বুধবার, ৬ মে, ২০২০ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ → সারা যাকের

কষ্ট লাগছে, কাছের মানুষগুলো চলে যাচ্ছে

কষ্ট লাগছে, কাছের মানুষগুলো চলে যাচ্ছে

মঞ্চ, ছোট পর্দা ও চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব সারা যাকের। সাংস্কৃতিক বিনির্মাণে যার রয়েছে অসামান্য ভূমিকা। তিনি একাধারে বাংলাদেশের একজন সুঅভিনেত্রী, উদ্যোক্তা, নির্দেশক ও সমাজকর্মী। নাট্যকলায় বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকে ভূষিত করে। সিসিম ওয়ার্কশপ নিউইয়র্ক কর্তৃক নির্মিত সিসিমপুরের সঙ্গে যুক্ত তিনি। অন্য সবার মতো তিনিও এই সময় করোনাবন্দী। ফলে ঘরেই সময় কাটছে তার। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

কেমন আছেন?

আছি একরকম!

 

আপনার কথার মধ্যে কিছুটা কষ্টের রেশ রয়েছে। বিষয়টি একটু খুলে বলা যায়?

আসলে কাছের মানুষগুলো চলে যাচ্ছে, খুবই কষ্ট লাগছে। এগুলো মেনে নেওয়া যায় না।

 

হুম, প্রিয়জনদের হারানো খুবই কষ্টের...

একটার পর একটা খারাপ খবর লেগেই আছে। ঊষা গাঙ্গুলী চলে গেলেন, যিনি আমার বান্ধবীর মতো ছিলেন। আলী যাকেরদের সমসাময়িক। আমার কিছু নিকট আত্মীয়কেও হারালাম এ যাত্রায়।

 

ফেসবুকে ঊষা গাঙ্গুলীর সঙ্গে আপনার কিছু ছবি দেখেছি...

হুম, আমার ফেসবুকে ওর কিছু ছবি আছে। ওর নির্দেশিত একটি নাটকে কাজও করেছিলাম।

 

করোনার সময় নিজেকে সতর্ক রাখছেন কীভাবে?

নিয়ম-কানুনগুলো পালন করার চেষ্টা করছি। কোনো আত্মীয়স্বজনকে বাইরে থেকে আসতে দিই না এ সময়। ওরাও আসে না নিজ থেকেই।

 

বাসায় কে কে রয়েছেন?

আমি, ইরেশ, শ্রিয়া, আলী যাকের আর আমার মা। মায়ের ৮৭ বছর বয়স। ১০ বছর ধরে আমাদের সঙ্গেই আছেন। আর ইরেশ-শ্রিয়া এখন তাদের মতো সময় কাটাচ্ছে। 

 

আলী যাকের (স্যার) তো অনেকদিন ধরেই অসুস্থ। এখন তার অবস্থা কেমন?

আলী যাকের ঠিক আছে। ট্রিটমেন্টের মধ্যেই আছে।

 

অজস্র মঞ্চ আর টিভি নাটকে তুখোড় অভিনয়ে মাতিয়েছেন। কিন্তু চলচ্চিত্রে উপস্থিতি নেই বললেই চলে। হাতেগোনা মাত্র চারটি বিকল্প ধারার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। কিন্তু কেন?

আমাকে তো কেউ ডাকেনি, ডাকলে অবশ্যই অভিনয় করতাম। কোনো মাধ্যমেই কাজের প্রতি আমার কোনো অনীহা ছিল না। তবে মঞ্চ, টিভিনাটক, সংসার এবং অন্যান্য কাজের ব্যস্ততায় এমনিতেই হাঁপিয়ে উঠতাম। তার ওপর চলচ্চিত্র একটি বিশাল ব্যাপার!

 

হুমায়ূন আহমেদের ‘অয়োময়’-এ ছোট মীর্জার বড় বউ চরিত্রে অভিনয়সহ তার লেখা ও নির্দেশনায় অনেক নাটকে অভিনয় করে পেয়েছিলেন সুখ্যাতি। তার শূন্যতা অনুভব করেন?

হুমায়ূন ভাইয়ের বিকল্প আজও তৈরি হয়নি। তখন যিনি যে নাটকই বানিয়েছেন তার মধ্যে অনেক মেসেজ থাকত। তিনি গল্প এত সুন্দর নির্মাণ করতেন যে, মেসেজনির্ভর নাটক সবাই গোগ্রাসে গিলত। তিনি নিজের ইচ্ছায় যে নাটকগুলো লিখতেন সেগুলো ছিল অসাধারণ! তিনি নাট্যকার হিসেবে ছিলেন অনন্য। তার শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।

 

এখনকার নাটকের মান নিয়ে আপনার কি বক্তব্য?

এখন বেশির ভাগ টিভিনাটকই দেখার মতো নয়। দুই তিনজনকে নিয়ে নাটক হয়ে যাচ্ছে। তবে কিছু ভালো নাটকও হচ্ছে। ১০টার মধ্যে ২টা তো ভালো হচ্ছে।

 

কার সঙ্গে মঞ্চ ভাগাভাগি করতে বেশি ভালো লাগে?

আবুল হায়াত ভাই। অভিনয়ও বেশি করেছি তার সঙ্গে।

 

আপনার চরিত্রগুলো যদি এখনকার কাউকে দিয়ে অভিনয় করাতে চান, তবে কাকে বেছে নেবেন?

নাটক ধরে বলতে হবে। ‘সৎ মানুষের খোঁজে’ হলে শ্রিয়া (সর্বজয়া), ‘বাকি ইতিহাস’ হলে অপি (করিম) ভালো করবে।

সর্বশেষ খবর