এটিএম শামসুজ্জামানকে দেখে পালালেন মহিলারা
আশির দশক। একটি ছবির শুটিংয়ে এক গ্রামে গেছেন এটিএম শামসুজ্জামান। ভোরে ঘুরতে বেরিয়েছেন। এক পুকুরের পাশে এসে দাঁড়ালেন। সেই পুকুর থেকে কয়েকজন মহিলা কলসিতে পানি নিচ্ছিলেন। পানি নিয়ে পুকুর ঘাটের সিঁড়ি বেয়ে উঠতেই দেখলেন এটিএম শামসুজ্জামানকে। তাকে দেখামাত্রই তারা ‘মাগো বাবাগো, এই শয়তান ব্যাডা এইখানে কী করে’ বলে চেঁচিয়ে ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়ে পালালেন। এ ঘটনায় এটিএম শামসুজ্জামান কিছুক্ষণ হতভম্বের মতো দাঁড়িয়ে থেকে পরক্ষণেই হেসে উঠলেন, তার মনে হলো চলচ্চিত্রে খলনায়ক মানে শয়তান মানুষের অভিনয়টা ঠিকঠাকভাবে করতে পেরেছেন বলেই মহিলাদের মনে তিনি শয়তান মানুষ হিসেবে বিশ্বাস স্থাপন করতে পেরেছেন, মানে তার অভিনয়টা সার্থক হয়েছে।
অঝোরে কাঁদলেন ববিতা
জাফর ইকবাল আর ববিতা ছবির শুটিংয়ে বান্দরবান গেছেন। অনেক উঁচু পাহাড়ের ওপর বাংলোতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাহাড়টি এতটাই ঢালু যে অসতর্ক হলে পা ফসকে কয়েকশ ফুট নিচে পড়ে যাবে। বাঁচার কোনো পথ থাকবে না। ডিনারের সময় জাফর ইকবালকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সবাই হন্যে হয়ে সব জায়গায় খুঁজল। ববিতা ধরেই নিলেন জাফর পাহাড়ের নিচে পড়ে গেছেন। অঝোরে কাঁদতে শুরু করলেন তিনি। হঠাৎ বসার ঘরের পর্দার পেছন থেকে জাফর ইকবাল হাসতে হাসতে বেরিয়ে এসে বললেন ‘ববি এই যে দেখ আমি এখানে’, তোমাদের সঙ্গে মজা করার জন্য লুকিয়ে ছিলাম। তারপরও ববিতার কান্না থামাতে এক ঘণ্টার মতো সময় লেগেছিল।
কাঞ্চনের বিরুদ্ধে ছাত্রদের স্লোগান
বারিধারার জোয়ারসাহারায় ‘ভাঙচুর’ ছবির শুটিং চলছে। ইলিয়াস কাঞ্চন আর মৌসুমী শুটিংয়ে অংশ নিচ্ছেন। কাঞ্চনকে দেখতে কুর্মিটোলা স্কুলের ছাত্ররা আসে। এক ছাত্র ভিড় ঠেলে সামনে আসতে চাইলে নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে বাধা দেয়। ছাত্রটি ক্ষেপে গিয়ে নিরাপত্তারক্ষীকে ঢিল ছুড়ে মারে। সেই ঢিল গিয়ে পড়ে কাঞ্চনের ওপর। অল্পের জন্য বড় রকমের দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যান। রেগে গিয়ে ছেলেটিকে বকাঝকা করেন তিনি। রটে যায়, ছাত্রকে পিটিয়েছেন নায়ক। ছাত্ররা দলবেঁধে ইলিয়াস কাঞ্চনের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করল। পরিস্থিতি ঘোলাটে দেখে অভিনেতা সিদ্দিক জামাল নান্টু ছাত্রটিকে মৌসুমীর সঙ্গে দেখা করিয়ে দিলেন। এতে সেই ছাত্র মহাখুশি হয়ে নিজেই পরিস্থিতি শান্ত করেন।
মরতে বসেছিলেন মৌসুমী
অরিজিনাল শট কী জিনিস, তা প্রমাণ করতে গিয়ে মরতে বসেছিলেন মৌসুমী। ‘দজ্জাল শাশুড়ি’ ছবির একটি সিকোয়েন্সে ছিল মৌসুমীকে দজ্জাল শাশুড়ি রীনা খান জ্যান্ত কবর দেবেন। মৌসুমী আপত্তি না করে কবরে শুয়ে পড়েন। একটা সময় দম বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম হয় তার। কবর থেকে শট দিয়ে আধমরা মৌসুমী বের হয়ে এলেন। তার এই হাল দেখে ছোট বোন ইরিন কেঁদে ফেলেন। হোতাপাড়ার খতিব খামারবাড়ির ওই স্পটে গেলে নাকি মৌসুমী এখনো আঁতকে ওঠেন।
পালালেন শাকিল
‘পাহারাদার’ ছবির ইউনিট কক্সবাজারে। তখন শাকিল খান, পপির জমজমাট প্রেমের খবর চারদিকে চাউর। একদিন পপির মা পপিকে খুঁজে পাচ্ছেন না। এক সহকারী পরিচালক জানালেন ম্যাডাম তার রুমেই আছেন। হিরোর সঙ্গে পরের শট নিয়ে আলোচনা করছেন। পপির মা বিষয়টি ভালো চোখে দেখলেন না। তিনি দৌড়ে গেলেন পপির রুমে। পপির মায়ের আসার খবর আগেই পেয়ে যান শাকিল খান। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। মূল ফটক দিয়ে বের হওয়ার সম্ভাবনা শেষ। বেলকনি দিয়ে বাথরুমের পাইপ বেয়ে নামতে হয় তাকে। পাইপ বেয়ে নামতে গিয়ে শাকিলের হাত-পায়ের অবস্থার সেদিন বারোটা বেজেছিল
প্রবীর মিত্রকে রিকশা চালাতে বলেছিলেন স্ত্রী
অভিনয়ের কারণে কখনই সময় মতো বাসায় ফিরতে পারতেন না প্রবীর মিত্র। রাতে যখন ফিরতেন তখন বাচ্চারা ঘুমিয়ে পড়েছেন। আর যখন ভোরে বেরোচ্ছেন তখনো বাচ্চারা ঘুমে। একদিন অনেক রাতে বাড়ি ফিরলেন তিনি। ভাত নিয়ে বসে আছেন স্ত্রী। রাগত স্বরে বললেন, তোমার এ কাজ আমার আর ভালো লাগছে না। অন্য পেশায় যারা আছে তারা সময় মতো বাড়ি ফিরে পরিবারকে সময় দেয়। একজন রিকশাওয়ালারও কাজের সময় নির্দিষ্ট থাকে। শুধু তোমার কাজের বেলায় নেই। এক পর্যায়ে বলে বসলেন, অভিনয় ছাড়ো, এর চেয়ে ভালো রিকশা চালাও গিয়ে। অন্তত ছেলেমেয়েরা তোমাকে কাছে পাবে।
টাকাটা যত্নে রেখেছেন আমিন খান
আমিন খানের অভিনয়ের প্রথম সাইনিং মানি ছিল এক টাকা। সেই এক টাকা এখনো অ্যালবামে তিনি যত্ন করে সংগ্রহে রেখেছেন। তার প্রতিটি ছবির সাইনিং মানি থেকে একটা নোট এখনো অ্যালবামে রাখেন আমিন খান। এটি তার জন্য সুখের স্মৃতি।