শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

‘আলফা’য় রয়েছে সমসাময়িক জীবনযাপনের সব বিষয়

শোবিজ প্রতিবেদক

‘আলফা’য় রয়েছে সমসাময়িক জীবনযাপনের সব বিষয়

নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চুর নতুন চলচ্চিত্র ‘আলফা’ অবশেষে মুক্তি পেতে যাচ্ছে আজ। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবি ‘গেরিলা’র প্রায় আট বছর পর মুক্তি পেতে যাচ্ছে গুণী এ নির্মাতার ছবি। যান্ত্রিক শহরের বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া ও অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে বেঁচে থাকা একজন রিকশা পেইন্টারের জীবনকে ঘিরে ছবিটি নির্মিত হয়েছে। তৃতীয় বিশ্বের একজন শহুরে রিকশা পেইন্টারের কিছু বেদনার গল্প এতে উঠে এসেছে। ‘আলফা’র মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন আলমগীর কবির। আরও আছেন দোয়েল ম্যাশ, এটিএম শামসুজ্জামান, হীরা চৌধুরী, ইশরাত নিশাত, মোস্তাফিজ নূর ইমরান, ভাস্কর রাসাসহ অনেকেই। ছবিটি নির্মাণ প্রসঙ্গে নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, ‘২০১৪-১৫ সালের দিকে বাংলাদেশে ক্ষমতার দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে যে রাজনৈতিক সহিংসতা হয়েছে, সেটি আমাকে ভীষণ পীড়া দিয়েছিল। সে সময় অবরোধ, গাড়িতে আগুন দেওয়া ও মানুষ মারা হয়েছে। তখন আমার মনে জেগেছিল এ স্বাধীন রাষ্ট্রটি এভাবে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ল কেন? আর যদি পড়েও, তাহলে একজন নাগরিক কী ভাবছে? সেই নাগরিকটি হচ্ছে আলফা। তার জীবনযাপনের ভিতরে যেই সংকট-সেটা অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং প্রাকৃতিক।’ চট্টগ্রামের একজন চলচ্চিত্রকর্মী আলমগীর কবির। তিনিই ছবিতে আলফা চরিত্রে অভিনয় করেছেন। একজন চলচ্চিত্রকর্মীকে কীভাবে অভিনেতা হিসেবে কাজে লাগিয়েছেন তাও জানিয়েছেন নির্মাতা। তিনি বলেন, ‘সে কখনো কোথাও অভিনয় করেনি। তবে আমাদের পরিচিত। তার সঙ্গে আমার পরিচয় চট্টগ্রামের একটি চিত্র প্রদর্শনীতে। আমি তাকে বলেছি, তুমি আমার ছবিতে অভিনয় করো। একসঙ্গে চলি এ জার্নিটাতে। এরপর আমরা ওকে নিয়ে চরিত্রটি ধারণ করার জন্য ওয়ার্কশপ করেছি।’ কথার একপর্যায়ে নির্মাতা জানান, এ ছবিতে একজন পুরনো মানুষ রয়েছেন, তিনি এটিএম শামসুজ্জামান। জ্যেষ্ঠ এ অভিনেতার বিষয়ে বলতে গিয়ে নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, ‘ছবির চিত্রনাট্য লেখার পর তিনি আমাকে বললেন, তাকে নিতে হবে। তখন একটি চরিত্র আমি চিত্রনাট্যে ঢুকিয়ে ছিলাম। তার খুব শখ তিনি আমার ছবিতে অভিনয় করবেন। তিনি আমার ছবিতে আমৃত্যু থাকতে চান।’ একজন মানুষের সমসাময়িক জীবনযাপনের মধ্যে সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক যে বাধাগুলো আছে সেগুলো ‘আলফা’র মধ্যে উপস্থিত আছে বলে মনে করেন এ মুক্তিযোদ্ধা, সংগঠক, নাট্য ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব। তার ভাষ্য, ‘আমার ভালো লাগছে অন্য জায়গায়, সংস্কৃতিটা কীভাবে একটা কসমোপলিটন সিটিতে অপভ্রংশ হয়ে একটা অদ্ভুত আকার ধারণ করে। আলফায় আমি গল্প বলার চেষ্টা করিনি। গল্পটা তৈরি হয়ে যেতে পারে। ঘটনাগুলো আছে, চিত্রগুলো আছে। মানুষের এ সময়ের যে অভিজ্ঞতা তার একটি প্রতিফলন পর্দায় দেখতে পাবেন।’ অভিনেতা-অভিনেত্রীর বাইরে এ ছবিতে দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছে একটি গাধা ও আরেকটি কুকুর। এ দুটি প্রাণীকে নিয়ে শুটিংয়ের সময় বেশ কষ্ট করতে হয়েছে। কারণ গাধাটি ছিল অসম্ভব রাগী। আর যে কুকুরটি ছিল, সেটিও একই প্রকৃতির। এ বিষয়ে নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, ‘এ দুটো প্রাণী নিয়ে আমার ভীষণ কঠিন সময় গেছে, শুটিংয়ের সময়। আমি জানি না কে কীভাবে নেবেন। আমার মনে হয়েছে ঢাকা শহরের মধ্যদিয়ে একট গাধা হঁাঁটিয়ে দিতে পারলে আমার খুব ভালো লাগবে।

আমি সেটাই করেছি। কতটুক গেল না গেল আমি জানি না, ছবির সঙ্গে, ইমেজের সঙ্গে।’

সর্বশেষ খবর