শুক্রবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ

বাংলাদেশে চলচ্চিত্রের ভাবনাগুলো মৌলিক...

বাংলাদেশে চলচ্চিত্রের ভাবনাগুলো মৌলিক...

ছবি : রাফিয়া আহমেদ

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। শুধু নায়ক নন, একইসঙ্গে পাকা অভিনেতা, প্রযোজক, পরিচালক। সম্প্রতি ঢাকায় এসেছেন সামিয়া জামান প্রযোজিত ‘আজব কারখানা’ চলচ্চিত্রের কাজে। অভিনয় ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন- সাইফ ইমন

 

বাংলাদেশে কেমন লাগছে...

অনেক ধন্যবাদ। কলকাতা থেকে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা জার্নি করে নিজের দেশে কোথাও গেলেই আমি মানুষের কোনো ভাষা বুঝি না। কিন্তু মাত্র আধ ঘণ্টার জার্নিতেই ঢাকা পৌঁছতে পারি। আর ঘর থেকে বাইরে গেছি মনেই হয় না।

 

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সঙ্গে অন্যান্য জায়গার চলচ্চিত্রের পার্থক্য... 

আমার মনে হয় বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে যে গল্পগুলো উঠে আসে তার অধিকাংশ মৌলিক। অন্তত আমার যে ধরনের চলচ্চিত্রে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে সেগুলোতে ভাবনাগুলো অনেক বেশি মৌলিক। মৌলিকের চেয়েও অনেক বেশি রুটেড। আমাদের পারিপার্র্শ্বিক রুটেড, সামাজিকভাবে রুটেড, ভাবনাগুলো রুটেড এক কথায় জীবন থেকে উঠে আসা। আর নেতিবাচক দিক হচ্ছে স্ট্রাকচারের অভাব। ইনফ্রাস্ট্রাকচারের হয়তো আরও বেশি উন্নতি দরকার। ইনফ্রাস্ট্রাকচার না হলে কাজের প্রতি মনোভাব বদলাবে না। বাংলাদেশে আমি অনেকগুলো কাজ করেছি কারণ চলচ্চিত্রের নান্দনিকতা। অনেক বেশি নান্দনিক গল্পগুলো, ভাবনাগুলো। তবে ওয়ার্ক কালচারটা বেটার হতে হবে।

 

হুমায়ূন আহমেদের চলচ্চিত্রে কাজ প্রসঙ্গে?

হ্যাঁ। এই বিষয়ে মেহের আফরোজ শাওনের সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। আরও লাখ লাখ মানুষের মতো হুমায়ূন আহমেদ আমারও প্রিয় লেখক। একটা বিশেষ গল্পে আমি কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলাম। একবারই কথা হয়েছিল ভবিষ্যতে কথা হয়তো আরও এগোবে।

 

টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছিলেন ব্যক্তি আপনাকে কেউ জানতে চায় না...

এটা অবশ্য আমি বলেছিলাম কিন্তু শুধু আমার কথা বলিনি। আসলে আমরা একজন অভিনেতাকে যেভাবে দেখে অভ্যস্ত পর্দায় তখন তাকে সে রকম ভাবতে আরম্ভ করি। হতে পারে সে ব্যক্তি জীবনে সম্পূর্ণ আলাদা।  আবার সম্পূর্ণ আলাদা না হলেও হয়তো তার মধ্যে আর অনেক রকম সত্ত্বা আছে। সেই সত্ত্বাগুলোর খোঁজ কেউ রাখে না। এটা শুধু আমার ক্ষেত্রে নয়, সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। 

 

অনেক সফলতা রয়েছে ঝুলিতে, তাতে সন্তুষ্ট?

না সন্তুষ্ট তো ডেফিনেটলি নই। অনেক ছোট বয়সে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কাজ শুরু করি। প্রথমে টেলিভিশন, পরে চলচ্চিত্র। তারপর পড়তে চলে যাই। ২০১০-এ ভেবেছিলাম অভিনয় ছেড়ে দেব। কিন্তু আমার সব ভালোভালো কাজগুলো এর পরেই হয়েছে। ঈশ্বরের আশীর্বাদে প্রচুর কাজ করছি। অভিনেতা হিসেবে অনেক কাজ করার আছে। প্রযোজক এবং পরিচালক হিসেবে আরও অনেক বেশি কাজ করার আছে। সন্তুষ্ট হলে তো হয়েই গেল। সব ছেড়েছুড়ে দিয়ে হিমাচল প্রদেশে ঘর বানিয়ে ওখানেই থাকতাম। 

 

প্রযোজক, পরিচালক, অভিনেতা কোন সত্ত্বাটিকে বেশি ভালোবাসেন?

পরিচালক।

 

পরজন্ম যদি থাকে...

পরজন্ম আছে কিনা আমি জানি না। থাকলে সেটি কেমন হবে কোনো ধারণা নেই। অবশ্যই আমি ‘আমি’ হয়েই আসতে চাই আবার। ভালোই লাগে নিজেকে, খারাপ লাগে না। আসলে তো আছেই কিছু ঝামেলা। সেগুলো সব মানুষেরই থাকে আরকি। তবে মন্দ নয় আমি লোকটা। মোটের ওপর আমি হয়েই জন্মাতে চাইব। 

 

বাংলাদেশে পছন্দের অভিনেতা বা অভিনেত্রী...

আমি জয়াকে উপমহাদেশের ওয়ান অব দ্য বেস্ট একট্রেস বলে মনে করি। জয়ার সঙ্গে সহশিল্পীর চেয়ে পরিচালক হিসেবে কাজ করতে ইচ্ছে করে। আর তিশা ইজ অ্যা ফেন্টাস্টিক আর্টিস্ট। জাকিয়া বারী মমকেও খুব ভালো লাগে। আরও অনেকেই আছে।  

 

‘আজব কারখানা’ চলচ্চিত্রে আপনার চরিত্রটি এবং বাংলাদেশে রকস্টার সম্পর্কে আপনার ভাবনা জানতে চাই।

কলকাতার চেয়ে রকস্টার ইমেজটা অনেক বেশি বড় করে দেখা হয় বাংলাদেশে। ২০০৭/০৮ সালে দুই বাংলা মিলে একটা রক কনসার্ট হয়। সেখানে দেখেছি বাংলাদেশের রকস্টাররা অনেক বেশি হার্ড রকস্টার সূলভ। ওখানে পারফর্ম করেছেন আইয়ুব বাচ্চু ভাই, জেমস, আর্টসেল, ওয়ারফেজ। আর ‘আজব কারখানা’ চলচ্চিত্রে আমি একজন রকস্টার। পরিচালক শবনম যখন আমাকে চরিত্রটা করতে বলেন তখন মাথায় বিষয়টা ছিল যে বাংলাদেশে রকস্টার মানে অবশ্যই ভিন্নকিছু বা বিশেষ কিছু। 

 

পৃথিবীর সব রকস্টারের ভাবনাটা নিশ্চয়ই একই  জায়গা থেকে ভাবছে...

ঠিক। তবে প্রোজেকশানটা ভিন্ন রকম হয়। যখন চলচ্চিত্রে করছি আপনি কিন্তু ফাইনালি প্রোজেকশানটা দেখবেন। পর্দায় দেখা যাবে দুটো মাত্রা। কিন্তু আমার ভাবনাটা আমার ভিতরেই থাকবে। এখানে আমার ভাবনার সঙ্গে সাধারণভাবে গৃহীত যে ভাবনাটা তার সঙ্গে মেলাতে হবে। আমার কাছে ট্রুলি রকস্টার মানে লালন, রবীন্দ্রনাথ।

সর্বশেষ খবর