মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ → আসাদুজ্জামান নূর

জানতে ইচ্ছা করে এ প্রজন্মের দর্শকের নাটকটি কেমন লাগছে

জানতে ইচ্ছা করে এ প্রজন্মের দর্শকের নাটকটি কেমন লাগছে

আসাদুজ্জামান নূর একই সঙ্গে থিয়েটার, টিভি নাটক, চলচ্চিত্র অঙ্গনের জনপ্রিয় মুখ। রাজনৈতিক কর্মী হিসেবেও তিনি প্রতিষ্ঠিত। নব্বই দশকে হুমায়ূন আহমেদের ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকে বাকের ভাই চরিত্রে অভিনয় করে পান ব্যাপক জনপ্রিয়তা। সম্প্রতি নাটকটি বিটিভিতে পুনঃপ্রচার হচ্ছে। পাশাপাশি চলছে তার ভরাট কণ্ঠে আবৃত্তিচর্চা। সাম্প্রতিক কাজ ও সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন -পান্থ আফজাল

 

করোনাময় এই সময়ে কি বাসায় নিজেকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন?

আমি বাসায় থাকি, আবার বাইরেও যাই। দুই-একদিন তো বাইরে গেলাম। সাংস্কৃতিক জোটের ত্রাণ দিলাম দক্ষিণখানে, যাত্রাবাড়ীতে। এছাড়াও কয়েকটা কবিতা পড়েছি। রেকর্ড হয়েছে। আমার বড় কাজ হলো, আমার এলাকা নীলফামারীতে ত্রাণ বিতরণ। আমি সংসদ সদস্য হিসেবে এই ত্রাণ তৎপরতা চালাচ্ছি।

 

নব্বই দশকের সাড়া জাগানো

‘কোথাও কেউ নেই’ ধারাবাহিকটি বিটিভিতে পুনঃপ্রচার শুরু হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কিছু বলুন।

সে সময় এই ধারাবাহিকটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। তবে এখন আমার খুবই জানতে ইচ্ছা করে, এ প্রজন্মের যারা নাটকটি দেখছে তাদের কাছে কেমন লাগছে! তাদের কাছে নাটকটির আবেদন কেমন। কারণ তখনকার সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নাটকটি বাস্তবসম্মত ছিল। আমি সবসময় বলি এই নাটকে, একদিকে ছিল হুমায়ূনের অসাধারণ লেখার ক্ষমতা, অন্যদিকে ছিল আমাদের সবার প্রচেষ্টা অর্থাৎ টিমওয়ার্ক।

 

‘নিমফুল’ নাটকে ‘মনা ডাকাত’ চরিত্রটি দর্শক দারুণ গ্রহণ করেছিল।

নাটকটিতে চোরের ক্যারেক্টার করেছিলাম। চুরির মিথ্যা অপবাদে মনা ডাকাতের চোখ তুলে ফেলার আয়োজন হয়। তার সঙ্গে একমাত্র ছোট ছেলেকেও পিঠমোড়া করে বেঁধে রাখা হয়। আমি আসলে চেষ্টা করেছি বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করার। শুধু রোমান্টিক চরিত্রের মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখিনি। আমি সব ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছি।

পুরনো নাট্যকারের স্ক্রিপ্টই মঞ্চে বার বার আসছে। নতুন নাট্যকারের অভাব বোধ করেন কী?

এখন তো ভালো নাট্যকারের অভাব। এই অভাবটা একই সঙ্গে মঞ্চে এবং টিভিতে। নতুন নাট্যকার সেভাবে তৈরি হচ্ছে না। হুমায়ূন আহমেদ টেলিভিশনের জন্য দারুণসব নাটক লিখেছেন। দর্শক মুগ্ধ হয়ে সংলাপ শুনতেন। মুখস্থও করে ফেলতেন সেসব সংলাপ।

 

এখন কী তাহলে ভালো নাটক হচ্ছে না?

হচ্ছে, তবে সংখ্যায় অনেক কম। তেমন করে তো ভালো নাটক হচ্ছে না। ভালো নির্মাতারও সংকট রয়েছে।

 

ওই সময়ের নাটকের সঙ্গে যদি বর্তমানের পার্থক্য করতে চান...

আমাদের সময় নাটক ছিল ভিন্ন স্বাদের। শুটিং শেষ করেছি সুন্দরভাবে। বিটিভিতে সন্ধ্যার পর সবাই মিলে নাটকের মহড়া করেছি; সঙ্গে জম্পেস আড্ডা তো চলতই। এখন তো সবাই যান্ত্রিক হয়ে গেছে। টিভির জন্য নাটক রেকর্ডিংয়ের আগে কোনো মহড়া হয় না। নাটকে নেই কোনো অ্যাকশন-রিয়েকশন!

 

করোনার জন্য দেশের প্রায় সব জায়গা লকডাউন হচ্ছে। এই কঠিন সময়ে মানুষের উদ্দেশে বার্তা কি?

নতুন মেসেজ তো কিছুই দেওয়ার নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মী সবাই যে বার্তাটি দিচ্ছেন সেটাই আমি বলব-  ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন আর বার বার হাত হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করুন। তবে এখনো মানুষের মাঝে শৃঙ্খলার অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

এটা আমাদের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ।

নিয়ম-শৃঙ্খলার প্রতি মনোযোগ সবাইকে দিতে হবে। বুঝতে পারি, ১৭ কোটির এই দেশের মানুষ তো আর সমানভাবে সচেতন বা শিক্ষিত নয়। ফলে তাদের বোঝানোটাও কঠিন হয়ে পড়ে। আবার জীবিকার তাগিদেও অনেকে বাসা থেকে বের হতে বাধ্য হচ্ছে। তবে যারা শুধু ঘোরাফেরা, গল্পগুজব করতে বাইরে বের হচ্ছেন, সেটি নিয়ে আমার ঘোর আপত্তি রয়েছে।

আর যারা জীবিকার প্রয়োজনে বাইরে বের হচ্ছেন, তাদের সর্বাধিক সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। রাষ্ট্রের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।

সবাইকে সবার পাশে দাঁড়ানো উচিত।

সর্বশেষ খবর