শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ → পপি

নির্মাতার গার্লফ্রেন্ডও এখন নায়িকা হচ্ছে

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী বুনোসুন্দরী পপি। তার কাছে কোয়ান্টিটি নয়, কোয়ালিটিই মুখ্য। তাই রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আর দর্শক ভালোবাসা সহজেই তার অর্জনের ঝুলিকে করেছে সমৃদ্ধ। এই বুনোসুন্দরীর সঙ্গে কথা বলেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

নির্মাতার গার্লফ্রেন্ডও এখন নায়িকা হচ্ছে

কেমন কাটছে চলচ্চিত্র জীবন?

এখন একদিকে এই শিল্পে কাজ কম, অন্যদিকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। তাই ব্যাটে-বলে না মিললে কাজ হাতে নিচ্ছি না। সম্প্রতি ‘ইয়েস ম্যাডাম’ শিরোনামের একটি ছবির প্রস্তাব পেলেও গল্প পছন্দ না হওয়ায় কাজটি করিনি। দুঃখজনক হলেও সত্য, কিছু নামধারী সাংবাদিক সংবাদ প্রকাশ করেছেন আমাকে নাকি ছবিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমার অনুরোধ এ ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত খবর যেন আর প্রচার করা না হয়। শিল্পীকে অসম্মান করা প্রকৃত সাংবাদিকের কাজ হতে পারে না। নিজেকে অনেক কষ্টে ভালো কাজ দিয়ে তিলে তিলে গড়ে তুলেছি। গল্প আর চরিত্র বেছে কাজ করি, এই স্বাধীনতা শিল্পী হিসেবে আমার রয়েছে। কেউ যাতে মিথ্যা খবর প্রকাশ করে শিল্পীদের মর্যাদা ক্ষুণœ না করেন এটিই আমার একান্ত অনুরোধ।

 

চলচ্চিত্রের অবস্থা ভালো নয়, শিল্পী হিসেবে এ সত্যটি স্বীকার করেন?

সত্যিই, এ শিল্পের অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে খুবই করুণ। সিনেমা হলের পরিবেশ নেই, পর্যাপ্ত সিনেপ্লেক্স নেই, প্রকৃত প্রযোজক না থাকায় মানসম্মত ছবি হচ্ছে না, এতে গুণী নির্মাতারাও ছবি নির্মাণ করতে পারছেন না। মেধা ও মানহীন কিছু নির্মাতার কারণে আজেবাজে ছবি নির্মাণ হচ্ছে। এতে দর্শক দেশীয় ছবিবিমুখ হচ্ছে। প্রচুর শিল্পী আছে। কিন্তু তাদের না নিয়ে নামধারী নির্মাতারা তাদের বউ বা গার্লফ্রেন্ডকে নায়িকা বানাচ্ছেন, বন্ধুবান্ধব এমনকি নিজের বাসার কাজের লোক দিয়েও অভিনয় করাচ্ছেন। গল্পও হচ্ছে যাচ্ছেতাই। এতে শিল্পটি ক্রমেই নিম্নগামী হচ্ছে। যা একটি দেশের প্রধান এই গণমাধ্যমের জন্য উদ্বিগ্নের কারণ। এ বিষয়ে গুণীদের সচেতন হতে হবে।

 

বর্তমান সময়ের শিল্পীরা সহজে হারিয়ে যায় কেন?

আসলে আমরা যারা আগে কাজ করতে এসেছিলাম, তারা কিন্তু শুধু টাকার জন্যই অভিনয়ে আসিনি। শিল্পী সত্তাকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠা করতেই কাজ করেছি। এখন  বেশির ভাগই আসে সহজে অর্থবিত্তের মালিক হওয়া, প্রেম, বিয়ে, পরকীয়া, কোটিপতি প্রযোজকের সঙ্গে প্রেম করে বড়লোক হওয়া- এসবই হচ্ছে এখনকার প্রায় শিল্পীর অদূরদর্শী ভাবনা। এ কারণেই এসব প্রেম, বিয়েও হয়ে যায় ক্ষণস্থায়ী। এফডিসিকে আগের শিল্পীরা মনে করতেন চলচ্চিত্রের কাজের জায়গা। এখন অনেকে এই সংস্থাকে ভাবেন বিয়ের এজেন্সি। এই যদি বর্তমান সময়ের মন-মানসিকতা হয়, তাহলে সাত্যিকারের শিল্পী বা চলচ্চিত্র নির্মাণ হবে কীভাবে?

 

নিজের প্রেম বিয়ে নিয়ে কি বলবেন?

মাঝে মধ্যে আমার প্রেম বিয়ে নিয়ে মিথ্যা খবর চাউর হয়। কিন্ত আমার কোনো স্ক্যান্ডাল নেই। বিয়ে করার মতো ভালো মানুষ পাইনি বলে এখনো ব্যাচেলর রয়ে গেছি। দীর্ঘদিন ধরে মানুষের মধ্যে কমিটমেন্টের বড়ই অভাব। আর বিয়ে মানেই দুদিনের মাথায় পরকীয়া আর ডিভোর্স। এসবকে বড় ভয় পাই। দেরিতে হলেও সৎ ও চরিত্রবান মানুষ, যার মধ্যে কমিটমেন্ট আছে তাকেই বিয়ে করব। বিয়ে করার জন্য এক কথায় ভালো মানুষ চাই, যে আমাকে জানবে, বুঝবে। যে মানুষকে বিয়ে করলে কোনো রিস্ক থাকবে না তেমন মানুষ পেলেই শুধু বিয়ে করব।

সর্বশেষ খবর