রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

নাটকের স্ক্রিপ্টিং নিয়ে খুবই বিরক্ত

বহুমাত্রিক অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। মঞ্চ, বিজ্ঞাপন, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র- সব মাধ্যমেই তিনি দর্শক প্রশংসিত। যে কোনো চরিত্রে সাবলীল অভিনয়ের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। যার স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা। ঈদে টেলিভিশন ও ইউটিউবে তার অভিনীত একাধিক নাটক প্রচার হয়েছে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

নাটকের স্ক্রিপ্টিং নিয়ে খুবই বিরক্ত

ঈদ কোথায়, কেমন কাটল?

  ঢাকাতেই ঈদ করেছি। আর প্রত্যেক ঈদ যেমন করে কাটাই, তেমন করেই কেটেছে এবারও। নাটক দেখি, খাই-দাই, ঘুমাই আর ঘুরতে বাইরে বের হই।

 

আবারও ব্যস্ত হবেন কবে থেকে?

নতুন কাজ শুরু করব। ঈদের পর সাধারণত ৮-১০ দিনের বিরতি নিই।

তাই আগামী সপ্তাহ থেকে কাজ শুরু করব।

 

নিজের অভিনীত নাটক দেখা হয়েছে?

কয়েকটি দেখেছি। গাজী টিভিতে ঈদের দ্বিতীয় দিন বৃন্দাবন দাসের রচনা ও দীপু হাজরার পরিচালনায় ‘জয়েন ফ্যামিলি’, পান্থ শাহরিয়ারের রচনা ও সাগর জাহানের নির্মাণে আরটিভিতে ঈদের তৃতীয় দিন ‘ক্ষণিকের আলো’, ‘হ্যাভিওয়েট মিজান’, বাংলাভিশনে মাসুদ সেজানের ‘চরিত্র : ভাড়াটিয়া’, বিটিভিতে ঈদের দিন ‘নো ডাক্তার’ দেখেছি। সব মিলিয়ে ৫-৬টি নাটক দেখেছি।

 

নিঃসন্তান দম্পতি ও কুড়িয়ে পাওয়া একটি বাচ্চাকে কেন্দ্র করে আবু হায়াত মাহমুদের নির্মাণে ‘ট্রাস্ট মি’ প্রচারিত হয়েছে। এটি নিয়ে জানতে চাই।

এটি সিরিয়াস গল্পের একটি নাটক। নাম ছিল কিন্তু ‘টুনটুনি’, নাটকের চরিত্র বাচ্চাটির নাম অনুযায়ী। তবে এটির নাম পরে ‘ট্রাস্ট মি’ হয়েছে সেটি জানতামই না! আসলে অনেক আগেই নাটকটি চ্যানেলে দেওয়া ছিল। কারণ চ্যানেলে একটি নাম দিয়ে বুকিং আগে থেকেই দিতে হয়।

 

গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারের ঈদের নাটক কেমন ছিল?

এবারের ঈদের নাটকে সিরিয়াস ও মানবিক গল্পের প্রাধান্য বেশি ছিল। ভাঁড়ামি ট্রেন্ড থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে; ভাঁড়ামি নাটক তুলনামূলকভাবে কম হয়েছে। এটা খুবই আশাব্যঞ্জক। তবে নাটকের মূল সমস্যা স্ক্রিপ্টিং। এই দুর্বলতা রয়েই গেছে। ঈদে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০টি নাটকের অফার ছিল আমার। এর মধ্যে গল্প দেখে বেছে কাজ করেছি ১০ থেকে ১৫টা; যেগুলোর ম্যাক্সিমাম সিরিয়াস ও মানবিক গল্প।

 

স্ক্রিপ্টিং নিয়ে মনে হয় অনেক বেশি বিব্রত ও বিরক্ত আপনি?

খুবই বিরক্ত! বেশির ভাগ সময়ে শুটিং করতে গিয়ে দেখি ২৫টি সিকুয়েন্সের মধ্যে ২৫টিই আমার! প্যারালাল ক্যারেক্টার তেমন করে নেই বললেই চলে। দু-একজনের বেশি চরিত্র নেই। ভালো স্ক্রিপ্টের অভাব। হুটহাট করে লিখলেই তো আর হয় না! কোনো প্রিপারেশনও নেই।

 

এখন তো স্ক্রিপ্ট ছাড়াই শুধু গল্পের ওপর ভর করে নাটকের শুটিং হয়...

আগে তো ফুল স্ক্রিপ্ট পড়ে শুটিং করতাম। এখন মূল স্ক্রিপ্ট হাতে পাই শুটিংয়ের একদিন আগে বা আগের দিন রাতে। অনেকেই সিস্টেম ব্রেক করছে। এই সমস্যা পরিচিত নির্মাতাদের মধ্যেই বেশি। তাদের অনুরোধে অনেক সময় সিনোপসিস পছন্দ হলে শুটিং করতে হয়। তারা এত কাছের যে, না বলতে পারি না অনেক সময়।

 

নাটকের দর্শক কেন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে? এই দায়বদ্ধতা আসলে কাদের?

এই দায়বদ্ধতা শিল্পী এবং দর্শক দুই পক্ষেরই। আর্টিস্টকে যেমন মানসম্পন্ন কাজ উপহার দিতে হবে, তেমনি দর্শককেও ভালো কাজের সাপোর্ট দিতে হবে। শুধু ভিউয়ের পেছনে ছুটলেই হবে না। আমরা সামগ্রিকভাবে ভুল রাস্তায় ছুটছি। ভিউ দেখে কি নাটকের জনপ্রিয়তা নির্ধারণ করা ঠিক? দর্শকদের সঙ্গে আর্টিস্টদের কিন্তু একটু অদৃশ্য সম্পর্ক তৈরি হয়, সেটা নষ্ট করা ঠিক নয়। কেন নাটকের এই অধঃপতন? কেন দর্শক মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে? সেটা কিন্তু সবার সঙ্গে আর্টিস্টদেরও খুঁজে বের করা জরুরি। শুধু টাকা আর ভিউয়ের পেছনে না ছুটে আর্টিস্টদের ভালো কাজের পেছনে ছোটা উচিত। লোভ সংবরণ করা দরকার। তবে এই ঈদের কাজ নিয়ে আমি অনেক বেশি পজিটিভ।

 

নতুন কোনো চলচ্চিত্রে কাজের সুখবর আছে?

একটি ফিল্ম করার আলোচনা চলছে। ছবিটির নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিম ভাই। সব কিছু চূড়ান্তের দিকে।

 

সর্বশেষ খবর