শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

এহতেশাম দাদুকে খুব মিস করছি

শাবনূর

এহতেশাম দাদুকে খুব মিস করছি

১৯৯৩ সালের ১৫ অক্টোবর শাবনূর অভিনীত প্রথম ছবি ‘চাঁদনী রাতে’ মুক্তি পায়। দেখতে দেখতে কেটে গেল ২৫ বছর। চলচ্চিত্র জগতে এই দীর্ঘ পথ চলায় এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী উপহার দিয়েছেন অসংখ্য মানসম্মত চলচ্চিত্র। লাভ করেছেন জাতীয় সম্মাননা। বেশ কয়েক বছর ধরে চলচ্চিত্র জগৎ থেকে দূরে রয়েছেন তিনি। এসব বিষয়ে তার বলা কথা তুলে ধরেছেন— আলাউদ্দীন মাজিদ

   

চলতি বছর আপনার চলচ্চিত্র জীবনের রজতজয়ন্তী, অনুভূতি কেমন?

অনুভূতি অবশ্যই ফুরফুরে, অনেক ভালো লাগার মতো। কীভাবে ২৫টি বছর কেটে গেল বুঝতেই পারছি না। মনে হচ্ছে এইতো সেদিনের কথা। শ্রদ্ধেয় এহতেশাম দাদু [চিত্র পরিচালক] আমাকে রুপালি জগতে নিয়ে এলেন। ২৫ বছর পর এসেও মনে হচ্ছে অভিনয় জীবনের শুরুটা এখনো জ্বলজ্বলে। প্রথম ছবি মুক্তির দিন ১৯৯৩ সালের ১৫ অক্টোবর চিরস্মরণীয় হয়ে আছে আমার মনেপ্রাণে।

 

সফল অভিনয় জীবনের জন্য কার অবদানকে স্মরণ করবেন?

প্রথমেই মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি যদি আমার ভাগ্যে এই সুনাম আর প্রতিষ্ঠা লিখে না রাখতেন তাহলে কখনো অভিনেত্রী শাবনূরের জন্ম হতো না। এহতেশাম দাদুর অবদানের কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। তিনি আমাকে কাজী শারমিন নাহিদ নূপুর থেকে শাবনূর নামে প্রতিষ্ঠা পাইয়ে দিয়েছেন। আজ আমার চলচ্চিত্র জীবনের রজতজয়ন্তীতে এসে এহতেশাম দাদুকে খুব মিস করছি। তার শূন্যতা প্রতি পদে পদে অনুভব করি। তিনি আমরণ আমার হৃদয়ে শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে থাকবেন। সব শেষে প্রিয় দর্শকদের কাছে আমি চিরঋণী। তারা আমাকে ভালোবেসে গ্রহণ না করলে কখনো আমি আজ এ পর্যায়ে আসতে পারতাম না।

 

অভিনয় থেকে দূরে রয়েছেন, কেন?

প্রথমে বলতে চাই, একটা সময়ে এসে দেখলাম মানসম্মত ছবির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। দর্শক আগের মতো সিনেমা হলে যাচ্ছে না। দর্শকের অভাবে লোকসান গুনে সিনেমা হলও বন্ধ হচ্ছে। এই অবস্থায়ও ভালো গল্প ও চরিত্রের ছবির জন্য মুখিয়ে ছিলাম। কোনো উন্নতি না দেখে অর্জিত সম্মান ধরে রাখতে এক সময় সরে দাঁড়ালাম। ভাবলাম দীর্ঘ সময় তো চলচ্চিত্রের জন্য ব্যয় করলাম। এবার না হয় বিশ্রাম নিই। স্বামী, সন্তান আর সংসার নিয়ে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করি। এভাবেই চলচ্চিত্র থেকে দূরে সরে থাকা।

 

নির্মাণে আসার কথা ছিল... কখন ফিরছেন?

কখন ফিরব এটি নির্ভর করবে চলচ্চিত্রশিল্পের সার্বিক উন্নয়নের ওপর। আমি চাই সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নিয়মনীতির মধ্যে থেকে এই শিল্পটি আবার সুদিন ফিরে পাক। সবাই আগের মতো ব্যস্ত হয়ে পড়ি। এখন সেই অপেক্ষায় আছি।

 

আবার পুরনো দিনে ফিরে যাই, রুপালি জগতে আসার গল্পটা শুনি...

এহতেশাম দাদুর সঙ্গে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। আমাকে ও আমার বোন ঝুমুরকে খুব স্নেহ করতেন তিনি। এক দিন হঠাৎ বাসায় এসে আমার বাবাকে বললেন, নূপুরকে আমাকে দিন, ওকে আমি আমার নতুন ছবির নায়িকা হিসেবে কাস্ট করতে চাই। বাবা এবং আমি প্রথমে অবাক হলেও পরে বাবা দাদুর কথায় সায় দিলেন। আমি ভীষণ নার্ভাস ছিলাম। অভিনয় কী করে করব বুঝতে পারছিলাম না। দাদু বললেন, এটি কোনো কঠিন ব্যাপার নয়। আমি সব শিখিয়ে পড়িয়ে দেব। ব্যস, শুরু হয়ে গেল জীবনের নতুন জার্নি।

 

কার সঙ্গে জুটি বেঁধে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছেন?

এই মুহূর্তে আমার প্রিয় মানুষ সালমান শাহর কথা বলতে চাই, তার সঙ্গে কাজ করাটা আমার জন্য আশীর্বাদের মতো। ও আর আমি জুটি বেঁধে ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ ছবিতে কাজ করে রীতিমতো দর্শক ক্রেজে পরিণত হই। তার অভিনয় জীবনের ২৭টি ছবির মধ্যে ১৪টির নায়িকাই ছিলাম আমি। তাকে হারিয়ে এখনো ভীষণ শূন্যতা অনুভব করি।

এরপর রিয়াজ ভাইয়ের কথা বলতে চাই। তার সঙ্গেও আমার জুটি বাঁধা প্রচুর ছবি দর্শক সাদরে গ্রহণ করেছে। আসলে চিত্রজগতের সব নির্মাতা, শিল্পী, কলাকুশলীর কাছে আমি কৃতজ্ঞ। সবার আন্তরিক সহযোগিতায় আমি অভিনেত্রী শাবনূর হয়ে উঠতে পেরেছি। দীর্ঘ সময় সফলতার সঙ্গে পথ পাড়ি দিতে পেরেছি।

সর্বশেষ খবর