ঢাকাই চলচ্চিত্রের গ্ল্যামার গার্ল আইরিন। তার অভিনীত বেশকিছু চলচ্চিত্র হয়েছে প্রশংসিত। মিষ্টি হাসির এই চিত্রনায়িকা দেশীয় শোবিজ অঙ্গন পেরিয়ে এখন ওপার বাংলার চলচ্চিত্রে বৈচিত্র্যময় চরিত্রে কাজ করছেন। বর্তমানে ব্যস্ত রয়েছেন বেশকিছু নতুন ছবির কাজে। আগামীকাল কলকাতায় মুক্তি পাচ্ছে তার অভিনীত চলচ্চিত্র ‘পদ্মার ভালোবাসা’। তার সঙ্গে এই ছবি ও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
আগামীকাল কলকাতায় মুক্তি পাচ্ছে পদ্মার ভালোবাসা। ছবিটি নিয়ে প্রত্যাশা কেমন?
ছবিটি নিয়ে প্রত্যাশা অনেক। ভালো গল্পের ও নির্মাণের ছবি এটি। হারুন-উজ-জামান পরিচালিত ‘পদ্মার ভালোবাসা’ ছবিতে আমার সহশিল্পী সুমিত সেনগুপ্ত। এ সিনেমার গল্প ও চিত্রনাট্যও করেছেন নির্মাতা নিজেই। সিনেমায় ষাটের দশকের চিত্র দেখানো হয়েছে।
কতটি হলে মুক্তি পাচ্ছে?
ভারতের ২৫টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে। আর তিনটি ভাষায় ডাব করে ছবিটি মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। একটি হচ্ছে কলকাতার বাংলা, অন্য দুইটি উড়িয়া ও ভোজপুরী ভাষা। তিনটি স্টেটে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশে কবে মুক্তি পাবে?
বাংলাদেশে ছবি মুক্তির তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে ১ নভেম্বর।
জানামতে, এটির নাম ছিল ‘পদ্মার প্রেম’...
হ্যাঁ, প্রথমে সিনেমাটির নামকরণ করা হয় ‘পদ্মার প্রেম’। পরবর্তীতে পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘পদ্মার ভালোবাসা’।
আগের চলচ্চিত্র থেকে এই ছবিতে চরিত্রের কোনো ভিন্নতা আছে?
ভিন্নতা তেমন কিছুই নেই। কারণ, এটি আমাদেরই গল্প; চরিত্র চিত্রণও তেমনি করে করেছেন নির্মাতা। তবে, এই চরিত্র আগে কখনো করা হয়নি। এই সিনেমায় আমি গ্রামের প্রভাবশালী পরিবারের একটি চঞ্চল ও উচ্ছল মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি। সিনেমাটির গল্প পদ্মার পাড় ঘেঁষে যাওয়া একটি গ্রামের মানুষের জীবন নিয়ে। গল্পটি আমার ভালো লেগেছে। কারণ, রিয়েল লাইফের ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মাতা এটি তৈরি করেছেন। আর এতে বেশ কয়েকটি লুকে দর্শক আমাকে দেখতে পাবেন।
ওপারের বেশকিছু ছবিতে যুক্ত আছেন...হ্যাঁ, কয়েকটি চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেছি। এরমধ্যে একটি চলচ্চিত্র শেষ করে এসেছি। নাম ‘শিবরাত্রী’। পরিচালনা করেছেন রাজাদিত্য ব্যানার্জি। আমার বিপরীতে আছেন সুমন চ্যাটার্জি এবং পরিচালক রাজাদিত্য নিজেই। আর নতুন আরেকটি ছবি পার্থসারথী ভট্টাচার্যের ‘কাউন্ট ডাউন’-এ মৌলি নামের একজন সাংবাদিকের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছি।
তাহলে জয়ার পথ ধরে আপনিও কলকাতামুখী হচ্ছেন নাকি?
না, একদমই নয়! এই কথাটা আমাকে আরও কয়েকজন বলেছেন। আমি কখনোই কিন্তু স্ট্রাগল করিনি ওপার বাংলায় গিয়ে। কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘একজন কবির মৃত্যু’ দেখেছিলেন ফিল্ম ক্রিটিক দেবাশিষ রয়। তিনি এই ‘শিবরাত্রী’ ছবির জন্য আমাকে রেফার করেন। আমার সঙ্গে টোটালি যা হয়েছে তা বলা যায় কাকতালীয়। আর ছিল আমার লাক। লাকি না হলে ছবিটি আমার কাছে আসত না।
তাহলে কি বলা যায় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ভাগ্য এতদিন ফেভার করেছিল? যদিও ‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’র পর তেমন করে কোনো হিট ছবি নেই...
‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’ ছবির মাধ্যমে ২০১৩ থেকে আমার ফিল্মে অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু। এই ছবিটিও যে আমার কাছে এসেছিল এবং সেটি যে আমি করতে পেরেছি তার কারণ আমার ভাগ্য। লাকি না হলে ওই ছবিটি আমার কাছে আসত না। তাই ডেফিনেটলি ফিল্মের ক্ষেত্রে আমি একটু হলেও লাকি। আর আমি তো বলব, আইরিনকে নিয়ে কোনো হিট ছবি বানানো হয়নি। ডিরেক্টররা বানাতে পারেননি। আমার জায়গা থেকে আমি সর্বোচ্চটা দিয়েছি। এর জন্য পরিচালকরাই দায়ী।
সবসময়ই শুনি চলচ্চিত্রে নায়ক-নায়িকা সংকট। তাহলে এত নায়ক-নায়িকাকে বসিয়ে রেখে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ উদ্যোগ কতটা যৌক্তিক?
আমাদের মতো নতুনদেরই তো তারা ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারেননি! নতুন করে এসব উদ্যোগ নিয়ে লাভ কী? অসংখ্য নায়ক-নায়িকা রয়েছে এই ইন্ডাস্ট্রিতে; নাম বললে অনেকের নামই বলতে পারব। আসলে শিল্পী নয়, সংকট প্রযোজক ও ছবি নির্মাণের মানসিকতার। এই দুই লেভেলে ঘাটতি আছে।
কিছুদিন আগে সৈকত নাসিরের নির্মাণে একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে ক্যামেরাবন্দী হয়েছেন। তার নির্মাণে একটি ওয়েব সিরিজেও কাজ করছেন...
হ্যাঁ, এটি ‘জেনেরিও এন্টি এইজিং ক্রিম’ বিজ্ঞাপনচিত্র ছিল। ভিজুয়ালাইজারের তত্ত্বাবধানে নির্মিত এই বিজ্ঞাপনে আরও ছিলেন পূর্ণিমা বৃষ্টি, সায়কা আজমেরী তৃণা এবং ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী। আর তার বালিতে চিত্রায়িত সৈকত ভাইয়ের নির্মাণে করেছিলাম ওয়েব সিরিজ ‘ট্রাপড’। সহশিল্পী এ কে আজাদ। এটিতে অভিনয়ে অনেকে প্রশংসা করেছেন।
আর কোনো ওয়েব সিরিজে কাজ করছেন কি?
অনন্য মামুন পরিচালিত ‘ধোঁকা’ ওয়েব সিরিজে মাফিয়ার ভূমিকায় অভিনয় করছি। বিপরীতে অভিনয় করেছেন এ বি এম সুমন। আরও আছেন ইমতু, সানজু জন, আঁচল। অনন্য মামুনের আরেকটি ওয়েব সিরিজ ‘পার্টনার’-এ কাজ করেছি। কাহিনি ও চিত্রনাট্য আসাদ জামানের। আমার সঙ্গে রয়েছেন এ কে আজাদ, আমান রেজা ও ফারহান খান রিও।
মুক্তিপ্রতীক্ষিত ছবিগুলোর নাম কি?
‘সেভ লাইফ’, ‘রৌদ্রছায়া’, ‘ভোলা’, ‘গন্তব্য’, ‘টার্গেট’ ও ‘আহারে জীবন’।
গুঞ্জন আছে, এক নির্মাতার সঙ্গে প্রেম ছিল আপনার। বর্তমানে কার সঙ্গে প্রেম চলছে?
স্পেসিফিক কারও সঙ্গে প্রেম করছি না। সব ভালোবাসার মানুষের সঙ্গেই আমার প্রেম; হাহাহা... আর এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ থাকলে তা খুঁজে বের করুন! আর নির্মাতার সঙ্গে প্রেম- এটা গুজব! নায়িকাদের তো সব পরিচালকের সঙ্গেই প্রেম থাকতে হয়। পরিচালকের সঙ্গে প্রেম না হলে তারা নায়িকাকে কি স্ক্রিনে সুন্দর করে দেখাবেন?
বিয়ে কবে করছেন?
বিয়ে নিয়ে আপাতত একদমই ভাবছি না।