়াত নায়ক সালমান শাহকে উৎসর্গ করেন।

সর্বশেষ খবর