বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ : মোশাররফ করিম

কলেজ জীবনে অনেক বান্দর ছিলাম

কলেজ জীবনে অনেক বান্দর ছিলাম
এ সময়ের শীর্ষ অভিনেতা মোশাররফ করিম। সাবলীল অভিনয়ের কারণে হয়েছেন দর্শকনন্দিত। ঈদে বেশ কিছু ভালো নাটক দিয়ে চলে এসেছেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এদিকে সদালাপী ও বিনয়ী এই অভিনেতার আজ জন্মদিন। তার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

কেমন আছেন? ঈদ কোথায়, কীভাবে ও কেমন কাটালেন?

ভালো আছি। আর ঈদ ঢাকায় করেছি। জুঁই, ছেলে রায়ান, মা, ভাই-ভাবী, ভাইয়ের মেয়েসহ পরিবারের সবার সঙ্গে আনন্দেই কেটেছে। তবে ঈদের দিন বাদে ঈদের পরদিনও শুটিং করতে হয়েছে। কারণ অনেক কাজ জমে গিয়েছিল; সেগুলো শেষ করতে হয়েছে।

 

এখনো কি বেশি রাত করে শুটিং করেন?

ঠিক নেই। আসলে করতে চাই না। তবে ঈদ হলে একটু চাপ থাকে।

 

ঈদের বিরতি শেষ। আজ কি কোনো শুটিং নিয়ে ব্যস্ত?

কানাডা যাচ্ছি, পরিবার নিয়ে কিছুদিন কাটাব। প্রায় ২০ দিনের মতো থাকব। আগামী মাসের ১০-১১ তারিখে দেশে ফিরে আসব।

 

কিন্তু আজ না আপনার জন্মদিন! এ দিন কীভাবে উদযাপন করেন?

জন্মদিন নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই। প্রতিদিনের মতোই কাটে। কাজের ব্যস্ততায় এই দিনের কথা মনেই থাকে না। তবে এই দিন নিয়ে মাথাব্যথা থাকে আমার পরিবার, আশপাশের কিছু প্রিয় মানুষ আর ফ্যানদের। রাত ১২টা থেকে তারা বিভিন্নভাবে উয়িস করে, কেক কাটে; আমার কাজ শুধুই অংশগ্রহণ করা। শুটিংয়ে থাকলে ইউনিটের সবাই সেদিন কেক কেটে সারপ্রাইজ দেয়। এই তো!

 

ঈদে অভিনীত বেশ কয়েকটি নাটক ছিল আলোচনার কেন্দ্রে...

প্রায় ১৯টি নাটকে কাজ করেছি। কয়েকটি ভালো কাজের কথা উল্লেখ করলে বলব- আশ্রয়, বিহাইন্ড দ্য পাপ্পি, ডিল ডান কালাচান, মুগ্ধ ব্যাকরণ, সুরত, আনমাইন্ডফুল, বাবা হতে চাই। তবে দর্শকের ভালোবাসা পেয়েছি মাবরুর রশীদ বান্নাহর ‘আশ্রয়’,  রেদওয়ান রনির ‘বিহাইন্ড দ্য পাপ্পি; ও তপু খানের ‘ডিল ডান কালাচান’ দিয়ে। 

 

একঘেয়ে নাটক নিয়ে অভিমত কি?

আমাদের দেশের পরিচালকরা মাঝে মাঝে কোনো ঝুঁকি নিতে চান না। যখন একটা বিষয় জনপ্রিয় হয়ে যায়, তখন আর কেউ এক্সপেরিমেন্টাল কাজে ঝুঁকি নেন না। তিনি জানেন ওই প্যাটার্নে করলেই জনগণ নেবে। অতএব, ভিন্নভাবে ঝুঁকি নেওয়ার কোনো মানে নেই। আসলে কেন মাথা খাটাব? অমুকে এই জিনিসটা বানিয়েছে এবং সেটা হিট হয়ে গেছে, সেটা অনুকরণ করলেই তো হয়!

 

অভিনেতা মোশাররফ গান লিখতে ও গাইতে পারেন। ইদানীং তেমন করে গান লিখছেন না কেন?

একবার বক নিয়া একটা গান ট্রেনের মধ্যেই বাইন্ধা ফেলি। তবে লাস্ট প্যারাডা আর লেহা হয় নাই। আসলে যা হয় তা একবারেই  লিখে ফেলা উচিত। বহু বছর হলো। তাও প্রায় ১৫ বছর হইল। সেই ছোটবেলায় লিখছিলাম। তখন গানের কথাগুলো এমনিতেই মনের চিত্রপটে ধরা দিত। আহা, সেই সময়! তবে দলে থাকলে গান লেখা হতো। এখন তো হতে চায় না। কলেজ জীবনে অনেক বান্দর ছিলাম। এখন তো মিডিয়ায় ঢুকে ট্যাকার লাগি বন্দী হইয়া গেছি।

 

কবিতাও ভালো লেখেন। কবিতা নিয়ে বই বের করার ইচ্ছা হয় না?

অনেকেই বলে কিন্তু আমার লজ্জা লাগে। অনেক কবিতা লিখেছি এবং কিছু কবিতা পত্র-পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছে। তবে আক্ষেপ, আমার কবিতাকে অন্যসব কবিদের লেখা কবিতার মতো মূল্যায়ন করা হয়নি। ‘তারকাদের কবিতা’ শিরোনামে কেন ছাপানো হবে?

 

টেলিভিশনের জন্য এ পর্যন্ত কি কোনো নাটক লিখেছেন?

কোনো নাটক লেখাই শেষ করতে পারি নাই। লিখছি, ভালো লাগে নাই; সেটা আবার ছিঁড়ে ফেলে দিছি। একটি লিখছি- নাম ‘তালাক’। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রামা ডিপার্টমেন্ট আমার লেখা তিনটি নাটক করেছে।

 

নামনির্ভর নাটক কতটুকু প্রাসঙ্গিক?

প্রাসঙ্গিক কি, মাঝে মাঝে এক ধরনের জোয়ার আছে। এটা এক ধরনের বন্ধ্যত্ব! আমরা এখন এক ধরনের গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিচ্ছি। আমার নিজেরও এসব ভালো লাগে না, বিশ্বাস করেন!

 

অনেকেই বলে আপনি অনেক ডিমান্ড করেন...

এটা তো সমবায় সমিতি নয়। ব্যক্তিগতভাবে বলব, টাকা চাইতে আমার অস্বস্তি লাগে। জীবনে কখনো টাকা চেয়ে নিইনি; আই অ্যাম অফারড।

সর্বশেষ খবর