বুধবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

দুজন খ্যাতিমান শিল্পীকে নিয়ে ইত্যাদি

শোবিজ প্রতিবেদক

দুজন খ্যাতিমান শিল্পীকে নিয়ে ইত্যাদি

মাসুদ আলী খান, এ টি এম শামসুজ্জামান ও হানিফ সংকেত

দীর্ঘদিন পর আবারও টেলিভিশনের পর্দায় ফিরছেন খ্যাতিমান অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান ও মাসুদ আলী খান। আর এই দুই গুণী অভিনেতাকে একসঙ্গে ক্যামেরার সামনে নিয়ে আসছেন নন্দিত নির্মাতা, উপস্থাপক হানিফ সংকেত তার ২৯ নভেম্বর প্রচারিতব্য ইত্যাদির মাধ্যমে। গত ৪ নভেম্বর ঢাকায় ফাগুন অডিও ভিশনের নিজস্ব শুটিং স্পটে তাদের এ দৃশ্য ধারণ করা হয়।

উল্লে­খ্য, টানা চার মাসেরও বেশি সময় হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিলেন খ্যাতিমান অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান। তখন নিয়মিতই তার খোঁজখবর রাখতেন হানিফ সংকেত। একদিন হাসপাতালে এ টি এম শামসুজ্জামানকে দেখতে গেলে, সুস্থ হয়ে আবারও ইত্যাদির মাধ্যমে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। আর তাই সুস্থ হয়ে বাসায় এলে তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তাকে নিয়ে ইত্যাদির জন্য একটি নাট্যাংশ নির্মাণ করেন হানিফ সংকেত। এ প্রসঙ্গে এ টি এম শামসুজ্জামান বলেন, ‘কথায় আছে, রাখে আল্ল­াহ মারে কে। আমার যখন শারীরিক অবস্থা চরম খারাপ, তখন জানতে পেরে অসংখ্য মানুষ আমার জন্য হাত তুলে দোয়া করলেন আল্ল­াহর কাছে। আমি যখন অসুস্থ ছিলাম তখন আমার মনে হচ্ছিল আমি কি আর ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে পারব। এ সময় ইত্যাদির হানিফ সংকেত আমার কাছে এলেন, বললেন আপনাকে আমরা নিয়ে যাব, আপনার একটুও হাঁটতে হবে না। তিনি তার কথা রাখলেন। পরম ধৈর্য সহকারে বেশ সময় নিয়ে আমাদের পর্বটি ধারণ করলেন এবং শুটিং শেষে আবার বাসায় পৌঁছে দিলেন।’ এদিকে গত ৬ অক্টোবর ৯০ বছরে পদাপর্ণ করলেন আরেক বর্ষীয়ান খ্যাতিমান অভিনেতা মাসুদ আলী খান। ৯০ বছরে পা রেখে ইত্যাদির মাধ্যমে তিনিও আবার দীর্ঘদিন পর টেলিভিশনে অভিনয়ে ফিরলেন। ইত্যাদিতে অভিনয়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রায় ৬ বছর আগে একটা দুর্ঘটনার ফলে আমার শিরদাঁড়ার একটা অংশ ভেঙে যায়। ফলে আমার পক্ষে আর অভিনয় করা সম্ভব হতো না। অভিনয় করতে না পারলেও মনে তো একটা খেদ থাকেই। কারণ আমি নিয়মিত রেডিও-টেলিভিশনে অভিনয় করতাম। আর ইত্যাদি আমার অত্যন্ত প্রিয় একটা অনুষ্ঠান। এতে আমি বরাবরই অংশগ্রহণ করতাম। আমি মনে একটা আশা পোষণ করছিলাম যে, যদি জীবনে কোনো অনুষ্ঠান করা আর নাই হয় এই জীবনসায়াহ্নে এসে ইত্যাদির একটা পর্বে আমি অভিনয় করবই। তাই এবার ইত্যাদির মাধ্যমে আপনাদের সামনে আসা। যতদিন বাঁচি আমি যেন মাঝেমধ্যে আপনাদের সাক্ষাৎ পাই। সেই দোয়া চাই।’ এ প্রসঙ্গে হানিফ সংকেত বলেন, ‘বর্ষীয়ান এই অভিনয়শিল্পীরা আমাদের জাতীয় সম্পদ। আজকাল মিডিয়াতে দেখা যায় একটু বয়স হলে তার জন্য আর কোনো চরিত্র থাকে না। কারণ অধিকাংশ নাটকেই কোনো বাবা-মা বা বয়স্ক চরিত্র দেখা যায় না। আর কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার খোঁজ-খবর নেওয়া শুধু সেলফিতেই সীমাবদ্ধ থাকে। তবে আমার নাটক বলেন, ইত্যাদি বলেন সব জায়গায়ই এসব গুণী শিল্পীর একটা বিশেষ স্থান থাকে। এই দুই গুণী অভিনেতা ইত্যাদির প্রায় নিয়মিত শিল্পী। দীর্ঘদিন দূরে থাকার পর পরিবারের একজন সদস্য ফিরে এলে যেমন আনন্দ হয় ইত্যাদিতে আবার তাদের পেয়ে আমিও তেমনি আনন্দিত। যদিও তাদের এই দূরে থাকাটা ছিল অসুস্থতার কারণে। তবে তাদের সেই অভিনয় দ্যুতি এখনো আছে।

সর্বশেষ খবর