শিরোনাম
শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনায় কেমন আছেন তারা

করোনায় কেমন আছেন তারা

করোনাভাইরাস একটি আতঙ্কের নাম। এই ভাইরাসে প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছেন শোবিজ অঙ্গনের অনেকেই। অনেকে আবার সুস্থ হয়ে ফিরেছেন স্বাভাবিক জীবনে। তবে নবীন অভিনয়শিল্পীদের থেকে প্রবীণরাই বেশি বিপৎসীমার মধ্যে রয়েছেন। এই দুঃসময়ে কেমন আছেন প্রবীণ গুণী অভিনয়শিল্পীরা? সেই খবর জানাচ্ছেন- পান্থ আফজাল 

 

দিলারা জামান

টিভি নাটকের গুণী অভিনেত্রী দিলারা জামান।  করোনাকে পাশ কাটিয়ে শুটিং হচ্ছে এখন। এই দুঃসময়ে তিনি অভিনয়ের মাঝেই আছেন। তিনি বলেন, ‘আসলে শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধ করে এখনো বেঁচে আছি। কী করব ঘরে বসে? এই একটি কাজই তো শিখেছি। কাজ না করলে কীভাবে বেঁচে থাকব! এখন সিঙ্গেল নাটক করছি না, দুই-তিনটি সিরিয়ালেই নিয়মিত কাজ করছি। ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়াভাই’ ছবিতে কাজ করলাম। বরজানের লেখা ‘সুজুকি’তে আমি, কচি খোন্দকার, আরমান পারভেজ মুরাদ কাজ করেছি। শ্যাম বেনেগালের ‘বঙ্গবন্ধু’ মুম্বাইয়ে শুটিং হবে। ফেব্রুয়ারি অথবা মার্চ মাসে। সেখানে গিয়ে কাজ করব। বরজানের লেখা ফরিদুল হাসানের ‘ফরেন ভিলেজ’ ধারাবাহিকেও কাজ করেছি। তৌকীরের ‘রূপালী জ্যোৎ¯œা’সহ বিটিভির জন্য নির্মিত জাহিদ হাসানের ‘পিছুটান’ নাটকেও কাজ করেছি। এই হলো আমার বর্তমান অবস্থা। তবে ওপরওয়ালা আমাকে যথেষ্ট ভালো রেখেছেন।’

 

শর্মিলী আহমেদ

আরেক গুণী অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদ। করোনায় শর্মিলী আহমেদ তেমন কাজ করছেন না। সম্প্রতি তাঁর পায়ে অপারেশন হয়েছে। চিকিৎসক তাঁকে ২-৩ সপ্তাহ বিশ্রাম নিতে বলেছেন।

আবুল হায়াত

টিভি ও চলচ্চিত্রের সুপরিচিত মুখ আবুল হায়াত। তিনি একাধারে একজন মঞ্চ-টিভি-চলচ্চিত্র অভিনেতা, নির্দেশক ও নাট্যকার। করোনাকালে তিনি খুব বেশি নাটক বা চলচ্চিত্রে কাজ করেননি। তিনি বলেন, ‘আছি, আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহর রহমতে এখনো সুস্থ আছি। আর এই সময় তেমন কাজ করিনি। গত চার মাসে চারটি নাটকে কাজ করেছি। বিশেষ সতর্কতা নিয়ে তৌকীরের সিরিয়ালে কাজ করেছি। এই সপ্তাহে ৭-৮টি নাটকের অফার এসেছে। মানা করে দিয়েছি। এই বয়সে একবার যদি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ঢুকি তাহলে সেখান থেকে সুস্থ হয়ে বের হওয়া মুশকিলই!’

 

আনোয়ারা বেগম

জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনেত্রী এবং নৃত্যশিল্পী আনোয়ারা। করোনা পরিস্থিতিতেও তিনি কিছু কাজ করছেন। সম্প্রতি ফারজানা ছবির সঙ্গে বীরাঙ্গনা রোকেয়ার চরিত্রে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। নাদিয়া আফরিনের রচনা ও পরিচালনায় এটির নাম ‘জননী ও জন্মভূমি’। আগামী ডিসেম্বরে ছোট পর্দায় মুক্তি পাবে। আনোয়ারা জানান, ‘করোনাকালে দীর্ঘদিন কোনো কাজ করিনি। তবে এই সিনেমার চিত্রনাট্য পড়ার পর রোকেয়া চরিত্রটি মনে ধরে। তাই কাজটি করে ফেললাম।’

 

আলী যাকের

বরেণ্য নাট্যব্যক্তিত্ব আলী যাকের। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত। বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন। গত রবিবার থেকে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আলী যাকেরকে। তিনি হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন। তবে তাঁর ছেলে ইরেশ যাকেরের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। ইরেশ বলেন, ‘বাবার ট্রিটমেন্ট চলছে। তাঁর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আর চিকিৎসকরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন। আশা করছি, শিগগিরই তাঁকে বাড়ি নিয়ে যেতে পারব।’

 

ড. ইনামুল হক

জনপ্রিয় অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্দেশক ড. ইনামুল হক। করোনাকালে তিনি নিজ বাসায়ই অবস্থান করছেন। বাসা থেকে বের হচ্ছেন না। তাঁর শারীরিক অবস্থার খবর জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শরীর ভালো আছে। করোনায় বের হই না। বাসায় বসে লিখছি। না লিখে তো থাকতে পারি না! বাসায় বসে তিনটি বইয়ের অনুবাদ একসঙ্গে করেছি। নাম ‘নো এক্সিট’, ‘ম্যান উইদাউট স্যাডো’ ও ‘ফ্লাইস’। আর লাকী তো ঘরে বসে থাকতে পারে না। শিশু একাডেমিতে যেতে হয়। বিশেষ কোনো মিটিং থাকলে যায়। আমাদের দলের জন্য অনলাইন মিটিংয়েও সে অংশ নেয়। আর হৃদি তো শুটিং নিয়ে ব্যস্ত। সরকারি অনুদানের সিনেমা ‘১৯৭১ সেইসব দিন’।’

 

রামেন্দু-ফেরদৌসী মজুমদার

প্রথম থেকেই মনোবল শক্ত ছিল রামেন্দু মজুমদার ও ফেরদৌসী মজুমদার দম্পতির। ২৭ আগস্ট দ্বিতীয়বার করোনা পরীক্ষা করিয়েছেন এই দুই নাট্যজন। রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘করোনার সময় সেরকম কিছু ভাবিনি। একেবারে ঘাবড়াইনি। এখন পুরোপুরি সুস্থ আছি।’ ১৮ জুলাই ফেরদৌসী মজুমদারের  টেস্ট করা হলে পরীক্ষার ফল ‘পজিটিভ’ আসে। এর এক সপ্তাহ পর রামেন্দু মজুমদারের টেস্ট করালে সেটাও আসে ‘পজিটিভ’। রামেন্দু মজুমদারের মনোবল এতটা শক্ত ছিল যে, তিনি করোনায় আক্রান্ত অবস্থায়ও বাসা থেকে ফেসবুক লাইভে অংশগ্রহণ করেছেন। তাঁর ভাষায়, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য মনোবল দৃঢ় রাখা সবচেয়ে জরুরি।

 

ডলি জহুর

করোনার সময় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জনকারী এই অভিনেত্রী ভালো আছেন। অভিনয়ে তিনি এখন অনিয়মিত। বছরের বেশির ভাগ সময় থাকেন অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর ছেলের সঙ্গে। নাতনির সঙ্গে সময় কাটে তাঁর। তিন মাসের জন্য বাংলাদেশে আসেন তিনি। ডলি জহুর বলেন, ‘বেশ ভালো আছি। আমার ছেলে অস্ট্রেলিয়ায় থাকে। সেখানেই তার সব। তাকে ছাড়া একা দেশে থাকা কষ্ট হয়। সে জন্যই তার সঙ্গে থাকা। বিদেশে আমার ছেলের একমাত্র মেয়ের সঙ্গে আমার সারা দিন কাটে। তার যত্ন নিই। আমারও বয়স হয়েছে। নিজেরও যত্ন নিতে হয়। সব মিলিয়ে বেশ ভালো আছি।’

 

প্রবীর মিত্র

চলচ্চিত্রের জীবন্ত এই কিংবদন্তির শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। বার্ধক্যজনিত সমস্যা তো আছেই, এর ওপর কিছু দিন আগে তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। করোনামুক্ত হলেও শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারেননি।

 

এ টি এম শামসুজ্জামান

৮০ বছর বয়সী এই গুণী অভিনেতা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। এখন বেশ খানিকটা সুস্থ। বাসায়ই নিজের মতো  করে সময় কাটাচ্ছেন তিনি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর