মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সাধনা শিবদাসানির শেষ জীবন কাটে অন্যের বাড়িতে

শোবিজ ডেস্ক

সাধনা শিবদাসানির শেষ জীবন কাটে অন্যের বাড়িতে

পছন্দের অভিনেত্রীর নামে একমাত্র মেয়ের নাম রেখেছিলেন বাবা। তখন আর কে জানত একদিন এই কন্যাই শাসন করবে হিন্দি ছবির দুনিয়া! পরিবারে অভিনয়ের ধারা আগে থেকে থাকায় এই ক্যারিয়ারে পা রাখতে সুবিধা হয়েছিল সাধনা শিবদাসানির। অবিভক্ত ভারতের করাচির সিন্ধু প্রদেশে সাধনার জন্ম ১৯৪১ সালের ২ সেপ্টেম্বর। তার চাচা ছিলেন অভিনেতা হরি শিবদাসানি। কারিশমা-কারিনার মা অভিনেত্রী ববিতা হলেন সাধনার চাচাতো বোন। তিন ও চার দশকের জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী তথা নায়িকা সাধনা বসুর নামে নামকরণ হয়েছিল শিবদাসানির পরিবারের সদ্যোজাত শিশুর। দেশভাগের পর তাদের পরিবার করাচি থেকে চলে এসেছিল তৎকালীন বম্বে (বর্তমান মুম্বাই) শহরে। ওয়াডালার অক্সিলিয়াম কনভেন্ট স্কুলের পর সাধনা ভর্তি হন জয় হিন্দ কলেজে। ছোট  থেকেই সিনেমা দেখতে ভালোবাসতেন তিনি। বড় হয়ে ক্রমে গাঢ় হয় নায়িকা হওয়ার ইচ্ছা। তার অনুপ্রেরণা ছিলেন অভিনেত্রী নূতন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে প্রথম ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ আসে। ভারতের প্রথম সিন্ধি ছবি ‘আবানা’য় তিনি অভিনয় করেছিলেন অভিনেত্রী শিলা রামানির বোনের ভূমিকায়। সেখানেই তিনি নজর কাড়েন পরিচালক শশধর মুখোপাধ্যায়ের। নায়িকা হিসেবে সাধনার প্রথম ছবি ‘লাভ ইন সিমলা’ মুক্তি পায় ১৯৬০ সালে। সে বছর প্রথম দশটি বক্স অফিস সফল ছবির মধ্যে এটি ছিল অন্যতম। এই ছবিতে সাধনার লুক কিছুতেই পছন্দ হচ্ছিল না পরিচালক আর কে নায়ারের। কারণ সাধনার চওড়া কপাল সব সাজ মাটি করছিল বলে মনে হচ্ছিল তার। তিনি বিখ্যাত হলিউড অভিনেত্রী অর্ড্রে হেপবার্নের একটি ছবি দেন হেয়ারড্রেসারকে। তারপরই সাধনার কপালে পড়ে গুচ্ছ চুল, যাকে ইংরেজিতে বলা হয় ‘ফ্রিঞ্জ’। যে ফ্রিঞ্জের নাম ব্যক্তিগত জীবনেও সাধনার কাছে ষাটের দশক খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ১৯৬৬ সালে সাধনা বিয়ে করেন পরিচালক আর কে নায়ারকে। তাদের বয়সের ব্যবধানের জন্য এই বিয়েতে রাজি ছিলেন না সাধনার বাবা-মা। কিন্তু পরে মেয়ের জেদের কাছে হার মানতে বাধ্য হন তারা। বিয়ের পরও কয়েক বছর চুটিয়ে অভিনয় করেছেন সাধনা। কিন্তু সত্তর দশকের মাঝামাঝি সময় তিনি ক্রমশ সরে আসেন অভিনয় থেকে। কারণ নায়িকা ছাড়া পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে তিনি রাজি ছিলেন না। ১৯৭৪ সালে সাধনার পরিচালনায় এবং তার স্বামীর প্রযোজনায় মুক্তি পায় ‘গীতা মেরে নাম’। সুনীল দত্তের বিপক্ষে ছবির নায়িকা ছিলেন সাধনা। ‘পতি পরমেশ্বর’ নামে একটি ছবি প্রযোজনাও করেছিলেন সাধনা। ছবির নায়িকা ছিলেন ডিম্পল কাপাডিয়া। অভিনয় থেকে সরে যাওয়ার পর প্রকাশ্যে আসতেন না সাধনা। নিভৃত জীবনে প্রবেশাধিকার ছিল না আলোকচিত্রীদেরও। ক্রমশ রোগও বাসা বাঁধতে থাকে তার শরীরে। ১৯৯৫ সাল থেকে নিঃসন্তান সাধনার সঙ্গী হয় একাকিত্ব। একাকিত্বের পাশাপাশি শেষ জীবনে সাধনা কষ্ট পেয়েছেন আর্থিক দিক দিয়েও।  শোনা যায়, নিজের ক্যারিয়ারের সেরা সময় মহার্ঘতম নায়িকা সাধনা  শেষ জীবনে থাকতেন আশা ভোঁসলের সান্তাক্রুজের ফ্ল্যাটে।

সর্বশেষ খবর