বুধবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ → মোশাররফ করিম

ঘরের মধ্যে থেকে দেশকে সহযোগিতা করছি

ঘরের মধ্যে থেকে দেশকে সহযোগিতা করছি

শোবিজের শীর্ষ অভিনেতা মোশাররফ করিম। একই সঙ্গে থিয়েটার, টিভি নাটক এবং চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি দর্শকনন্দিত। সম্প্রতি ব্রাত্য বসুর চলচ্চিত্রে কাজ শেষ করেছেন। আর করোনাময় এ সময় তিনিও সবার মতো রয়েছেন হোম কোয়ারেন্টাইনে। এই তারকার সাম্প্রতিক অবস্থা ও সমসাময়িক কাজ নিয়ে তার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

বাসায় আছেন কতদিন হলো?

এই তো, ১৬ তারিখ ইন্ডিয়া থেকে ফিরলাম। রাতে ফিরেছি। তারপর থেকে তো বাসায়ই আছি।

 

সবার সঙ্গে এই দীর্ঘ সময় কীভাবে কাটাচ্ছেন?

আমরা তো সবাই মিলে একসঙ্গে বাসায় আছি। সময় কাটছে বই পড়ে, সিনেমা দেখে ও নামাজ পড়ে। একটু ঘরদোর পরিষ্কার রাখছি। ঘরে ব্লিচিং পাউডারের পানি ছিটাচ্ছি। এছাড়াও আরও একটি জিনিস করি, ফ্যামিলির সবাই মিলে একসঙ্গে এক্সারসাইজ করি, প্রণায়াম করি। এভাবেই তো সময় কেটে যাচ্ছে।

 

করোনা নিয়ে চিন্তিত কেমন?

এই ভাইরাস কতটা ভয়ঙ্কর হলে একসঙ্গে পুরো বিশ্বকে অচল করে দিতে পারে! বিষয়টি সত্যিই উদ্বেগের। আমাদের  দেশে ইতিমধ্যেই ব্যাপক হারে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। কবে এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাব জানা নেই।

 

আপনি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন বলে জেনেছি। কেমন কি করছেন?

এটা তো তেমন করে বলার কিছুই নেই! প্রতিটি সচ্ছল মানুষেরই দায়িত্ব এখন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। বিশেষ করে তাদের কাছের মানুষ, যারা যেমন আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু, সহকর্মীদের বিপদে হাত বাড়িয়ে দেওয়া। আমার সবসময় করার চেষ্টা থাকে। এটা সবারই থাকা উচিত। কম হোক বেশি হোক বা যাই হোক করা কর্তব্য। সবমিলিয়ে তো আমরাই।

 

মোশাররফ করিমের ত্রাণ দেশব্যাপী  পৌঁছে দিচ্ছেন ভক্তরা। কীভাবে সমন্বয় করছেন এসব?

এটি সমন্বয় করছে আমার ফ্যান ক্লাবের কয়েকজন। ত্রাণ বিলি করা হচ্ছে দেশব্যাপী ছড়িয়ে থাকা আমার ভক্তদের মাধ্যমেই। তাদের নিজ এলাকায় যাদের আসলেই সহায়তার প্রয়োজন তাদের তালিকা করা হয়েছে।  সে তালিকা মোতাবেক ঢাকা থেকে টাকা পাঠিয়ে দিয়েছি। ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে এ কার্যক্রম। পর্যায়ক্রমে আরও অনেক অঞ্চলেই দেওয়া হবে এই সহায়তা।

 

শোবিজের অনেক তারকাই মানুষকে করোনাসচেতন করতে উদ্যোগী হচ্ছেন। আপনি কীভাবে সচেতন করছেন?

আমি সবাইকে করোনাসচেতন করতে এরমধ্যে একবার লাইভে গিয়েছিলাম। আর বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ভিডিও করেছিলাম ঘরের মধ্যেই। যেগুলো মন্ত্রণালয় থেকে চেয়েছিল। সেগুলো দিয়েও দিয়েছি। আমার পেজ থেকে আগে লাইভে গিয়েছিলাম, আবারও যাব। তবে ব্যাসিক কথা কিন্তু একটাই, ‘ঘরে থাক’। আমি প্রায় সময়ই বলে থাকি, মানুষের বড় শত্রু হলো সে নিজে; তার অভ্যাস। সে যদি চোখ বন্ধ করে বলে, তার কি কি সমস্যা আছে। তাহলে সে দেখবে, তার সমস্যাগুলোই তার শত্রু। তার নিজের অভ্যাসগুলোর সমস্যা। যেটা আমার নিজেরই আছে, সবারই আছে। সেটা কিন্তু এখন এই সংকটময় সময়ে এসে বোঝা যাচ্ছে। সাধারণ ব্যাপার হলো, ঘরে থাকবা। ঘরে থাকলে ছড়াবে না। যতটুকু ছড়িয়েছে, সচেতনতা থাকলে এমন হতো না। মানলেই সবাই ভালো থাকত। প্রয়োজনের তাগিদে মানতে পারছে না সেটা ভিন্ন বিষয়। কিন্তু অপ্রয়োজনে, বিনা কারণে ঘর থেকে বের হওয়া, আড্ডা দেওয়া-ঠিক হচ্ছে না। এই যে আমি একমাস ধরে ঘরের মধ্যে আছি, আমি তো একপ্রকার দেশকে সহযোগিতা করছি। এটা একপ্রকার পরোপকারও। এটা করতে তো টাকা লাগে না। তো এটি কেন আমরা করব না?

 

করোনা আতঙ্কে এদেশের পুরো শোবিজ অঙ্গন স্থবির...

একদম সবই! নাটক-চলচ্চিত্র-থিয়েটারসহ সব  সেক্টরই একদম স্থবির।

 

ভারতে গিয়েছিলেন ব্রাত্য বসুর ছবি করতে। কাজটি কি শেষ করে এসেছিলেন?

কলকাতার সেটা তো শেষ হয়ে গেছে, শুটিং শেষ আর কি! ডাবিংয়ে হয়তো পরে যেতে হবে। এসব বিপদ-আপদ গেলে।

 

 যেসব নাটকের সিডিউল দেওয়া ছিল সেগুলোর কি অবস্থা হবে?

আমার কাছে মনে হচ্ছে না যে, এত সহজে আর কোনোভাবেই কাজ করার পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। এখন কোনো উপায় নেই কাজ করার। সেক্ষেত্রে ঈদ বা উৎসবের জন্য আগে যেগুলো কাজ করে রেখেছে, সেগুলোই দেখানো হবে।

সর্বশেষ খবর