বড় পর্দার জাঁদরেল ও জনপ্রিয় খলনায়ক মিশা সওদাগর। দুবার জাতীয় পুরস্কার পাওয়া এই অভিনেতা শুধু অভিনয় নয়, শিল্পী সমিতির কর্মকর্তা হিসেবেওসফলতা দেখিয়েছেন। আজ তার নানা ব্যস্ততা নিয়ে তারই বলা কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ
অভিনয় আর শিল্পী সমিতির নেতৃত্ব, কোনটি বেশি উপভোগ্য?
দুটিই আমার প্রাণ আর রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে। অভিনয় দিয়ে দর্শক মন জয় আর সমিতির কাজ দিয়ে সম্মানিত সদস্যদের ভালোবাসা পেয়েছি। সবার দোয়া চাই, যাতে এই অর্জন আমৃত্যু ধরে রাখতে পারি।
অভিনয়ে জাতীয় সম্মানও পেয়েছেন, নিজেকে কতটা সফল মনে করেন?
সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানিতে সবদিক দিয়েই আমি একজন সফল মানুষ। অভিনয় দিয়ে দর্শকের পাশাপাশি রাষ্ট্রেরও আনুকূল্য পেয়েছি। তবে মানুষ হিসেবে সফল হলেও অভিনেতা হিসেবে এখনো পরিপূর্ণ সফল হতে পেরেছি কিনা জানি না। কারণ অভিনয় একটি বিশাল ক্ষেত্র। একজনমে এই ক্ষেত্র কারও পক্ষে আয়ত্ত করা সম্ভব নয়। আমার পক্ষেও এখনো হয়নি। তবে বরাবরই চেষ্টা করে যাচ্ছি সমৃদ্ধ কাজ উপহার দিয়ে চলচ্চিত্র শিল্পকে পরিপূর্ণতা দিয়ে যাওয়ার।
অনেকের কথায় চলচ্চিত্রের মানুষের হাতে কাজ নেই, তারা শুধু সংগঠন নিয়েই ব্যস্ত থাকেন, এক্ষেত্রে আপনার ব্যস্ততা কেমন?
আমি বলব কাজ দিয়েই মানুষের পরিচয়, তাই আগে কাজ পরে অন্যকিছু। আমার হাতে থাকা এই মুহূর্তের কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- আগুন, দিন দ্য ডে, মিশন এক্সট্রিম, একটু প্রেম দরকার, মা আমার বেহেশত, শান, রাগী, প্রেমের বাঁধন, দেশনায়ক প্রভৃতি। এ ছাড়া সম্প্রতি ছোট পর্দার একটি নাটকেও অভিনয় করছি।
বড় পর্দার শিল্পীরা ছোট পর্দায় গেলে ক্রেজ কমে যায়, এমন প্রবাদকে বিশ্বাস করেন?
মোটেও না, একজন আর্টিস্ট যদি কনফিডেন্ট হয় তাহলে মাধ্যম তার জন্য কোনো ব্যাপার নয়, বড় কিংবা ছোট পর্দা অথবা মঞ্চ, যেখানেই সে দাঁড়াবে সেখানেই আলো ছড়াবে, কাজের জাদুতে দর্শকদের মুগ্ধ আর বিনোদিত করবে।
বড় পর্দায় এত ব্যস্ততার মাঝেও হঠাৎ করে ছোট পর্দায় যাওয়া কেন?
এই নাটকের স্ক্রিপ্ট পড়ে গল্পটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। তাছাড়া নাটকটির ডিরেক্টর তারিক হাসান একজন দক্ষ ও মেধাবী নির্মাতা। এই নাটকে আমার চরিত্রের নাম ইনসাফ। ইনসাফের রয়েছে আতরের ব্যবসা। সে সরলভাবে সত্য কথা বলতে গিয়ে নানা ঝামেলায় পড়ে। সব মিলিয়ে চমৎকার একটি কাজ করছি আমি।
পুনরায় শিল্পী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হলে নতুন দায়িত্ব কী হবে?
গতবার নির্বাচনী ওয়াদার প্রায় ৭০ ভাগ পূরণ করেছি। এবার যদি সম্মানিত সদস্যরা আমাকে পুনরায় কাজ করার সুযোগ দেন তাহলে প্রথমেই শিল্পীদের আবাসন ব্যবস্থা ও ফান্ড নিশ্চিত করব। অভিনয় প্রশিক্ষণ কোর্স ও শিল্পীদের জন্য স্বতন্ত্র ওয়েব সাইট চালু করব। শুধু শিল্পী নয়, কলাকুশলীদের কল্যাণেও নানা উদ্যোগ রয়েছে আমার। যা প্রক্রিয়াধীন। প্রযোজক, পরিচালক, প্রদর্শকদের সঙ্গে নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসে চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে যা করণীয় সবই সম্মিলিতভাবে করতে চাই।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নায়িকা মৌসুমীকে কীভাবে দেখছেন?
মৌসুমী নির্বাচন করছে বলে আমি খুবই খুশি। কারণ মৌসুমী শুধু আমার কাজের নয়, পারিবারিক বন্ধুও বটে। বন্ধুদের মধ্যে কখনো হারজিৎ থাকে না। সম্মানিত সদস্যরা সিদ্ধান্তের মালা গেঁথে যার গলায়ই পরাবেন তাকেই আমি উপযুক্ত ভালোবাসা হিসেবে মেনে নেব। এই বিজয়ের মালা আমাদের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে। বন্ধু মৌসুমীর জন্য রইল আমার শুভ কামনা। আরেকটি কথা বলতে চাই, সম্মানিত সদস্যদের ভালোবাসাই হচ্ছে মিশা সওদাগর-জায়েদ খান প্যানেলের মূল শক্তি।