মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড ২১ অক্টোবর

শোবিজ প্রতিবেদক

ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড ২১ অক্টোবর

বাঁ থেকে নায়ক বাপ্পী, ফিল্ম ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট ফিরদৌসুল হাসান, কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন, চিত্রনায়িকা কবরী, চিত্রনায়ক আলমগীর, চলচ্চিত্র প্রযোজনা সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু, চলচ্চিত্র পরিচালক হাসিবুর রেজা কল্লোল এবং নায়ক সায়মন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রথমবারের মতো ঢাকায় বসতে যাচ্ছে ‘ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড’। জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে আগামী ২১ অক্টোবর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (নবরাত্রী, হল-৪) অনুষ্ঠিত হবে এই অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান।  আর প্রথমবারের মতো এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে ফিল্ম ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া। গতকাল রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয় আয়োজকদের পক্ষ থেকে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট অভিনেতা আলমগীর হোসাইন, অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী, কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, নায়ক সায়মন, বাপ্পী, ফিল্ম ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট ফিরদৌসুল হাসান এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য তপন রায়।

অনুষ্ঠানে আলোচনা পর্ব শুরু হয় ফিল্ম ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট ফিরদৌসুল হাসানের বক্তব্য দিয়ে। তিনি বলেন, ‘আমরা দুই বাংলা ভালো কিছু করব বলে এই অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানটি করছি। এই অনুষ্ঠানের লক্ষ্য আমাদের দুই দেশের ছবির ভবিষ্যৎ ও মান উন্নয়ন। আশা করছি আগামী ২১ অক্টোবর ভালো একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান দর্শকদের উপহার দিতে পারব।’

কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, ‘চলচ্চিত্রের কোনো ভাষা হয় না। আমরাও এই কথায় বিশ্বাসী। আর এ লক্ষ্যে ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের এই আয়োজন। এটি একটি বড় আয়োজন। আশা করছি দর্শক- শ্রোতাদের এই অনুষ্ঠানটি ভালো লাগবে।’

অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী বলেন, ‘অনেক দিন পর এমন একটি আয়োজন হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে। আমি বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, এমন একটি অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা করার জন্য। এই অ্যাওয়ার্ডের মধ্য দিয়ে দ্ইু দেশের মেলবন্ধন গড়ে উঠবে। আমি এর সফলতা কামনা করি। আগামী দিনগুলোতেও যেন এমন ভালো ভালো অনুষ্ঠান হয় সেই প্রত্যাশা করছি।’

নায়ক আলমগীর বলেন, ‘আমি প্রথমে ধন্যবাদ জানাই ফিল্ম ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট ফিরদৌসুল হাসানকে এমন একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য। কলকাতায় বাংলাদেশের নায়করাজ রাজ্জাককে নিয়ে একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান হয়। সে অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে আমি নিজেও অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। আমরা যখন অভিনয় শুরু করি ১৯৭২ সালে, তখন বাংলাদেশে সিনেমা হলের সংখ্যা ছিল সাড়ে তিনশ। আশির দশকে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১২শ তে। অনেক কালজয়ী ছবি আমরা উপহার দিতে পেরেছি দর্শকদের। এখন সারা দেশে সিনেমা হলের সংখ্যা ১৫০-এরও কম। শুধু বাংলাদেশেই নয়, কলকাতায়ও সিনেমা হলের সংখ্যা ১২শ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৮শ তে। দুই বাংলায়ই কমছে সিনেমা হলের সংখ্যা। এই অবস্থায় যদি আমরা সঠিক নিয়মে যৌথ প্রযোজনায় ছবি নির্মাণ করতে পারি, তবে আমাদের দুই বাংলার জন্যই এটি অনেক লাভজনক হবে। আমাদের চলচ্চিত্রের উন্নয়ন ঘটবে। এ অ্যাওয়ার্ডের মধ্য দিয়ে আমরা এই যাত্রা শুরু করেছি। আশা করছি ২১ অক্টোবর বাংলাদেশ-ভারত ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড সফল হবে।’

বাংলা চলচ্চিত্রের বর্তমান সময়ের নায়ক সায়মন বলেন, ‘এটি একটি ভালো উদ্যোগ। এমন একটি সুন্দর উদ্যোগের মধ্য দিয়ে দুই বাংলার চলচ্চিত্র ও শিল্পী-কলাকুশলীদের মধ্যে সুন্দর একটা মেলবন্ধন তৈরি হবে। আমি এ অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানটির সফলতা কামনা করছি।’ চলচ্চিত্রের এ সময়ের আরেক নায়ক বাপ্পী বলেন, ‘২১ অক্টোবর যে অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানটি হতে যাচ্ছে তা আমাদের দুই বাংলার জন্যই শুভকর। আমি এ অনুষ্ঠানের সফলতা কামনা করি।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ২০১৮ সালের জুন মাস থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত ভারত ও বাংলাদেশে মুক্তি পাওয়া বাংলা ছবিগুলো এই অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনয়ন করা হচ্ছে। পপুলার, টেকনিক্যাল ও রিজিওনাল- এই তিন ক্যাটাগরিতে মোট ২৪টি বিভাগে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে। এসব বিভাগের মধ্যে রয়েছে- সেরা ছবি, সেরা নির্মাতা, সেরা অভিনেতা ও অভিনেত্রী, সেরা পার্শ্বঅভিনেতা ও অভিনেত্রী, সেরা গান, সেরা কণ্ঠশিল্পী পুরুষ ও মহিলা, সেরা পপুলার ফিল্ম অব দ্য ইয়ার, সেরা পপুলার অ্যাক্টর অ্যান্ড অ্যাক্ট্রেস অব দ্য ইয়ার, লাইভ টাইম অ্যাচিভমেন্ট, সেরা কাহিনি, সেরা চিত্রগ্রাহক, সেরা সম্পাদক ইত্যাদি। এই অ্যাওয়ার্ডের জন্য গঠিত জুরি বোর্ডের সদস্যরা হলেন- ভারত থেকে চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ, নির্মাতা-অভিনেতা ব্রাতাইয়া বসু, চলচ্চিত্র সাংবাদিক ও সমালোচক গৌতম ভট্টাচার্য, চলচ্চিত্র প্রযোজক অঞ্জন বোস এবং অভিনেত্রী তনুশ্রী চক্রবর্তী। অপরদিকে বাংলাদেশ থেকে জুরি বোর্ডের সদস্য হিসেবে আছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অভিনেতা আলমগীর হোসাইন, অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী, কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু এবং চলচ্চিত্র পরিচালক হাসিবুর রেজা কল্লোল। অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে ভারতের বিখ্যাত অভিনেতা-অভিনেত্রীরা অংশ নেবেন।

‘ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড’-এর প্রথম আসরটির  প্রেজেন্ট করেছ বসুন্ধরা গ্রুপ। অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার হচ্ছে এটিএন বাংলা ও ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ।

সর্বশেষ খবর