বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা
সরকারের প্রতি চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির আলটিমেটাম

১২ এপ্রিল থেকে সিনেমা হল বন্ধ

শোবিজ প্রতিবেদক

১২ এপ্রিল থেকে সিনেমা হল বন্ধ

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস

বিদেশি ছবি আমদানির নীতিমালা সহজ ও  দেশীয় ছবি নির্মাণ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি। সরকারের প্রতি দেওয়া এক আলটিমেটামে প্রদর্শক সমিতি বলেছে তাদের দেওয়া এক মাসের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে ১২ এপ্রিল থেকে সারা দেশের সব সিনেমা হল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে সংগঠনটি। গতকাল দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দিয়েছেন সমিতির নেতারা। লিখিত বক্তব্যে সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস বলেন, ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানি ও প্রদর্শনে সরকারি নিষেধাজ্ঞা বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে অবশ্যই তুলে নিতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তৃতা করেন প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ, মহাসচিব কাজী শোয়েব রশীদ, উপদেষ্টা মিঞা আলাউদ্দিন, প্রদর্শক নেতা মির্জা আবদুল খালেক, আলমগীর শিকদার লোটন, আওলাদ হোসেন উজ্জ্বলসহ বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহের মালিকরা। সংগঠনটির সভাপতি ও মধুমিতা মুভিজের কর্ণধার ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এ বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা ও আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার অনুরোধ করছি। তিনি বলেন, সংগঠনের পক্ষ থেকে আগে তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করে কোনো সুরাহা পাইনি আমরা। নওশাদের কথায় পর্যাপ্ত ও মানসম্মত দেশীয় ছবির অভাবে সিনেমা হল বাঁচাতে বিদেশি ছবি আমদানিতে সাফটা চুক্তির নীতিমালা আরও সহজ করার দাবি আমাদের। তিনি বলেন, হলিউডের ছবি যদি একসঙ্গে বাংলাদেশে মুক্তি পেতে পারে তাহলে হিন্দি ও উপমহাদেশীয় চলচ্চিত্র কেন সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে এদেশে একসঙ্গে মুক্তি পেতে পারবে না। সংবাদ সম্মেলন শেষে সিনেমা হল মালিকরা মধুমিতা সিনেমা হলে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদের সভাপতিত্বে এক জরুরি সভায় মিলিত হন। এতে সিনেমা হল মালিকরা একমত হয়ে বলেন, সরকার যদি দাবি না মানে তা হলে ১২ এপ্রিল সব সিনেমা হল বন্ধ করে দেওয়া হবে। অনেক মালিক আবার ১২ তারিখের আগেই তাদের সিনেমা হল বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেন। মালিকদের মধ্যে অন্যতম একজন গোপালদির চলন্তিকা সিনেমা হলের কর্ণধার আলমগীর শিকদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে উদ্বেগের সঙ্গে বলেন, মানসম্মত ও পর্যাপ্ত ছবির অভাবে দীর্ঘদিন ধরে লোকসান গুনে সিনেমা হল চালাতে গিয়ে এখন মানবেতর অবস্থায় পড়েছি। আমি গত ৫ মাস ধরে কর্মকর্তা কর্মচারীর বেতন ও বিদ্যুৎবিলসহ কোনো ব্যয় নির্বাহ করতে পারছি না। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে ১২ তারিখের আগেই আমিসহ অনেকে আমাদের সিনেমাহলগুলো বন্ধ করে দিচ্ছি। সরকার দাবি মানলে আবার সিনেমা হল চালু করব। তিনি বলেন, ভারতীয় বাংলা ছবি একই সঙ্গে এদেশে মুক্তি দিতে না পারায় ছবিটি এখানে মুক্তি দেওয়ার আগেই ভারতীয় টিভি চ্যানেল, ইউটিউব ও ডিভিডিতে প্রচার হয়ে যাওয়ায় এখানকার সিনেমা হলে ছবিটি দেখতে দর্শক আর আসে না। সরকারি নীতিমালার জটিলতায় দেরিতে আমদানির ফলে এ ক্ষেত্রেও প্রদর্শকরা লোকসানের কবলে পড়ে। এভাবে আর চলতে পারে না। আশা করি বিষয়টির বাস্তবতা সরকার অনুধাবন করতে পারবে।

সর্বশেষ খবর