বৃহস্পতিবার, ৮ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

‘সিনেমা না বাঁচলে আমার অস্তিত্বও থাকবে না’

শাকিব খানের নতুন উদ্যোগ

আলাউদ্দীন মাজিদ

‘সিনেমা না বাঁচলে আমার অস্তিত্বও থাকবে না’
’’মনের তাড়না থেকে সিনেমা হলে প্রজেকশন মেশিন দিচ্ছি। কারণ, সিনেমাকে বাঁচাতে হবে। সিনেমা না বাঁচলে আমার নিজেরও তো অস্তিত্ব থাকবে না। আমি এখান থেকে টাকা আয় করেছি, এখানে বিনিয়োগ করতে চাই। ছবিতে বিনিয়োগ করছি, মেশিনে বিনিয়োগ করছি। তবে প্রজেকশন মেশিনের ভাড়া প্রযোজকদের কাছ থেকে জাজ মাল্টিমিডিয়া যেভাবে নিয়েছে, সেভাবে নিচ্ছি না। কারণ আমি নিজেও একজন প্রযোজক। প্রযোজকদের বাঁচাতে হবে।

 

অভিনয় আর নির্মাণ দিয়ে দেশীয় চলচ্চিত্রকে পূর্ণতা দেওয়ার পাশাপাশি এবার ঢালিউডের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান চলচ্চিত্র উন্নয়নে নতুন উদ্যোগ নিয়েছেন। আসন্ন ঈদ থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের দেড়শ প্রেক্ষাগৃহে নিজস্ব প্রজেক্টর ও সার্ভার বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাকিব খানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এস কে ফিল্মস। ইতিমধ্যে পাঁচটি হলে তাদের আমদানি করা যন্ত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে। বাকিগুলো চালু হবে শিগগিরই।

শাকিব খান বলেন, ‘মনের তাড়না থেকে সিনেমা হলে প্রজেকশন মেশিন দিচ্ছি। কারণ, সিনেমাকে বাঁচাতে হবে। সিনেমা না বাঁচলে আমার নিজেরও তো অস্তিত্ব থাকবে না। আমি এখান থেকে টাকা আয় করেছি, এখানে বিনিয়োগ করতে চাই। ছবিতে বিনিয়োগ করছি, মেশিনে বিনিয়োগ করছি। তবে প্রজেকশন মেশিনের ভাড়া প্রযোজকদের কাছ থেকে জাজ মাল্টিমিডিয়া যেভাবে নিয়েছে, সেভাবে নিচ্ছি না। কারণ আমি নিজেও একজন প্রযোজক। প্রযোজকদের বাঁচাতে হবে। যতটুকু না নিলে নয়, ততটুকুই নিতে চাই। মেশিনের পেছনে লোকবলের খরচটা আপাতত নেব। এরপর ই-টিকিটিং সিস্টেম শুরু হলে প্রযোজকদের কাছ থেকে মেশিন ভাড়ার কোনো টাকা নেওয়া হবে না।’

শাকিবের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে চলচ্চিত্র প্রদর্শক এবং প্রযোজক পরিবেশক সমিতি। চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু বলেন, সিনেমা হলের উন্নয়নে যারাই এগিয়ে আসবে সবাইকে আমরা সাধুবাদ জানাব। কারণ যত বেশি প্রতিষ্ঠান এই শিল্পের সহযোগিতায় এগিয়ে আসবে তত বেশি প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি হবে এবং চলচ্চিত্রশিল্পের দুর্দিন কাটবে। এতে মনোপুলি ব্যবসা বলতে আর কিছুই থাকবে না। তবে একটি কথা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, প্রযোজক কোনোভাবেই প্রজেক্টর ভাড়া দেবে না। প্রজেক্টর বসানো সিনেমা হল মালিকদের দায়িত্ব। প্রজেক্টর ছাড়া সিনেমা হল হয় কীভাবে? একজন প্রযোজক সিনেমা হলকে ছবিও দেবে আবার প্রজেক্টর ভাড়াও দেবে এমন অযৌক্তিক আবদার আর মেনে নেওয়া হবে না। এতদিন একটি প্রতিষ্ঠানের কারণে এমন অন্যায্য নিয়ম চলতে থাকায় প্রযোজকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ থেকে দূরে সরেছেন। ফলে চলচ্চিত্রশিল্প আজ অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। খসরু আরও বলেন, অচিরেই আমরা প্রযোজকরা সিনেমা হল মালিকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারব বলে আশা করছি।

চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী শোয়েব রশীদ বলেন, ‘কয়েক বছর আগে সারা দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে জাজ মাল্টিমিডিয়া নিম্নমানের ডিজিটাল প্রজেক্টর ও সার্ভার স্থাপন করে। জাজের সরবরাহ করা মেশিনগুলোও বর্তমানে প্রায় অকেজো। এ অবস্থায় শাকিব খান হলগুলোর মান বৃদ্ধিতে এগিয়ে আসছেন। তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে উন্নত প্রযুক্তির প্রজেক্টর ও সার্ভার সরবরাহ করার এই উদ্যোগকে আমরা প্রদর্শকরা স্বাগত জানাই।’ প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা মিয়া আলাউদ্দিন বলেন, ‘যেহেতু আমাদের দর্শক ধরে রাখা ও উন্নত প্রযুক্তি দুটোই প্রয়োজন, তাই আমরা শাকিব খানের প্রস্তাব গ্রহণ করেছি। আমরা আশা করছি ঈদুল আজহার আগেই এই যন্ত্রগুলো নির্ধারিত হলগুলোতে চালু হবে।’ শাকিব খানের প্রতিষ্ঠান এস কে ফিল্মস ইতিমধ্যে পাঁচটি হলে প্রজেক্টর স্থাপন করেছে। হলগুলো হচ্ছে ঢাকার এশিয়া, শাহীন, লক্ষ্মীপুরের হ্যাপি, মতলবের কাজলী, শরীয়তপুরের রুমা এবং গোপালগঞ্জের চিত্রবাণী। এগুলোসহ এবারের ঈদে সবমিলে ১৫০টি প্রেক্ষাগৃহে প্রজেক্টর ও সার্ভার স্থাপন করা হবে বলে জানান শাকিব খান।

সর্বশেষ খবর