বুধবার, ২৭ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

সালমার দ্বিতীয় স্বামী সাগরের বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রীর মামলা

শামছুল হক রাসেল

সালমার দ্বিতীয় স্বামী সাগরের বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রীর মামলা

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মৌসুমী আক্তার সালমা সম্প্রতি দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন- এটা পুরনো খবর। নতুন খবর হলো, সালমার এই দ্বিতীয় স্বামী সানাউল্লাহ নূরী ওরফে সাগর আগেই আরেকটি বিয়ে করেছেন। এমনকি সাগরের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগে মামলা এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা ইতিমধ্যে জারি হয়েছে। আর মামলাটি দায়ের করেছেন তার প্রথম স্ত্রীর মা (শাশুড়ি)। মামলায় সাগরের বাবা সাখাওয়াত হোসেন এবং মা সুরাইয়াকেও আসামি করা হয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা দায়ের করেন সাগরের প্রথম স্ত্রী তাসনিয়া মুনিয়াত ওরফে পুষ্মীর মা দিলারা খানম। মামলা নম্বর-২৫৪, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ১১ (গ), ১১(গ)/৩০ ধারা। এ মামলায় সালমার দ্বিতীয় স্বামী সানাউল্লাহ নূরী ওরফে সাগর ও তার বাবা-মা কে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের জন্য ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থানায় গ্রেফতারি পরোয়ানা পাঠিয়েছে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এমনটাই জানিয়েছেন বাদীপক্ষ। কিন্তু হালুয়াঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এরকম কোনো গ্রেফতারি পরোয়ানা আমাদের কাছে আসেনি।’ এ ছাড়া আদেশনামা অনুযায়ী আগামী ৩-০৭-২০১৯ ইং তারিখে আসামিদের আদালতে হাজিরের জন্য বলা হয়েছে।

বাদী তার আর্জিতে উল্লেখ করেন, ২০১৪ সালের ৩ জুন সানাউল্লাহ নূরী সাগরের সঙ্গে তার কন্যা তাসনিয়া মুনিয়াত ওরফে পুষ্মীর সঙ্গে ২০ লাখ টাকা কাবিনমূল্যে বিয়ে হয়। ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ‘ল’-এর ছাত্রী তাসনিয়া মুনিয়াত পুষ্মীকে বিয়ের পর থেকে বিভিন্নভাবে যৌতুকের জন্য সে চাপ দিতে থাকে এবং শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে। তার মা দিলারা খানম তিন কিস্তিতে ১০ লাখ টাকা প্রদান করেন। সে টাকা দিয়ে সানাউল্লাহ নূরী সাগর লন্ডনে বারএট ‘ল’ পড়ার জন্য ভর্তি হন।

সালমা বলেন, খবরটি পুরোপুরি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমার বিয়ের ইতিমধ্যে কয়েক মাস পার হয়ে গেছে। তাহলে এতদিন পরে এ খবর আসল কোথা থেকে। হঠাৎ করে শুনলাম এ মামলার কথা। বিষয়টি সত্যিই কেমন যেন মনে হচ্ছে আমার কাছে
এ ছাড়া বাদী আরও জানান, সাগর দেশে এসে কাউকে না জানিয়ে ক্লোজআপ তারকা সালমাকে গোপনে বিয়ে করেন এবং নিজেকে অবিবাহিত দাবি করেন। কিন্তু মিডিয়ার বদৌলতে এ খবর জানাজানি হয়ে যায়। ১৯৯১ সালের ১৫ জুন জন্মগ্রহণ করা সানাউল্লাহ নূরী ওরফে সাগরের জাতীয় পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্ট নম্বরও উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে। পুষ্মীর বাবা কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যাপক এম. আখতার আলম ও মা দিলারা খানমও একজন স্কুল শিক্ষিকা।

গত বছর ৩১ ডিসেম্বর সালমা ও সাগরের বিয়ে হয়। এটি ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। এর আগে ২০১১ সালে লালন কন্যাখ্যাত  সালমার সঙ্গে শিবলী সাদিকের বিয়ে হয়েছিল। এরপর ২০১৬ শিবলীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।

প্রথম স্ত্রী পুষ্মীর বাবা অধ্যাপক এম. আখতার আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ইতিমধ্যে মামলাটি রুজু হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তও হয়েছে। সম্প্রতি ওই মামলার হাজিরার তারিখ ছিল আদালতে। কিন্তু আসামিরা আদালতেও উপস্থিত হয়নি।

তিনি আরও বলেন, উল্টো সেই ঘটনার পর আসামিরা আমাকে হুমকি-ধমকি দেয়। তাই নিরাপত্তার কথা ভেবে আমি রাজধানীর হাজারীবাগ থানায় একটি জিডিও করেছি।

এ বিষয়ে সালমা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, খবরটি পুরোপুরি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমার বিয়ের ইতিমধ্যে কয়েক মাস পার হয়ে গেছে। তাহলে এতদিন পরে এ খবর আসল কোথা থেকে। হঠাৎ করে শুনলাম এ মামলার কথা। বিষয়টি সত্যিই কেমন যেন মনে হচ্ছে আমার কাছে।

এদিকে সাগরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়ে ওঠেনি। সালমার ভাষ্য মতে, সাগর বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন।

অন্যদিকে, সাগর ও পুষ্মীর নিকাহনামা অনুযায়ী ধানমন্ডির কাজী অফিসে ২০১৪ সালের ৩ জুন বিয়েটি রেজিস্ট্রি হয়। দেনমোহরের পরিমাণ ২০ লাখ টাকা। বিয়ের সময় দেনমোহরের কোনো অংশ পরিশোধ করা হইয়াছে কিনা সেই ঘরে লেখা রয়েছে ‘ওয়াসিল = নাই’।

 

 

 

 

 

সর্বশেষ খবর