বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ → শামীম আরা নীপা

দেশে নৃত্য নিয়ে কাজ কম হয়

জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী ও নৃত্যাঞ্চলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা শামীম আরা নীপা। একুশে পদকপ্রাপ্ত এ নৃত্যশিল্পী কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে অনুষ্ঠিত ‘ওশান ড্যান্স ফেস্টিভ্যাল’-এ অংশগ্রহণ করবেন। যেখানে প্রদর্শিত হবে তার ‘বাদী বান্দার রূপকথা’। বর্তমান ব্যস্ততা ও সমসাময়িক বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

দেশে নৃত্য নিয়ে কাজ কম হয়

প্রথমবারের মতো হচ্ছে আন্তর্জাতিক নৃত্য উৎসব ‘ওশান ড্যান্স ফেস্টিভ্যাল-২০১৯’। এই নৃত্য উৎসব নিয়ে আপনার অভিমত কী?

এমন ধরনের যে কোনো উৎসব বা ইভেন্টকেই স্বাগত জানাই। বাইরের দেশে হলেও আমাদের দেশে ড্যান্স নিয়ে তেমন করে কাজ হয় না। সেদিক দিয়ে এ ধরনের একটি বড় আন্তর্জাতিক নৃত্য উৎসব হচ্ছে। এটি নিশ্চয়ই পজেটিভ। প্রত্যেকেরই অবদান রয়েছে এটিতে। সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ভালো একটি উৎসব হবে আশা করছি।

 

ফেস্টিভ্যালে অংশ নিতে কবে কক্সবাজার যাচ্ছেন?

২৩ তারিখে।

সেখানে তো ‘বাদী বান্দার রূপকথা’ প্রদর্শিত হবে...

হুমম...নৃত্যাঞ্চল ও সৃষ্টি কালচারাল সেন্টারের যৌথ প্রযোজনা এটি প্রদর্শিত হবে উৎসবের সমাপনী দিনে। আরব্য উপন্যাস আলীবাবা চল্লিশ চোর-এর কাহিনি নিয়ে তৈরি এটি সন্ধ্যা ৭টার পর কক্স কার্নিভালে প্রদর্শিত হবে।

 

এটিতে আপনি, শিবলী ও হিরু কোন চরিত্র রূপায়ণ করছেন?

আমি তো মর্জিনা চরিত্রটি করছি। শিবলী মোহাম্মদ আলীবাবা এবং আনিসুল ইসলাম হিরু আবদুল্লাহ করছেন। অন্যদিকে বাদী বান্দার রূপকথার নির্দেশক সুকল্যাণ ভট্টাচার্য কাশেম চরিত্রটি করছেন।

 

কিছুদিন আগে নৃত্যাঞ্চল শিশুদের নিয়ে নৃত্য প্রযোজনা করল। সবমিলিয়ে কেমন হয়েছে?

আমাদের নৃত্যাঞ্চল ড্যান্স কোম্পানির সমন্বয়ক প্রয়াত মুহাম্মদ জাহাঙ্গীরের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই বিশেষ নৃত্য প্রযোজনা মঞ্চে এনেছি। এর নাম ‘ছড়ায় ছন্দে নৃত্যমালা’। আমি নির্দেশনা দিয়েছি। নৃত্যাঞ্চলের প্রায় ২৫০ জন শিশু নিয়ে এই প্রযোজনাটি করেছি। প্রায় দুই মাস টানা মহড়া করেছি। খুব কালারফুল একটি পরিবেশনা। এখন তো বাচ্চাদের তেমন কিছুই হয় না। নাচের ক্ষেত্রেও দেখি, বাচ্চারা বড়দের মতো সাজছে, বড়দের মতো নাচছে। এটা শিশুর স্বাভাবিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে। তাই তাদের নিয়ে এই আয়োজনটি করেছি। যারা দেখেছেন, তারা অনেক প্রশংসা করেছেন।

 

নৃত্যাঞ্চল নিয়ে আর কী কী পরিকল্পনা?

ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে একটি বড় পরিবেশনা মঞ্চে আসবে। ভারতের দিল্লি থেকে কর্মশালা করাতে আসবেন কত্থক নৃত্যশিল্পী মালতী স্যাম। এছাড়াও ড্যান্স ড্রামা বাদল বরিষণে নতুন করে মঞ্চে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর প্রথমবারের মতো মার্চ বা এপ্রিলে

নৃত্যাঞ্চলের বার্ষিক আয়োজন হবে।

 

অধিকাংশ নৃত্যনাট্যে দেখা যায় শিবলী নায়ক আর নীপা নায়িকা। বিষয়টি রহস্যময় নয়?

রহস্য আসলে তেমন কিছু নেই। সুচিত্রা সেন-উত্তম বা রাজ্জাক-ববিতাকে যেমন মানুষ পর্দায় দেখতে চায়, তেমনি আমাদের জুটিকেও মানুষ একসঙ্গে দেখতে চায়। নীপা ছাড়া শিবলীকে কিন্তু অন্যের সঙ্গে চায় না। আমাদের রসায়ন ভালো। অন্যদিকে আমরা ভালো বন্ধুও। এটা সবমিলিয়ে পজেটিভ।

 

আপনাদের বন্ধুত্বের বয়স কত হলো?

বন্ধুত্বের বয়স তো প্রায় ৩৫ বছর। শিবলীর সঙ্গে এই বন্ধুত্বটা সারা জীবনই অটুট থাকবে। দুটি মানুষের মধ্যে বন্ধুত্ব কিন্তু বলে-কয়ে হয় না। একটা মানুষকে তো জানতে হয়, চিনতে হয়, তাই না? অটোমেটিক্যালি বন্ধুত্বটা হয়ে যায় আর কি! এমন নয় যে, আজকে ওর সঙ্গে দেখা হলো, আর তখনই বন্ধুত্বটা হয়ে যাবে; দুজন মানুষের মধ্যকার চিন্তা, ক্যামেস্ট্রি যখন মিলে যায়, তখনই বন্ধুত্ব হয়। আর অবশ্যই নৈতিক চরিত্রে মিল থাকতে হয়। তাই তো ওর সঙ্গে আমার রসায়নটা এত ভালো।

 

বর্তমানে নৃত্যে পেশাদারিত্ব কতটুকু?

নাচে এখন পেশাদারিত্বের জায়গা তৈরি হয়েছে। অনেকে তা গ্রহণও করেছেন। ছেলেমেয়েদের মধ্যে নাচের আগ্রহ তৈরি হওয়ায় এখন স্কুলের সংখ্যাও বেড়েছে। এখন নাচের আয়োজনও বেশি হচ্ছে। ফলে পেশা হিসেবে নাচ এখন নেওয়া যায়। তবে নাচের ক্ষেত্রে চড়াই-উৎরাই পার হয়ে আমরা আজ এ অবস্থানে। যোগ্যতা দিয়ে নাচের এই প্লাটফর্মে আসতে হয়েছে। তবে এই মাধ্যমে অনেক প্রতিবন্ধকতাও আছে। অনেক ভালো নৃত্যশিল্পী তৈরি হলেও একটি জায়গায় কমতি আছে, সেটা হলো টিভি চ্যানেলগুলোতে। সেখানকার অনুষ্ঠানে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নন-ড্যান্সারদের পারফর্ম করতে দেখা যায়।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর