শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

শোবিজের সিঙ্গেল মাদার...

শোবিজের সিঙ্গেল মাদার...

শোবিজ অঙ্গনের অনেক তারকা মা একা একাই তার সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ার সংগ্রামের স্বপ্ন বুনছেন। সামাজিক, পারিবারিক সংগ্রামের ভিতর দিয়ে এসব ‘সিঙ্গেল মাদার’ অসীম মাতৃত্বকে করছেন আরও গর্বিত। তাদের কেউ বিধবা, আবার কেউ ডিভোর্সি। তবু সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের  জন্য একাই হয়ে উঠছেন সন্তানের বাবা-মা। শোবিজের এমন কিছু গর্বিত সিঙ্গেল মাদার নিয়ে প্রতিবেদন সাজিয়েছেন- পান্থ আফজাল

 

অপু বিশ্বাস-আবরাম খান জয়

ঢালিউড কুইন অপু বিশ্বাস শীর্ষনায়ক শাকিব খানের সঙ্গে রোমান্টিক ছবিতে অভিনয় করতে করতে একসময় প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। এরপর সারাজীবন ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে কাটাতে ১০ বছর আগে গোপনে বিয়ে করেছিলেন দুজনে। কিন্তু বেশিদিন এক ছাদের নিচে বসবাস হলো না তাদের; পরিণতি ডিভোর্স। তবে এই দুজনের ভালোবাসার নিদর্শন একমাত্র সন্তান আবরাম খান জয়। সংসার সমাপ্তির পরও অপুর জীবনে আলোকিত করে রেখেছে জয়। তাকে নিয়েই এখন মূলত শাকিবহীন থাকছেন অপু বিশ্বাস। তবে আলাদা থাকলেও ছেলের বেলায় তারা মাঝে মাঝে এক হন। ১২ নভেম্বর রাজধানীর বারিধারায় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে (এআইএসডি) জয়কে ভর্তি করান তারা। ভর্তির জন্য ফরমও পূরণ করেন বাবা শাকিব ও মা অপু বিশ্বাস। তবুও দিনশেষে, অপু আর জয়-দুইয়ে মিলে সংসার।

 

আজমেরী হক বাঁধন-মিশেল আমানী সায়রা

‘আমি স্বতঃস্ফূর্ত, স্বতন্ত্র একজন নারী, একজন সিঙ্গেল মাদার, একটা সুন্দরী কন্যার মা এবং ৩৬ বছর বয়সী এই আমি বাংলাদেশের একজন দায়িত্বশীল নাগরিক। আর হ্যাঁ, আমি গর্ব করে বলতে পারি, আমি তালাকপ্রাপ্ত একজন মেয়ে। আমার জীবন এবং শরীরেও ত্রুটি রয়েছে।’ সম্প্রতি সাইবার বুলিং নিয়ে ফেসবুকে এই স্ট্যাটাসটি লিখেছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। ২০১০ সালে বিয়ে করেছিলেন এই লাক্স সুন্দরী। বিয়ের চার বছরের মাথায় সংসারের ইতি টানেন তিনি নিজেই। এরপর স্বামীর ঘর ছেড়ে বাবার বাসায় ওঠেন। এখন মেয়ে মিশেল আমানী সায়রাকে নিয়েই তার পৃথিবী। মেয়ে সায়রা পড়াশোনা করছে সানবিমস স্কুলে। মেয়েকে নিয়ে বাঁধন বলেন, ‘আমিই ওর বাবা আর আমিই ওর মা। আমার পরিচয়েই ও বড় হবে। ও অনেকটা বড় হয়েছে এখন। ওকে একটু কম সময় দিলেও হয়। আর আমার মা-বাবাই ওর দেখভাল করে। আমার শুটিং না থাকলে পুরো সময়টা ওকেই দিই। আমাদের মা মেয়ের ভীষণ বন্ধুত্ব। ও আমার গার্জিয়ান। মন খারাপ হলে গলা ধরে সে আমাকে বুঝায়।’

 

সারিকা-শাহরিশ আন্নাহ

জনপ্রিয় মডেল সারিকার ২০১৬ এর নভেম্বরে স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়। ২০১৪ সালের আগস্টে ব্যবসায়ী মাহিম করিমের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সারিকার। বিয়ের এক বছরের মাথায় সারিকার কোলে আসে কন্যাসন্তান শাহরিশ আন্নাহ। ডিভোর্সের পর সন্তানকে নিয়েই পৃথিবী সাজিয়েছেন সারিকা। করছেন অভিনয়। মেয়েকে যথেষ্ট সময়ও দিচ্ছেন। মাঝে মেয়ের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে মিডিয়া থেকে ছিলেন দূরে। তবে মেয়ে বড় হয়ে যাওয়ায় আবারও সরব হয়েছেন নাটক-টেলিফিল্মে। শুটিং শেষ করে বাসায় সন্তানকে সময় দেন।

 

শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি-ওয়ারিশা

২০০৬ সালে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। প্রেমিক থেকে স্বামী হয়েছিলেন অভিনেতা হিল্লোল। কিন্তু তাদের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ছিল মাত্র পাঁচ বছর। এরপর বিভিন্ন কারণে তাদের সংসার ভেঙে যায় ২০১১ সালে। হিল্লোল এরপর গাঁটছড়া বাঁধেন নওশীনের সঙ্গে। এদিকে হিল্লোল-তিন্নির ঘর আলোকিত করে এসেছিল কন্যাসন্তান ওয়ারিশা।এখন মেয়ে ওয়ারিশাকে নিয়েই নতুন সংগ্রামে প্রতিনিয়ত ছুটে চলছেন তিন্নি। মাঝে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন তিন্নি। সর্বশেষ জানা গেছে, তিনি এখন মেয়েকে নিয়ে প্রবাসী হয়েছেন। তিন্নি ও তার মেয়ে ওয়ারিশা বর্তমানে কানাডার মন্ট্রিলে বসবাস করছেন।

 

সোহানা সাবা-স্বরবর্ণ

অভিনেত্রী সোহানা সাবার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল নির্মাতা মুরাদ পারভেজের। এটি ছিল প্রেমের বিয়ে। তবে সেই বিয়ে বেশিদিন টেকেনি। ছেলে স্বরবর্ণের জন্মের ১৭ মাস পরই তারা আলাদা হয়ে যান। এখন ছেলে মায়ের সঙ্গেই থাকে। শুটিংসহ বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণের সঙ্গী এখন তার ছেলে স্বরবর্ণ। তবে সাবার সন্তান পালনের ক্ষেত্রে তার মায়ের অবদানই বেশি। যখন শুটিংয়ে ব্যস্ত থাকেন তখন নানীর সঙ্গে সময় পার করে স্বরবর্ণ। গর্বিত ‘সিঙ্গেল মাদার’ হিসেবে সাবা ভালোই সময় কাটাচ্ছেন ছেলে স্বরবর্ণকে নিয়ে।

 

ইপসিতা শবনম শ্রাবন্তী-রাবিয়াহ আলম ও আরিশা আলম

শ্রাবন্তী অসংখ্য বিজ্ঞাপন ও নাটকে অভিনয় করেছেন। হেনোলাক্সের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আজও তিনি সবার কাছে পরিচিত। বড় মেয়ে রাবিয়াহ আলম ও ছোট মেয়ে আরিশা আলমকে নিয়ে এখন বসবাস করছেন যুক্তরাষ্ট্রে। ২০১৮ সালের ৭ মে তাকে তালাকের নোটিস পাঠান তার স্বামী মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। শ্রাবন্তী দীর্ঘদিন যাবৎ যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। সেখানে থাকতেই স্বামীর পাঠানো তালাকের নোটিসের খবর

পান। এরপর দুই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন। তবে, সন্তানদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ভালোই কাটছে শ্রাবন্তীর।

 

নোভা ফিরোজ-রাফাজ রায়হান

২০০৫ সালে ‘প্রাণ ডালে’র একটি বিজ্ঞাপনচিত্রের মাধ্যমে মিডিয়ায় অভিষেক ঘটে নোভার। বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল, উপস্থাপনা ও অভিনয়ের মাধ্যমে খুব অল্প সময়েই দর্শকহৃদয়ে স্থান করে নেন নোভা। মাঝখানে তিনি অনেকটা আড়ালে চলে গিয়েছিলেন। এরপর ভালোবেসে নাট্যনির্মাতা রায়হান খানকে ১১-১১-১১-তে বিয়ে করেন নোভা।

২০১৩ সালের ২৮ জুলাই পুত্র সন্তান রাফাজ রায়হানের মা হন। কিছুদিন সংসার করার পর বিবাহবিচ্ছেদ হয় নোভা-রায়হানের। পারস্পরিক সম্মতিতে নোভা ও রায়হানের বিয়ে বিচ্ছেদ হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর