দর্শকনন্দিত অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম। নৃত্যশিল্পী হিসেবেও তিনি সপ্রতিভ। ‘দারুচিনি দ্বীপ’-এর মাধ্যমে এই লাক্স তারকার বড়পর্দায় অভিষেক। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে অর্জন করেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। বর্তমানে বেশ কিছু চলচ্চিত্রে কাজ করছেন। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন - পান্থ আফজাল
দেখলাম, খুবই ফুরফুরে মেজাজে রিকশায় ঢাকা শহর চষে বেড়াচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে একটু বিস্তারিত বলবেন?
গতকাল ছিল ঢাকা সিটি নির্বাচন। ঢাকা শহরের রাস্তা পুরাই ফাঁকা। অঞ্জন আইচের ‘আগামীকাল’ ছবির ডাবিং ছিল নিকেতনের রিপন নাথের সাউন্ডবক্সে। সেখানে যাচ্ছিলাম রিকশায় করে। এটিকে বলা যায় একটি ‘বিউটিফুল রিকশা রাইড’। খুবই আনন্দ নিয়ে রিকশায় ঘুরেছি। রিকশা-মামার সঙ্গে যেতে যেতে গল্প করেছি। ফাঁকা রাস্তায় নেমে মামার সঙ্গে গরম ধোঁয়া ওঠা চা খেয়েছি। আসলে জীবনকে যত বেশি উপভোগ করা যায়, যত বেশি জীবনের কাছাকাছি থাকা যায়, সেটাই সত্যিকারের বেঁচে থাকা।
‘আগামীকাল’ কেমন হবে?
একটি ডিরেক্টরের মুভি। ডিরেক্টরের চিন্তার প্রতিফলন-সমৃদ্ধ একটি মৌলিক গল্পের ছবি। এটির মধ্যে চারপাশের পারিপার্শ্বিকতা আছে। একটি মেয়ের সংগ্রামের গল্প রয়েছে। এটির গল্পটাই মূল; হিরো-হিরোইন বিষয় নয়। আমি হিরো-হিরোইননির্ভর চরিত্রগুলো ইনজয় করি না। আমি বরাবরই একটু আলাদা। শিহাব শাহীনের ‘ছুঁয়ে দিল মন’ আমার টাইপ থেকে একটু ভিন্ন হলেও ‘আলতাবানু’, ‘দহন’ কিংবা ‘স্বপ্নের ঘর’ হিরো-হিরোইন বেজড ছিল না। একটা থেকে আরেকটার চরিত্র ভিন্ন।
শুভ-তাহসানের সঙ্গে ‘কন্ট্রাক্ট’ নামের একটি ওয়েব সিরিজে অভিনয় করছেন বলে জেনেছি। বিষয়টি কতটুকু নিশ্চিত?
কথা হয়েছে। আর ‘জি ফাইভ’ নিশ্চিত করেছে। শুভ অনুষ্ঠানেও গিয়েছিল। শুনেছি সে করছে। গুছিয়ে উঠতে একটু সময় লাগবে এটি নির্মাণে।
বলিউডে একটি ফিল্ম করছিলেন। আপডেট কী?
ছবিটির শুটিং শেষ হয়ে গেছে। তবে কবে, কীভাবে মুক্তি পাবে, সেটা আমার নিজের কাছেও পরিষ্কার না। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমি নিজেও অবাক! ছবিটি নিয়ে কনফিউশনে আছি।
দীর্ঘ ক্যারিয়ার ঘাঁটলে দেখা যায়, ভিন্ন লুকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করেছেন। চরিত্রে এক্সপেরিমেন্ট কতটা উপভোগ করেন?
আই লাভ দিজ চ্যালেঞ্জ! ক্যারিয়ারের প্রথম থেকে এ পর্যন্ত কঠিন অনেক চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করে আসছি। নির্মাতা-নাট্যকারদের সহযোগিতা ছাড়া এটা সম্ভবও হতো না। তারা চরিত্র ও গল্প অনুযায়ী আমাকে যেভাবে কাস্ট করেছেন, সেভাবে চরিত্রে এক্সপেরিমেন্ট করতে পেরেছি। আর ভালো কিছু সম্মিলিতভাবেই হয়। দর্শক আমার ‘মহামায়া’, ‘অক্ষয় কোম্পানির জুতো’সহ বেশিরভাগ নাটক দেখলে সহজেই বুঝতে পারবেন। এভাবেই আস্তে আস্তে তৈরি হয়েছি। আমি চরিত্রে বাঁচি। আমার হাজার হাজার চরিত্রে হাজার হাজার জীবন। এখন তো সবই কাছাকাছি গল্প ও চরিত্র নিয়ে নাটক হচ্ছে। কিন্তু আমি এখনো ভিন্ন গল্প-চরিত্রে অভিনয় করে যাচ্ছি।
বইমেলায় আপনার সহশিল্পীদের বই বের হচ্ছে। আপনার লেখা বই বের হবে কবে?
আমার এত গুণ নেই... হাহাহা! সহশিল্পীদের অনেক গুণ রয়েছে। যাদের লেখা বই বইমেলায় আসছে তাদের জন্য শুভকামনা রইল। আমার কাছে পৃথিবীর কঠিন কাজ হলো লেখা। আমি লিখি, তবে একান্ত নিজের জন্য। প্রবন্ধ, ডায়েরি লিখিÑ নিজের আত্মার খোরাক এগুলো। ছাপানোর মতো করে প্লান কখনো করিনি। তবে লেখালেখিতে সুমন আনোয়ার অনেক উৎসাহ দেয়। সময় তো প্রতিনিয়ত বাঁচার শক্তি দেয়।
একুশে ফেব্রুয়ারির জন্য কোনো কাজ করছেন?
সুমন আনোয়ারের ‘নিখোঁজ হওয়া ভাষা সৈনিক’ করেছি। আলাদা গল্প, আলাদা অভিনয় যেটি রেগুলার রকমের নয়। গল্প, চরিত্র, অভিনয় সেই সময়কে ধরে করা। আমি সত্যিই অন্যরকম গল্পে কাজ করতে পছন্দ করি রেগুলার গল্পের বাইরে। সে হিসেবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে নাটকে কাজ করেছেন...
এটি সকাল আহমেদের নির্মাণে ‘বিসিএস বক্কার’-এর সিক্যুয়াল। নাম ‘বক্কার এখন ব্যাংকার’। তবে পূর্বেও চঞ্চল ভাইয়ের সঙ্গে বেশ কয়েকটি কাজ করেছি। ‘সরি বল’ করেছি। আগে আবু হায়াত মাহমুদের ‘ভাঙন’ করেছিলাম। তিনি একজন গুড পারফর্মার। সহশিল্পী হিসেবে চমৎকার!
সংসার জীবন কেমন চলছে?
এই বিষয়টি নিয়ে আমি মোটেও এক্সাইটেড না... হাহাহা। সামাজিক চাহিদায় বিয়ে করতে হয়, তাই করেছি। তবে চলছে ভালোই।