শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

দুই বাংলা মাতাচ্ছেন শাকিব-জয়া

আলাউদ্দীন মাজিদ

দুই বাংলা মাতাচ্ছেন শাকিব-জয়া

শাকিব খান আর জয়া আহসান। ঢাকাই চলচ্চিত্রের এই দুই জনপ্রিয় শিল্পী নিজেদের শুধু দেশের গ-িতে সীমাবদ্ধ রাখেননি। দর্শকপ্রিয়তার পারদ ছড়িয়েছেন ভারতেও। এই দুই সুপারস্টার তাদের অভিনয় দক্ষতা দিয়ে বাংলাদেশের দর্শকদের কাছে যেমন জনপ্রিয় তেমনি মন কেড়েছেন ভারতের দর্শকদেরও। জয়া এখন প্রায় অর্ধডজন ছবির কাজ নিয়ে কলকাতায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। সঙ্গে দেশীয় বেশকিছু ছবি তার মুক্তির অপেক্ষায় আছে। অন্যদিকে শাকিব খান তার হাতে থাকা দেশীয় প্রায় অর্ধডজন ছবির কাজ শেষ করে কলকাতায় থাকা বেশকিছু ছবির কাজ এ বছরই শুরু করবেন। শাকিব খান ভারতের দর্শকদের কাছে অল্প সময়ে এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছেন যে, সেখানকার সেরা ২০ নায়কের তালিকায় ১৮তম স্থান করে নিয়েছেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘কলকাতা টাইমস’  কলকাতায় সেরা নায়কদের তালিকা প্রকাশ করেছে। হ্যাশট্যাগ ‘কলকাতা টাইমস  মোস্ট ডিজায়ারেবল ম্যান’- এর সেরা ২০ তারকার তালিকায় প্রথম বাংলাদেশি নায়ক হিসেবে শাকিব খানের অবস্থান ১৮। গত বছর কলকাতায় শাকিব খান অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি চালবাজ, ভাইজান এলো রে, নাকাব মুক্তি পায়। এর আগের বছর মুক্তি পায় তার শিকারি ও নবাব ছবি দুটি। ১৯৯৯ সালে চলচ্চিত্রে আসা শাকিব খান একসময় সব নায়ককে ছাড়িয়ে নিজের কর্মগুণে ঢালিউডের শীর্ষনায়কের আসনে উপবিষ্ট হন। ২০০৮ সালের পর থেকে ঢাকাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে চলছে শাকিবের একচ্ছত্র আধিপাত্য। দর্শক ও প্রদর্শকরা শাকিবের ছবি ছাড়া আর কিছুই বোঝেন না। ঢাকাই ছবি মানেই শাকিব খান। ২০১৬ সালে কলকাতার চলচ্চিত্র জগতের আমন্ত্রণে সেখানে পাড়ি দেন তিনি। অভিনয় করেন ‘শিকারি’ ছবিতে। প্রথম ছবিতেই বাজিমাত। কলকাতার দাদা বাবুরা অভিনয়ে জীবন্ত এক সুদর্শন নায়ক পেয়ে খুশিতে ডগমগ হয়ে ওঠেন। এর পরের ইতিহাস সবারই জানা। সেরা নায়কের আসন টেলিসিনে অ্যাওয়ার্ড সবই তার অর্জনের ঝুলিকে সমৃদ্ধ করেছে। নিজ দেশে পেয়েছেন তিনবার জাতীয় ও বাচসাস পুরস্কার। বর্তমানেও তার সফলতার যাত্রা সমানতালে চলছে।

অন্যদিকে জয়া আহসান দেশের দর্শকদের মন জয়ের পর কলকাতার দর্শকদেরও রীতিমতো মাতিয়ে ছেড়েছেন। জয়ার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় ২০০৪ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ব্যাচেলর চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। ২০১১ সালে ‘গেরিলা’ ছবিতে অভিনয় করে তিনি ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জুরিদের বিচারে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার অর্জন করেন। এ পর্যন্ত তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। পুরস্কার পাওয়া তার ছবিগুলো হলো গেরিলা, চোরাবালি ও জিরো ডিগ্রি।

গেরিলা চলচ্চিত্রের সাফল্যের পর থেকে তিনি নিয়মিত বাংলাদেশ ও ভারতের কলকাতার চলচ্চিত্রে কাজ করা শুরু করেন। জয়া আহসান ২০১৩ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসব থেকে নিমন্ত্রণ পান। এ বছর তিনি অভিনয় করেন কলকাতার অরিন্দম শীল পরিচালিত আবর্ত ছায়াছবিতে। একই বছর কলকাতার ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরী পরিচালিত একটি বাঙালি ভূতের গপ্পো ও সৃজিত মুখার্জি পরিচালিত রাজকাহিনী ছবিতে অভিনয় করেন।

এই ছবিতে অভিনয়ের জন্য ১৬তম টেলিসিনে পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেত্রীর পুরস্কার অর্জন করেন। ২০১৬ সালে কলকাতায় অভিনয় করেছেন অরিন্দম শীল পরিচালিত ঈগলের  চোখ-এ। ২০১৮ সালে বিরসা দাশগুপ্ত পরিচালিত নারীবাদী চলচ্চিত্র ক্রিসক্রস মুক্তি পায় কলকাতায়। এরই ধারাবাহিকতায় আবারও কলকাতার নতুন ছবিতে সম্প্রতি যুক্ত হলেন তিনি। এই ছবির নাম ‘ভূতপরী’। ছবিটি পরিচালনা করবেন  সৌকর্য ঘোষাল। অন্যটি হলো অতনু ঘোষের ছবি ‘রবিবার’। এ ছবিতে প্রসেন জিতের সঙ্গে জুটি বাঁধছেন জয়া। এর আগে অতনু ঘোষের বিনি সুতোয় ছবিতে অভিনয় করেছিলেন জয়া। সম্প্রতি ঘোষণা করা হয়েছে ভারতের ৬৬তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯। ৯ আগস্ট নয়াদিল্লির শাস্ত্রী ভবনে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সেরা বাংলা সিনেমা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে জয়া আহসান অভিনীত সৃজিত মুখার্জি পরিচালিত ‘এক যে ছিল রাজা’। দর্শক ও চলচ্চিত্রকারদের মতে বাংলাদেশ ও ভারতে বাংলাদেশের এই দুই তারকার যে জনপ্রিয়তা রয়েছে তাতে করে এদেশে যদি এই জুটিকে নিয়ে ছবি নির্মাণ অব্যাহত থাকে তাহলে দুই দেশের দর্শক ও প্রদর্শক সমানভাবে লাভবান হবেন। ভারতে যেহেতু এই দুই তারকার আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা রয়েছে, তাই তাদের ছবি সেখানকার আমদানিকারকরা সহজেই লুফে নেবেন এবং প্রদর্শকরাও নির্দ্বিধায় প্রদর্শন করবেন।

 

সর্বশেষ খবর