বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

গান গাইলেই সংগীতশিল্পী হওয়া যায় না

গান গাইলেই সংগীতশিল্পী হওয়া যায় না

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী রিজিয়া পারভীন। তিনি আমাদের গানের ভুবনে উপহার দিয়েছেন বেশকিছু জনপ্রিয় গান। বর্তমানে দেশ-বিদেশে স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত এই গুণী শিল্পী। পাশাপাশি চলছে নতুন কিছু গানের কাজ। গান ও সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন- রাফিয়া আহমেদ

 

দেশে ফিরেছেন কবে?

দেশে ফিরেছি অক্টোবরের ৩০ তারিখে।

 

যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন কী কারণে?

আমেরিকায় আমার প্রতি বছর দুই-তিনবার যাওয়া হয়। এবার আমেরিকায় গিয়েছিলাম বেশকিছু গানের প্রোগ্রাম ও কিছু ব্যক্তিগত কাজ নিয়ে। যদিও গানের প্রোগ্রামকে উদ্দেশ্য করেই দেশের বাইরে যাই মাঝে মাঝে। এবার এই পাঁচ মাস শুধু যে আমেরিকায় থেকেছি বা সেখানে প্রোগ্রাম করেছি তা নয়, আমেরিকা থেকে অন্যান্য দেশেও প্রোগ্রাম করেছি। যেমন আমি কানাডায়ও গিয়েছিলাম গানের অনুষ্ঠান করতে। 

 

নচিকেতার সুরে একটি গানের অ্যালবাম করার কথা ছিল, তার ব্যাপারে কিছু বলুন।

হ্যাঁ, আসলে নচিকেতার সুরে যে গানের কাজটি শুরু করেছিলাম তা আজ প্রায় দেড় বছর হয়ে গেল। গানের কাজটি এখনো শেষ করা হয়নি কারণ আমি যখন কলকাতায় থাকি দাদা তখন দেশের বাইরে, আবার আমি যখন দেশের বাইরে থাকি দাদা তখন কলকাতায় থাকেন। এভাবে আমাদের আসলে সময় মিলছেই না। তবে এবার ইচ্ছা আছে নচিকেতা দাদার সঙ্গে গানের কাজটি পূর্ণাঙ্গরূপে শেষ করব। আশা করি আগামী ২০২০ সালের রোজার ঈদেই দর্শকদের নচিকেতার সুরে আমার গাওয়া গান উপহার দেব। 

 

একসময় সিনেমায় অনেক গানে প্লে-ব্যাক করেছেন এখন করেন না কেন?

একটা সময় ছিল যখন সিনেমায় প্রচুর গান গাওয়া হতো। তখন অবশ্য অনেক ভালো মানের সিনেমা তৈরি হতো এবং সেসব সিনেমায় গান গাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হতো, আমরা প্লে-ব্যাকও করেছি প্রচুর। তবে এখন আর তেমন প্লে-ব্যাক করা হয় না। এটা কেন করা হয় না তার ব্যাখ্যা দিতে গেলে অনেক কথাই বলতে হয়। তারপরও আমার মনে হয় এখন অনেক নতুন মুখ দেখছি সংগীত জগতে, তারাও বেশ ভালো গাইছে।

 

এখন সিনেমায় যেসব গান হচ্ছে তার মান সম্পর্কে আপনি কী মনে করেন?

বর্তমানে সিনেমায় প্লে-ব্যাকের কাজগুলো ভালোই হচ্ছে। তবে আমাদের সময় যেরকমটা ছিল কাজের ধরন, এখনকার সিনেমার প্লে-ব্যাকের কাজের ধরনের মধ্যে অনেক পরিবর্তন এসেছে। আমাদের সময় যিনি গান গাইতেন তিনি নিজেই গানের মাঝে বা আগে ডায়ালগ অথবা এক্সপ্রেশন দিতেন। অনেক সময় কান্না করা, হাসি ইত্যাদি বিষয় থাকত সিনেমার গানে। যতটা কষ্ট ছিল ততটাই আনন্দ কাজ করত তখনকার সময় প্লে-ব্যাকে কাজ করে। আর এখন অবশ্য সেই অনুভূতিটা পাওয়া যায় না।

 

এতদিনে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ রং বদল হয়েছে, কেমন লাগছে এ বিষয়টি?

মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে একটা পরিবর্তন এসেছে, এটা সত্যি। বিশেষ করে আমাদের সময় সুরের প্রাধান্যটা একটু বেশিই ছিল গানের কথার পাশাপাশি। কিন্তু বর্তমানের খুব কম গানেই সুর পাওয়া যায়। এখনকার গানগুলোতে এক ধরনের অস্থিরতা কাজ করছে। আসলে গানের ভুবনে একটা ধারায় কেমন যেন পরিবর্তন চলে এসেছে, এটা যে শুধু আমাদের দেশেই হয়েছে তা কিন্তু নয়, এই পরিবর্তনটা আমাদের পাশের দেশেও দেখা যাচ্ছে। কিন্তু একটা বিষয় লক্ষ্য করবেন, যতই গানের মধ্যে পরিবর্তন আসুক না কেন গান শিখতে গেলে কিংবা রিয়েলিটি শোগুলোতে আমরা যে গানগুলো গেয়েছিলাম বা ৫০ বছর আগে যে গানগুলো গাওয়া হয়েছিল এখনকার তরুণরা কিন্তু সেই গান গেয়েই সংগীত জগতে পা রাখছে।

 

এই যে বললেন, এসব গানের স্থায়িত্ব বেশি দিন থাকে না, এর মূল কারণ কী?

এর মূল কারণ হচ্ছে গুরুর শিক্ষা না থাকা। গানের মূল বিষয় হচ্ছে সাধনা করা। গুরুর শিক্ষার মাধ্যমে সঠিক শিক্ষা নেওয়া এবং প্রতিদিন রেওয়াজ করা।  গান গাইলেই সংগীতশিল্পী হওয়া যায় না।

 

নতুন কোনো গান দর্শকদের উপহার দিচ্ছেন কী?

সামনে এস আই টুটুলের সংগীতায়োজন ও সুর করা গান নিয়ে কাজ করছি। একটা গান আমি আর টুটুল ডুয়েট করেছি, আরেকটা গান শুধু আমি গেয়েছি। এই গানগুলো হয়তো মিউজিক ভিডিও হিসেবে বের হবে। এ ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে খুব শিগগিরই গানগুলো প্রকাশ পাবে।

সর্বশেষ খবর