শুক্রবার, ৩১ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

বাংলাদেশের সিনেমা শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে কারও কোনো উদ্যোগ বা পরিকল্পনা নেই

শোবিজ প্রতিবেদক

বাংলাদেশের সিনেমা শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে কারও  কোনো উদ্যোগ বা পরিকল্পনা নেই

ঈদের আনন্দকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলতে চ্যানেল আই ৭ দিনব্যাপী দেখাবে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত ৭টি চলচ্চিত্র। এর মধ্যে পাঁচটি ছবিই মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর। সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘টেলিভিশন’, ‘পিঁপড়াবিদ্যা’, ‘ব্যাচেলর’, ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’। ছবি ও সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে কথা হয় মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সঙ্গে।

 

♦ একই টিভিতে আপনার পাঁচটি ছবি প্রচার হবে। এ প্রসঙ্গে কিছু বলুন।

♦♦ এ থেকে প্রথম যে কথাটা মনে হচ্ছে সেটা হলো কালে কালে বেলা অনেক হলো। হা হা হা। আমি যেহেতু পেছনে কম তাকাই, ভুলেই যাই আগের কাজগুলোর কথা। সব সময় চোখ সামনে রাখার সুবিধা হলো নিজেকে আনকোরা মনে হয়। মনে হয় সামনের কাজটাই আমার প্রথম এবং হয়তো শেষ কাজও। তাই মনপ্রাণ ঢেলে কাজটা করতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো আমরা তো একটা পথ পাড়ি দিয়ে এসেছি। চ্যানেল আই আমার পাঁচটা ছবি একই ঈদে প্রচার করার মাধ্যমে এটা আবার খেয়াল করিয়ে দিল। তাদের ধন্যবাদ, এই লকডাউনের দিনগুলোতে পেছনের সময়টা ফিরিয়ে আনার জন্য। এতে আমার জন্য এবং দর্শকদের জন্যও একবার ফিরে দেখার সুযোগ তৈরি হবে আমরা যে পথটা পাড়ি দিয়ে এসেছি সেটা। আমার অনুরোধ থাকবে ছবিগুলো দেখার সময় যেন কোন সালের ছবি, এটা একটু বিবেচনায় রাখা হয়। এবং সেসব সালে কি ধরনের ছবি হতো, ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা কি ছিল, দর্শকদের অবস্থা কি ছিল- এগুলো মাথায় নিয়ে দেখলে আমাদের জার্নিটা ভালো বোঝা যেতে পারে।

 

♦ বড় পর্দার সিনেমা ছোট পর্দায় দেখে দর্শকরা কি একই অনুভূতি পাবে বলে আপনি মনে করেন?

♦♦ হল অন্ধকার করে নিজেকে বাইরের জগৎ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে ছবিটার জগতে ডুব দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেয় থিয়েটার। ফলে সেই অভিজ্ঞতা সব সময়ই সেরা। কিন্তু বাস্তবতা দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে। এখন ছোট পর্দারও ছোট ভাই এসে গেছে, যেখানে বড় পর্দার জন্য বানানো ছবি সরাসরি মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। বলছি ওয়েব প্লাটফরমের কথা, যার একটা বড় অংশ মোবাইলেই কনজিউম করা হয়। সিনেমা দেখার প্লাটফরম এখন বিচিত্র হচ্ছে। এখন আর ওই আফসোস না করে যে প্লাটফরমে যেভাবে রস আস্বাদন করা যায় সেদিকেই বোধহয় নজর দেওয়া ভালো।

 

♦ করোনা-পরবর্তী সময় সিনেমা শিল্প কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে?

♦♦ কোন সিনেমা? কোন দেশের সিনেমা? বাংলাদেশের সিনেমা শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করার জন্য কারও কোনো উদ্যোগ বা পরিকল্পনা বা গরজ আছে বলে আমি মনে করতে পারছি না বলে দুঃখিত। এটা নিয়ে বিস্তারিত কথা বলতে গেলে শুধু বেদনার কথাই বলা হবে। তাই না বলি। যখন তরুণরা নিজেদের মতো করে সিনেমা বানিয়ে একটা পরিচয় দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে, তখন একদল লোক এমন সব উদ্ভট কাজ করছে যে, বাইরে থেকে আমাদের চলচ্চিত্র জগৎটাকে একটা সার্কাস মনে হচ্ছে।

 

♦ আপনি কি মনে করছেন সিনেমা রিলিজ অনলাইননির্ভর হয়ে পড়বে?

♦♦ একটা অংশ তো বটেই! কিন্তু তার মানে এই নয় যে, থিয়েটারে ছবি দেখার অভিজ্ঞতা হারিয়ে যাবে! মাল্টিপ্লেক্সে ছবি দেখা আরও বহুকাল সিনেমা দেখার একটা প্রধান মাধ্যম হয়ে থাকবে! কিন্তু সিংগেল স্ক্রিন নামের যে ব্যাপারটা আছে সেটা হারিয়ে যাবে নিশ্চিত! ফলে যখনই আমি শুনি সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, তখনই আমি বলি, এটা তো যাওয়ারই কথা। কেবল বাংলাদেশ নয়, ভারত, এমনকি নিউইয়র্কের দিকে তাকালেও দেখতে পাবেন সিংগেল স্ক্রিন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সিনেমা হল মালিক ভাইদের আশির দশকের রোমান্টিসিজম থেকে বের হয়ে এসে মাল্টিপ্লেক্সের দিকে এগোতে হবে। পরিবর্তিত অবস্থার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হলে আপনাকেও বদলাতে হবে।

 

♦ নতুন কাজের খবর কি?

♦♦ আপনারা জানেন হয়তো এই মুহূর্তে আমি ব্যস্ত আমার প্রথম ইংরেজি ভাষায় নির্মিত ছবি ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’-এর সম্পাদনা নিয়ে। ছবিটার বেশির ভাগই নিউইয়র্কে শুট করা। এখানে আছেন নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি, তাহসান খান, মেগান মিশেলসহ আরও অনেকে। সম্পাদনা পুরোপুরি শেষ হলে এ আর রহমান মিউজিকের কাজ শুরু করবেন। আশা করি এ বছরের শেষ নাগাদ ছবিটা রেডি করতে পারব।

সর্বশেষ খবর