রবিবার, ১২ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ

সবার মা হয়ে আজীবন বেঁচে থাকতে চাই

সবার মা হয়ে আজীবন বেঁচে থাকতে চাই
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও একুশে পদকজয়ী অভিনেত্রী দিলারা জামান। টিভি ও চলচ্চিত্রে তাঁর দুর্দান্ত অভিনয় দর্শককে মুগ্ধ করে। ‘মা’ চরিত্রে অভিনয় করে যে কজন প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন দিলারা জামান তার অন্যতম। মা দিবসে এই গুণী অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

কেমন আছেন?

জি, ভালো আছি।

 

আজ মা দিবস। ব্যক্তিজীবনে মা আর চরিত্রের প্রয়োজনে মা হওয়াটাকে কীভাবে আলাদা করেন?

যখন মা হইনি তখন থেকেই মায়ের চরিত্রে অভিনয় করছি। তবে ব্যক্তিজীবনে মা হওয়ার পর মা চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে অন্যরকম অনুভূতি হয়। আমার দুই মেয়ে- একজন কানাডা, অন্যজন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী। এখন মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করতে গেলে বার বার ওদের কথা মনে হয়, ওদের অনুভব করি। সংলাপ বলতে গেলে নিজের সন্তানদের কথা মনে পড়ে, চোখে পানি চলে আসে।

 

বাংলা নাটক ও চলচ্চিত্রে মায়ের সার্থক চরিত্রে যে কজনকে আমরা দেখতে পাই তার মধ্যে অন্যতম আপনি...

নাটক, চলচ্চিত্রে তো মায়ের চরিত্রেই বেশি অভিনয় করেছি। শুটিং সেটে সবাই আমাকে মা ডাকে। আমাকে মা ছাড়া কথা বলে না। আমার সন্তানরা তো দেশে থাকে না, তাই ওরাই সবসময় আমার খোঁজখবর রাখে। শুটিং সেটের বাইরেও যেন সবার কাছে আমি মা।

 

মা ডাক শুনতে কেমন লাগে?

ভীষণ ভালো লাগে! আমি আসলে এভাবে সবার মা হয়ে আজীবন বেঁচে থাকতে চাই।

 

সেই কৈশোর বয়সটাতে ফিরে যেতে ইচ্ছা করে?

খুব! আমি তো সেই সময় অনেক চঞ্চল ছিলাম। তাই সবাই আমাকে ডাকত ‘বাতাসির মা’। আমার সেই যশোরের বাড়ি, সেই রেললাইন। সারাক্ষণ হৈচৈ করতাম। গাছে উঠতাম, অন্যের গাছের ফল চুরিও করতাম। আহা, সেইসব দিন!

 

নারী দিবসে ওয়েস্টার্ন লুকে প্রচ্ছদকন্যা হয়ে আলোচনায় এসেছিলেন। বিষয়টি কেমন উপভোগ করেছেন?

এটি রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে! এর আগেও একটি প্রচ্ছদে কাজ করেছিলাম; সেটাও ভাইরাল হয়েছিল। অনেক কমপ্লিমেন্ট, অনেকে ফুলের তোড়া পেয়েছি। খুব প্রশংসা করেছেন সবাই। খুব এনজয় করেছি।

 

৭৭ বছর বয়সেও মডেলকন্যা হিসেবে একেবারে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন...

বয়স কোনো ব্যাপার নয়। মনের বয়সই আসল। এ বয়সেও জমকালো স্যুট-প্যান্ট পরেছি। ঠোঁটে গাঢ় লিপস্টিক, গলায় মুক্তার মালা ও কানে হীরার দুল পরে সেজেছি। কাটিং চুলের ওয়েস্টার্ন লুকও ছিল।

 

এই সময়ের নাটক নিয়ে অভিমত কী?

এখন তো তিন-চার জনকে নিয়ে নাটক বানাচ্ছেন নির্মাতারা। বাজেটস্বল্পতা দেখিয়ে নির্মাতারা দিন দিন চরিত্র কাটছাঁট করছেন। সেই যুগের সেই পারিবারিক আবহ আর কোনো নাটকে খুঁজে পাওয়া যায় না। নাটকে সিনিয়র শিল্পী নেই, নেই তাদের কোনো মূল্যায়ন। কমেডি নাটক হয়ে গেছে নিম্নমানের। রোমান্টিক নাটক হয়ে যাচ্ছে নায়ক-নায়িকা আর মোবাইল ফোননির্ভর।

 

অভিনয়শিল্পীদের শৃঙ্খলাবোধ সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কী?

অবশ্যই শৃঙ্খলাবোধ সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকা উচিত। অভিনয়শিল্পীরা কিন্তু এক দিনের জন্য কাজ করেন না। এই বয়সেও আমরা ঠিক সময়ে শুটিং ইউনিটে এখনো আসি, যা সব শিল্পীর মধ্যে থাকা উচিত।

 

সম্মানি নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়?

মাঝে মাঝে কাজ শেষ হওয়ার পরও সম্মানি দেওয়ার বেলায় খবর থাকে না কিছু নির্মাতার। আবার যদিও পেমেন্ট দেন, ডেট নেওয়ার জন্য।

 

সম্মানিও একেকজনের একেকরকম...

এসব বিষয় নিয়ে কেউ চিন্তা করে না। কোনো কোনো শিল্পী তার সম্মানি অর্ধলাখ থেকে প্রায় এক লাখ টাকা দাবি করেন। চ্যানেল যাদের বেশি চায়, তাদের সেভাবে দেয়।

 

চলচ্চিত্রের অবস্থা কী বলে মনে হয়?

মাঝে তো জঘন্য অবস্থা ছিল, এখন একটু ভালো হয়েছে। তরুণ নির্মাতারা ভালো কিছু চলচ্চিত্র বানানোর চেষ্টা করছেন।

সর্বশেষ খবর