শনিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

কফি খাওয়ার লোভে আবার লিখলাম

কফি খাওয়ার লোভে আবার লিখলাম
সমরেশ মজুমদার প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি ঔপন্যাসিক। পশ্চিমবঙ্গের মতো বাংলাদেশের পাঠকের কাছেও সমান জনপ্রিয়। তিনি বেশ কিছু সফল টিভি সিরিয়ালেরও কাহিনীকার। যখনই তিনি ঢাকায় আসেন বাংলাদেশ প্রতিদিন অফিসে আড্ডা দিয়ে যান। আর এবার যোগ দিয়েছিলেন আমাদের স্পেশাল তারকা আড্ডায়। তার সঙ্গে কথা বলেছেন- শেখ মেহেদী হাসান ও শামছুল হক রাসেল। ছবি : জয়ীতা রায়

 

বাংলা ভাষার অন্যতম খ্যাতিমান কথাশিল্পী সমরেশ মজুমদার। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে আছে তার পাঠক। তার ‘উত্তরাধিকার’, ‘সাতকাহন’, ‘কালপুরুষ’ বাংলা ভাষার অন্যতম সেরা রচনা। বাংলাদেশ প্রতিদিনে তিনি নিয়মিত লেখেন। এবার ঢাকা সফরে এলে তার কাছে প্রথমে জানতে চাওয়া হয়, কেমন আছেন? উত্তরে তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে ভালোই আছি। এবার ঢাকার আবহাওয়াটা বেশ ভালো। তবে উপভোগ করছি। তা ছাড়া এখানে এলে কোনো পার্থক্য মনে করি না। কারণ বাংলাদেশের পাঠকরা আমাকে খুব ভালোবাসে। এখানে আমার অনেক বন্ধু আছে। তাদের সঙ্গে দেখা হয়। ঢাকার মানুষের আতিথেয়তা আমাকে মুগ্ধ করে। মনে হয় নিজ শহর কলকাতাতেই আছি।’

সমরেশ মজুমদারের ছেলেবেলা ও ব্যক্তিজীবনের অনেক ঘটনা প্রভাব ফেলেছে তার লেখায়। তার ছেলেবেলার স্মৃতিচারণায় তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় প্রত্যেকের ছেলেবেলা কমবেশি একই রকম কাটে। যারা খুব অর্থনৈতিক দুর্দশার মধ্যে বড় হয়েছে আর যারা অতিরিক্ত অর্থনৈতিক সুবিধার মধ্যে বড় হয়েছে তাদের জীবন আলাদা। তবে অধিকাংশ সাধারণ মানুষের জীবন একই রকম। আমার ছেলেবেলায় দুঃখ-কষ্ট খুব বেশি বুঝতে পারিনি। আমার মায়ের হয়তো বছরে আটটি দামি শাড়ি কেনার কথা কিন্তু সন্তানদের চাহিদা মেটাতে গিয়ে দেখা গেল তিনি দুটি শাড়ি কিনেছেন। এটা বুঝতে পারি যখন আমি আয় করতে শিখি তখন। কিন্তু তখন কিছুই করার ছিল না। ততদিনে আমার বাবা-মা প্রয়াত। তখন অদ্ভুত একটা পাপবোধ আসে। ওদের জন্য এখন আফসোস হয়। আমি ওদের কাছ থেকে কেবলই নিয়েছি দিতে পারেনি কিছুই।’ তিনি মনে করেন, ‘অপ্রত্যাশিতভাবেই লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেছি। আমার বয়স তখন ২২ কি ২৩ বছর, স্কটিশ চার্চ কলেজে পড়ি। আমি থিয়েটার করতাম। বলতে পারেন অভিনয় নিয়ে মেতে থাকতাম। আমাদের গ্রুপের জন্য একবার একটা স্ক্রিপ্টের প্রয়োজন পড়ল। তখন আমার এক বন্ধু বলল, ‘তুই লেখ, চেষ্টা করলে ভালো কিছু করতে পারবি।’ বন্ধুর কথায় সায় দিয়ে নাটক লিখলাম। কিন্তু সেটা মনঃপূত না হওয়ায় আমাকে গল্প লিখতে বলল। যেই কথা সেই কাজ। আমিও নাটকটিকে গল্পে রূপান্তর করলাম। প্রথমে দেশ পত্রিকায় ছাপানোর জন্য পাঠালাম। কিন্তু ছাপানো হয়নি। আমার লেখা না ছাপানোর কারণে সেই বন্ধু ওই পত্রিকার সম্পাদকের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করল। অবশেষে কাগজে ছাপালাম। সেখান থেকে আমাকে ১৫ টাকা দেওয়া হলো। আমি তো মহাখুশি। বন্ধুরাও পারে তো আমাকে মাথায় তুলে নাচে। ওই টাকা নিয়ে সবাই মিলে গেলাম কফি হাউসে। কফির কাপে ধোঁয়া উড়িয়ে চুটিয়ে আড্ডা মারলাম। বন্ধুরাও বলল, ‘তুই আবার লেখ, তাহলে আবার টাকা পাবি।’ আমিও কফি খাওয়ার লোভে আবার লিখলাম। এবার দেওয়া হলো ৫০ টাকা। সেখান থেকে ২৫ টাকা খরচ করে কফির সঙ্গে জলখাবারও খেলাম। বলতে পারেন কফির দাম মেটাতেই লেখালেখি শুরু করি।’

ছাত্রজীবনে লেখালেখি নিয়ে আপনার বিশেষ কোনো স্মৃতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে এমএ পড়ি। আমাদের বিষয় ছিল ভাষাতত্ত্ব। শিক্ষকের নাম ছিল রমেশ্বর দাশ। ভদ্রলোক ভালো পড়াতেন। যখন কথা বলতেন মাঝে মাঝে তার মুখ থেকে উড়িয়া ভাষা বেরিয়ে আসত। ওর ক্লাস করতে ইচ্ছেই করত না। একঘেয়েমি লাগত। কিন্তু পড়তে হতো। না পড়লে পরীক্ষায় লিখতে পারব না। আবার উপস্থিতিরও ব্যাপার ছিল, তাই হাজিরাটা দিয়েই কেটে পড়তাম। কখনো ক্লাসের মধ্যে গল্পের বই পড়তাম। একদিন তিনি দেখলেন আমি ক্লাসের মধ্যে কিছু একটা করছি। রেগে গিয়ে বললেন, দাঁড়াও। এমন একটা বাক্য বল যাতে কোনো দেশি শব্দ নেই। সব বিদেশি শব্দ। বিদেশি শব্দ বাংলায় জুটেছে। আমি তোমাকে একটা শব্দ বলি, চেয়ার। চেয়ার বলবা না কিন্তু। অন্য আরেকটি বিদেশি বাক্য বল।

হয়েছিল কী আমি তার আগে রাতে বাংলা ভাষাতত্ত্ব নামে একটা বই আছে, সেটির পাতা উল্টাতে উল্টাতে দেখলাম বিদেশি শব্দ বাংলায় কী এসেছে। অবাক হয়ে দেখলাম সেখানে কোমর শব্দটা এসেছে। এটা ফারসি শব্দ। সেখান থেকে আমাদের বাংলা ভাষায় এসেছে। পছন্দটা আরবি শব্দ। পছন্দ। বেশ মজা লাগছিল। সেখান থেকে মাথায় এসে গেল, বললাম সরু নরম গরম কোমর পছনদ্। তিনি বললেন কী বললে! থাম। তিনি রেগে লাল হয়ে গেলেন।  বৃদ্ধ লোক। অশ্লীল, অশ্লীল। বলতে বলতে ক্লাস ছেড়ে হুড়হুড় করে বের হয়ে গেলেন। তার ১৫ মিনিট পর পিয়ন এসে বলল সমরেশ মজুমদার কে? আমি উঠলাম। সে বলল, আপনাকে স্যার ডাকছে।

শিক্ষকরা যেখানে ছিলেন সেখানে গেলাম। সেখানে ছিলেন বিখ্যাত লেখক প্রমথনাথ বিশী, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়সহ আরও অনেকে। সবাই আমার দিকে খটমটে চোখে তাকালেন। প্রমথনাথ বিশী বললেন, বস। আমি বললাম, না, স্যার। তিনি বললেন, আশ্চর্য! তোমাকে বসতে বললাম আমি, তুমি বলছ না স্যার। তোমাকে তো ইউনিভার্সিটি থেকে বের করে দেওয়া হবে। তুমি অশ্লীল ভাষায় শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছ। তোমার ইউনিভার্সিটিতে থাকার কোনো যোগ্যতা নেই।

আমি বললাম, আমি অশ্লীল বলিনি স্যার।

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, ও কী বলেছে ওর মুখেই শুনুন। যিনি আমাদের পড়িয়েছিলেন তিনি বললেন, কী দরকার! কী দরকার! অশ্লীল বলেছে অশ্লীল! মেয়ে মানুষের কোমর নিয়ে কথা বলেছে!

প্রমথনাথ বিশী আমাকে বললেন, মেয়ে মানুষের কোমর নিয়ে তোমার কী দরকার? কী বলেছ?

আমি যখন বাক্যটা বললাম ওই স্যার বললেন, দেখলেন, দেখলেন!

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, আমি একটা জিনিস বুঝতেই পারছি না তুমি কখনো গরম কোমর দেখেছ যে পছন্দ করবে? কোমর গরম হয় কখন যখন ফোঁড়াটোড়া হয়। মেয়েদের কোমর সরু হয় বুঝলাম, কিন্তু তুমি গরম কী করে বললে!

প্রমথনাথ বিশী বললেন, খুব আলোচনার বিষয়! তুমি কার গরম কোমর দেখেছ?

এরপর বললেন, কোমর তো অশ্লীল জায়গা না। শুনে ওই স্যার গরম হয়ে গেলেন। কিন্তু কী কারণে গরম হলেন বলতে পারছেন না। কিন্তু পছন্দও করছেন না।

পরে আমি বেনিফিট অব ডাউট পেয়ে গেলাম। একজন স্যার বললেন, দেখ, এরকম কথা তার সঙ্গে বলবে না। আর নরম-গরম কোমরের সন্ধান পাও তো আমাদের জানাবে! আমি বেঁচে গেলাম!’

তার ‘উত্তরাধিকার’, ‘কালবেলা’ ‘সাতকাহন’ ও ‘কালপুরুষ’-এর ধারাবাহিকতায় ‘মৌষলকাল’ লেখার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন এভাবে, ‘আসলে ‘উত্তরাধিকার’, ‘কালবেলা’ ও ‘কালপুরুষ’ আমার লেখালেখি জীবনে ওতপ্রোতভাবে মিশে গেছে। এই উপন্যাসত্রয়ীর জনপ্রিয়তা ও পাঠকদের ভালোবাসা মাথায় রেখে ‘মৌষলকাল’ লিখেছিলাম। এখানে মহাভারতের কুরুক্ষেত্রের পর যে প্র্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছিল তা তুলে ধরেছি। আরেকভাবে বলতে গেলে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সমস্যা ও রাজনৈতিক বেড়াজাল তুলে ধরেছিলাম এখানে। বামফ্রন্টের পরাজয় ও তৃণমূল কংগ্রেসের উত্থান এবং বতর্মান প্রেক্ষাপটে রাজনীতির অবস্থানকে তুলে ধরেছি। 

সমরেশ মজুমদার চার দশকের অধিক সময় লিখছেন। এতদিনের লেখালেখিতে তার কোনো ক্লান্তি নেই। তিনি বলেন, ‘লেখালেখি করছি ৫০ বছর ধরে। ৫০ বছর তো আর কম সময় নয়। এটা এ রকম একটা ব্যাপার, আপনাকে একটা ঘোড়ার ওপর উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘোড়াটা দৌড়াচ্ছে, আপনাকে লাগামটা ধরে রাখতে হবে। আপনি যদি না পারেন, যদি আলস্য এসে যায়, তাহলে আপনি পড়ে যাবেন। বলে না, সিংহের ওপরে ওঠা সহজ, কিন্তু নামা সহজ নয় এ রকমই একটি অবস্থা। ৫০ বছরের মধ্যে প্রথম ৫ বছর বাদ দিলে থাকে ৪৫ বছর, ওই ৪৫ বছর ধরে আমার একটা মান রেখে লিখে যেতে হচ্ছে। সেটা ধরে রাখা অত্যন্ত ক্লান্তিকর। আর লিখতেই ইচ্ছে করে না। সমস্যাটা কোথায়? সুনীলদা মারা যাওয়ার পর লেখার চাপ আরও বেড়ে গেছে। এ চাপ সামলানো কঠিন।’

বাংলাদেশের লেখকদের মধ্যে কাদের লেখা আপনি পড়েন, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এখানে আমার অনেক প্রিয়জন রয়েছে। সৈয়দ শামসুল হক, হাসান আজিজুল হক, সেলিনা হোসেন, ইমদাদুল হক মিলন, আনিসুল হক এদের লেখা নিয়মিত পড়ি। প্রয়াতদের মধ্যে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, শওকত ওসমান, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, মাহমুদুল হক আমার প্রিয়। অন্যদিকে আজও আমি ‘চাঁদের অমাবস্যা’, ‘খোয়াবনামা’ কিংবা ‘জীবন আমার বোন’ মন দিয়ে পড়ি। এসব লেখা আজীবন থাকবে। হুমায়ূনের হঠাৎ প্রয়াণ আমাদের বিশেষ ক্ষতি করল। শামসুর রাহমান আমার প্রিয় বন্ধু। তাঁর লেখা আজীবন মানুষ পড়বে। আমি বেলাল চৌধুরী, রফিক আজাদের কথাও বলতে চাই। সৈয়দ শামসুল হক, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শামসুর রাহমান, বেলাল চৌধুরী, রফিক আজাদ এঁরা বাংলা সাহিত্যকে অনেক দিয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। তাহলেই এগিয়ে যাবে বাংলা সাহিত্য।’

বলা হয় এখনকার লেখাগুলোতে গভীরতা কম। এ বিষয়ে আপনার কী অভিমত? তিনি বলেন, ‘আগে সাহিত্য ও সাংবাদিকতা দুটো আলাদা জগৎ ছিল। সাহিত্যে কখনো সাংবাদিকতা আসত না এবং সাংবাদিকতাও কখনো সাহিত্যে মিশত না। ধীরে ধীরে বিষয়টা এমন পর্যায়ে চলে এলো যেখানে সাংবাদিকতা সাহিত্যে চলে এলো এবং সাহিত্যও সাংবাদিকতায় চলে এলো। এখন নাটকীয় ভাষায় সাংবাদিকতার চর্চা হচ্ছে। একটা গল্প গল্প ভাব চলে এসেছে। সাংবাদিকতায় সাহিত্য জুড়ে বসেছে। আগে ঘটনাগুলো বর্ণনা করা হতো সরাসরি। লেখালেখির নান্দনিক শৌকর্যের জায়গাটা, কলাকৌশলের জায়গাটাও দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। সময়ের পরিবর্তন তো হচ্ছেই। ৫০-৬০ দশকে আমরা যে আধুনিক বাংলা গান শুনতাম, শ্যামল, সুধীন আর মান্না দে... মানুষ মুগ্ধ হয়ে শুনত। এখন ওদের জায়গায় যারা রয়েছেন তাদের গান হয়তো কিছু তরুণ ছেলে শোনে, কিন্তু তাদের রেকর্ড বিক্রি হয় না। সবদিক দিয়ে একটা পরিবর্তন, আমি খারাপ ভাষায় বলব না, একটা নিম্নমুখী হচ্ছে।

পরিবর্তন তো ভাষার ক্ষেত্রেও হচ্ছে। একসময় সাধু ভাষায় সাহিত্য রচিত হতো, বঙ্কিমবাবু লিখতেন। তারপর শরৎচন্দ্র লিখতে আরম্ভ করলেন, লোকে গালাগাল করত, বলত ওরা সাহিত্যকে একদম ঠাকুর ঘর থেকে বের করে বাইরের ঘরে নিয়ে এসেছে। কিন্তু সেই গালাগাল টিকেনি। তারপর রবীন্দ্রনাথ আমাদের চলতি ভাষায় সাহিত্য লিখেছেন। একসময় তিনি কিন্তু বঙ্কিমী ভাষায় লিখেছেন। তারপর বিভূতিভূষণ, তারাশঙ্কর যে পরিবর্তনটা করলেন সেটা কথ্য ভাষা, কিন্তু কথ্য ভাষা হলেও সেটা কিন্তু সংবাদপত্রের ভাষা না। আমরা সেই দৃষ্টান্তটাই বহন করে চলেছি।

গত ৩-৪ দশকে দুটি ধারার কথা যদি আমরা বলি, একটা জনপ্রিয় লেখার ধারা, অন্য ধারাটা সিরিয়াস/ গুরুগুম্ভীর। তরুণদের মধ্যে দ্রুত লেখক হওয়ার প্রবণতা, দ্রুত বই করার প্রবণতাও দেখি।

আগে এমন দ্রুততা কম ছিল। আমি যখন লেখালেখি শুরু করি, আট বছর ধরে ছোটগল্প লিখেছি। আমরা উপন্যাস লেখার কথা ভাবতেই পারিনি, সময় পাইনি, সুযোগও হয়নি। তার চেয়ে বড় কথা ভাবতেই পারিনি। ৮/১০ পাতার ছোটগল্প লিখে আট বছর পার করে ফেলেছি। এটা কিন্তু কম সময় না। তারপর যখন আমাকে উপন্যাস লিখতে বলা হলো আমি ভয় পেয়ে গেলাম। গল্প ৮-১০ পাতা, উপন্যাস ১০০/১৫০ পাতা। মনে হলো আমি তো ১০ পাতার বেশি লিখতে পারি না! তাহলে কি আমি ১০টা গল্প লিখে উপন্যাস হিসেবে চালাব!

বর্তমান প্রজম্মে র লেখা কেমন লাগে? তিনি বলেন, ‘আমি খুঁজে খুঁজে তরুণদের লেখা পড়ি। তাদের লেখার সঙ্গে ভাবনা বিনিময় করি। তরুণদের লেখায় সাধারণ মানুষের ঘামের গন্ধ পাই। চারপাশের মানুষের কথা জানতে চাই। তবে তথ্যমূলক সাহিত্য আমাকে প্রভাবিত করে না এবং তাতে আমার আসক্তি নেই। ধরুন, রবীন্দ্রনাথের ‘গোরা’ উপন্যাস আজও অনেক পাঠক অর্ধেক পড়ে বাকিটুকু পড়ে না। যে ‘চতুরঙ্গ’ পড়ে না, সে আবার ‘শেষের কবিতা’ পড়ে। আবার বহু পাঠকই হুড়মুড়িয়ে তার ছোটগল্প পড়ে। তরুণদের লেখায় আমি নানা বৈচিত্র্য খুঁজে পাই। তাদের লেখায় খুঁজে পাই ছন্দ। তাদের বিভিন্ন বিষয়ে আগ্রহ দেখে আমার ভালো লাগে।

এ আগ্রহের মাত্রাকে বাড়াতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, তরুণদের হাত ধরে আমাদের সাহিত্য অনেক এগিয়ে যাবে। সবচেয়ে বড় কথা, এ প্রজšে§র ওপর আস্থা রাখতে হবে। তাদের সুযোগ দিতে হবে। তাহলেই তারা এগিয়ে যাবে নানা বৈচিত্র্যতার ছোঁয়ায়।

সর্বশেষ খবর