বুধবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ → সাইমন সাদিক

আমার অল্প জীবনে সেরা অর্জন

আমার অল্প জীবনে সেরা অর্জন

ঢাকাই চলচ্চিত্রের নির্ভরযোগ্য নায়ক সাইমন সাদিক। ক্যারিয়ারে একের পর এক দর্শকনন্দিত চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন সিনেমাপ্রেমীদের। ‘জান্নাত’ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবে পাচ্ছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এই চিত্রনায়কের সঙ্গে সমসাময়িক ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্তিতে অভিনন্দন...

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 

প্রথমবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার! কেমন লাগছে?

আমি তো বলব, এটা আমার অল্প জীবনে সেরা অর্জন। আমি আবেগ আপ্লুত, ভাষাহীন হয়ে গেছি। এই অর্জনের ফলে দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল। ভালো কিছু কাজ করার উৎসাহও বেড়ে গেছে। একজন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রাভিনেতা হিসেবে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা বেড়ে গেল। আল্লাহর দরবারে কোটি কোটি শুকরিয়া এই সম্মানে। এই অর্জনের জন্য আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ আমার ওস্তাদজি জাকির হোসেন রাজু স্যারের কাছে। তার মাধ্যমে আমার ফিল্মে আবির্ভাব। আর আমার বাবা-মাকে। আসলে এই পথটা আমার জন্য সহজ ছিল না। ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকার জন্য প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করছি। সব মিলিয়ে এখনো স্ট্রাগলিং পিরিয়ডে আছি। এই দুঃসময়েও এত বড় সফলতা আমাকে অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে।

 

কততম চলচ্চিত্রে এ সফলতা এসেছে?

২২তম চলচ্চিত্রে। আমার ওস্তাদ জাকির হোসেন রাজু স্যারের ‘জ্বি হুজুর’র মাধ্যমে অভিনয় জীবনের শুরু। ছবিটি মুক্তি পায় ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে। সেই হিসাব করলে ক্যারিয়ার সাত বছর হবে। 

 

কাহিনিকার হিসেবে প্রথম ছবিতেই জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন সুদীপ্ত সাঈদ খান। তার ব্যাপারে অভিমত?

এটা সত্যিই আনন্দের ও বিস্ময়ের। তিনি আমাদের আরেকটি ছবি ‘আনন্দ অশ্রু’র স্ক্রিপ্টও লিখেছেন। অনেকেই অভিযোগ করেন, আমরা ভালো স্ক্রিপ্ট রাইটার পাই না। তার কিছুটা হলেও সুদীপ্ত পূরণ করবেন বলে প্রত্যাশা।

 

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে...

সমালোচনা হবেই। তবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে আমি অনেক বেশি পজেটিভ। রাষ্ট্রের যে কোনো বড় বিষয় আমার কাছে শ্রদ্ধার। যারা সমালোচনা করছেন তারা বুঝে করছেন না। বিতর্ক সব জায়গায়   থাকবে। আর এত বড় একটা জায়গায় সবাইকে খুশি করা সম্ভব নয়। তবে যারা পুরস্কার পাননি, তারাও কিন্তু জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য দাবিদার বলে মনে করি। যারা পেয়েছেন বা যারা পাননি সবাইকেই রাষ্ট্রীয় এ সর্বোচ্চ সম্মাননার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকা উচিত। না পেলেই গালমন্দ করতে হবে-এটার পক্ষে আমি না। আর মোশাররফ ভাই আমার প্রিয় অভিনেতা। এই রাষ্ট্রীয় সম্মাননা তার গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করি।

সমালোচনা মেনে নেওয়ার মানসিকতা কেমন? সমালোচনাতেই আমরা বাঁচি। মনে করি, সমালোচনা না থাকলে আমার অনেক ঝামেলা আছে। অথবা আমি স্ক্রিনে নেই ঠিকঠাক মতো। অথবা আমার সমালোচক বা কোনো শুভাকাক্সক্ষী নেই। আসলে সমালোচনা করে বলেই আমি সেখান থেকে শিক্ষা নিতে পারছি। আমি সবক্ষেত্রেই সমালোচকদের ধন্যবাদ দিতে চাই। তারা আমার শত্রু না; তারা আমার অনেক কাছের।

 

‘আনন্দ অশ্রু’ ছবির আপডেট কী?

এটিতে জান্নাতের একই টিম। প্রায় শেষের দিকে। দুই দিন দুটি ক্লাইমেক্স দৃশ্য আর দুটি গানের শুটিং আছে। সামনের বছরের প্রথমদিকে মুক্তি পাবে।

 

আরও কিছু চলচ্চিত্র মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল...

‘নদীর বুকে চাঁদ’ এই বছরেই মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। কেন হচ্ছে নাম জানি না। ‘বাহাদুরি’ও মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। এটি অনেক আগেই শেষ করে দিয়েছি। ‘আমার মা আমার বেহেশত’ অর্ধেক শেষ। ‘গোপন সংকেত’ও ৫০ শতাংশ শেষ। আরও কিছু ছবি আছে।

 

গত দুই বছরে কি কাজ কম করেছেন?

মাঝখানে অনেক বেশি কাজ ছিল। এখন হয় তো একটু কমে গেছে। আমি বলব না যে, বেছে বেছে কাজ করছি। আমি তো বলব, আমার রিজিকে নেই। বেছে বেছে শব্দটা আমার কাছে কেমন জানি লাগে; পছন্দ নয়। বাছার মতো যোগ্যতা তো এখনো আমার হয়নি। আমার কাছে কাজের অফার আসে-এটাই শুকরিয়া।

 

বাইরের দেশে দেখা যায়, কোনো নায়ক-নায়িকার ছবির প্রমোশনে সবাই উৎসাহ দেন, প্রমোশনে অংশ নেন। আমাদের দেশে এমন দৃশ্য কেন দেখা যায় না?

আমি কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে সবার পাশে সবসময় থাকি। প্রত্যেকের ছবির প্রচার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করার চেষ্টা করি। আমি বিশ্বাস করি, যদি ইন্ডাস্ট্রিতে ১০টি ছবি হয়, তবে অন্তত একটি ছবি আমার কপালে জুটবে। এটা আমার স্বার্থ বলতে পারেন, আবার ইন্ডাস্ট্রির স্বার্থও বলতে পারেন। তবে আমাদের সবার উচিত মন-মানসিকতার পরিবর্তন করা। ইন্ডাস্ট্রির স্বার্থে এগিয়ে আসা উচিত।

সর্বশেষ খবর