রবিবার, ২৯ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনার ব্যাপারে সবাইকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে

করোনার ব্যাপারে সবাইকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে

ঢালিউডের মিষ্টি মেয়ে খ্যাত জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও চলচ্চিত্রকার সারাহ বেগম কবরী। সম্প্রতি তিনি তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেছেন। চলচ্চিত্র ও করোনা পরিস্থিতিসহ নানা বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। তার বলা কথা তুলে  ধরেছেন-  আলাউদ্দীন মাজিদ

 

কেমন আছেন?

বিশ্বজুড়ে যে করোনা মহামারী চলছে তাতে শুধু আমি নই, কারোই ভালো থাকার উপায় নেই। বিশ্বব্যাপী যে হারে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে ও মারা যাচ্ছে তাতে আমরা সবাই উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত। এই দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে আমাদের অবিরাম প্রার্থনা করতে হবে।

 

অনেকেই এখনো করোনা নিয়ে সচেতন নয়, এ বিষয়ে কী বলবেন?

আসলে হঠাৎ করে এমন একটি দুর্যোগ আসায় মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থা আগে কখনো কেউ দেখেনি, কারণ এ ধরনের মহামারী শত বছরে একবার আসে। তাই মানুষ এখন বিভ্রান্ত, কী করবে বুঝে উঠতে পারছে না। নিয়ম মানলে কি রোগ থেকে রেহাই পাবে? এ প্রশ্নেও তারা কনফিউজড। তাই যারা সচেতন নয় তাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই, তাদের সঠিকভাবে বোঝাতে হবে।

 

জনগণকে সচেতন করতে আপনার পরামর্শ কী?

সবার কাছে আমার অনুরোধ, অন্তত নিজের সন্তান, পরিবার ও আশপাশের মানুষের কথা চিন্তা করে সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। সরকার ও চিকিৎসকের দেওয়া পরামর্শ মেনে চলতে হবে। মনে রাখতে হবে এটি একটি মরণঘাতী রোগ। এটি এমন নয় যে, একটি ট্যাবলেট খেয়ে ফেললে ভালো হওয়া যাবে। আমাদের দেশে এটি যদি উদ্বেগজনকভাবে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে সব শেষ হয়ে যাবে। তাই সবাইকে বিষয়টি সিরিয়াসভাবে গ্রহণ করে নিয়ম মেনে চলতে হবে। হাত ধোয়া একটি হাইজেনিক বিষয়, এটি সবসময় করা উচিত। যেমন আমরা দিনে পাঁচবার ওজু করি, এতে একদিকে যেমন পাক পবিত্র থাকা যায় তেমনি নানা রোগজীবাণু থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়। তাই সবার কাছে অনুরোধ, আপনারা নিয়ম-কানুন মেনে চলুন, বাসায় থাকুন এবং এই দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করুন।

 

চলচ্চিত্রের অবস্থা এমনিতেই মন্দ, এর ওপর করোনার কারণে এখন স্থবির, কী আশঙ্কা করছেন?

আসলে শুধু চলচ্চিত্র নয়, সবদিক দিয়েই সবাই বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছে। এখন তো বাঁচা-মরার প্রশ্ন এসে দাঁড়িয়েছে। তাই চলচ্চিত্র বা অন্য কোনো বিষয়ে লাভ-ক্ষতির হিসাব করার মানসিকতা কারও নেই। আগে বাঁচতে হবে, বেঁচে থাকলে পরে অন্যসব চিন্তা করা যাবে। হ্যাঁ, এ কথা ঠিক যে, এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে চলচ্চিত্রের দুর্দিন চলছে। তার উপরে করোনার কারণে চলচ্চিত্রশিল্প শাটডাউন হয়ে থাকার অর্থ হলো মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। শিল্পটি নিয়ে উদ্বেগে আছি।

 

এই দুর্যোগ কীভাবে দেখছেন?

এখন তো বিশ্বজুড়ে নাজুক অবস্থা চলছে। এ অবস্থা থেকে ধনী-গরিব কেউ রক্ষা পাচ্ছে না। এটি একটি ভয়াবহ অবস্থা। কোনো দেশে যুদ্ধ হলে ভয়াবহ ও অপূরণীয় ক্ষতি হয়। এই ক্ষতি কীভাবে পূরণ হবে, কতটা সময় লাগবে কেউ জানে না। তাই সচেতনতার বিকল্প নেই।

 

এই দুর্যোগে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ বেশি অসহায় হয়ে পড়েছে, তাদের জন্য করণীয় কী?

তাদের পাশে অবশ্যই সামর্থ্যবানদের এসে দাঁড়াতে হবে। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। যারা এখন ঘরে বন্দী হয়ে আছে তাদের জন্য কিছু করা উচিত। এক্ষেত্রে আমি বলব, দেশে এমন কিছু মানুষ আছে যাদের কাছে আটকে আছে প্রচুর কালো টাকা। তারা এ দুর্যোগ মুহূর্তে দরিদ্র মানুষের সেই টাকা দিয়ে সাহায্য করতে পারে। এতে তারা নিজেরাও পাপমুক্ত হলো অসহায়দেরও উপকার হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো ‘মানুষ মানুষের জন্য’, তাই সবাইকে সবার পাশে এসে দাঁড়াতে হবে। সৃষ্টিকর্তা আমাদের যে পরীক্ষায় ফেলেছেন তা থেকে উত্তীর্ণের জন্য তার কাছে মনেপ্রাণে প্রার্থনা করতে হবে।

 

অসহায় মানুষের জন্য আপনার ব্যক্তিগত উদ্যোগ কী?

আমার মতো সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগতভাবে কিছু করা খুবই ডিফিকাল্ট। যা করতে হয় সমষ্টিগতভাবেই করতে হবে। তাহলেই অসহায় মানুষকে প্রকৃত সহযোগিতা করা হবে। সবাই মিলেমিশে সবার কল্যাণে এগিয়ে আসতে চাই।

 

এবার আপনার নির্মাণাধীন চলচ্চিত্র ‘এই তুমি সেই তুমি’র বিষয়ে কিছু শুনতে চাই।

দীর্ঘদিন পর আরেকটি চলচ্চিত্রের নির্মাণকাজ শুরু করেছিলাম। একটি নতুন চলচ্চিত্রের কাজ শুরু হওয়া মানে চলচ্চিত্র নির্মাণ হ্রাস থেকে উত্তরণসহ অনেক মানুষের রুটি রুজির ব্যবস্থা হওয়া। কিন্তু করোনা দুর্যোগের কারণে এখন পুরো চলচ্চিত্রজগৎ বন্ধ হয়ে আছে, আমার ছবিটিও তাই। ১০ দিন শুটিং করে কাজ বন্ধ করে দিতে হয়েছে। কখন এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাব জানি না। সবাই কীভাবে সুস্থভাবে বেঁচে থাকব তাও জানি না। সব কিছু নিয়ে বড় দুশ্চিন্তায় আছি।

সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।

সর্বশেষ খবর