মঙ্গলবার, ২০ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

সারিয়াকান্দির হাসু সিনেমা হল এখন সাইকেল গ্যারেজ

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

সারিয়াকান্দির হাসু সিনেমা হল এখন সাইকেল গ্যারেজ

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা। সিনেমাপ্রেমীদের জন্য ১৯৮৯ সালে যাত্রা শুরু হয় হাসু সিনেমা হলের। কিন্তু কালের বিবর্তনে এখন সিনেমা হল আর নেই। দিনে দিনে আবর্জনা জমে এখন সাইকেল গ্যারেজ হয়ে গেছে। যে হলে সিনেমা দেখতে দূরের দর্শকরা সাইকেলে ভিন্নস্থানে গ্যারেজ করে হলে প্রবেশ করতেন আর এখন সিনেমা হলেই সাইকেল গ্যারেজ করে ভিন্নস্থানে কর্মে যান। সন্ধ্যা বা বিকালে কর্ম থেকে ফিরে সিনেমা হল থেকে সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। জানা যায়, বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাসু সিনেমা হল সারিয়াকান্দিবাসীর কাছে এখন শুধুই স্মৃতি। সোনার নৌকা পবনে বৈঠা ছবিটির শুভমুক্তির মাধ্যমে ১৯৮৯ সালে যাত্রা শুরু হয় হাসু সিনেমা হলের। প্রথমে সিনেমা হলটিতে ১১ থেকে ১২ জন কর্মচারী কাজ করতেন। একজন টিকিট মাস্টার, চারজন গেটম্যান, দুজন মহিলা গেটম্যান, দুজন অপারেটর, একজন প্রচারম্যান, একজন নাইট গার্ড মিলে পরিচালিত হতো সারিয়াকান্দি হাসু সিনেমা হল। হলটির আসন সংখ্যা ছিল ৩০০টি। পরবর্তীতে মোবাইলের মেমোরি কার্ড চালু হওয়ার পর থেকে হলের দর্শক কমতে থাকে, ফলে কর্মচারীর সংখ্যাও কমতে থাকে। হলটিকে ঘিরে সারিয়াকান্দির হাজারো মানুষের রয়েছে হাজারো স্মৃতি। প্রতি সপ্তাহে একটি বা কোনো কোনো সপ্তাহে দুটি করে ছবি হলটিতে রিলিজ হতো। স্বাধীনতা-পরবর্তী সারিয়াকান্দিতে দুটি সিনেমা হল ছিল। বাঙালী নদীর তীরে ১৯৯৫ সালের দিকে বিলাসী সিনেমা হল নামে আর একটি সিনেমা হলের সূচনা হয়। হলটি বাঁশের বেড়া দিয়ে নির্মিত হওয়ায় এটি চাটাইয়ের সিনেমা হল নামেও পরিচিত ছিল। ভালো ব্যবসা না হওয়ায় মাত্র দুই বছরের মধ্যেই হলটি বন্ধ হয়ে যায়। নানা প্রতিকূলতার মাঝে হাসু সিনেমা হলটি চালু থাকলেও সর্বশেষ ২০০৮ সালের পরে নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে বন্ধ হয়ে যায়।

হাসু হলের অপারেটর প্রদীপ চন্দ্র জানান, হলটিতে চাকরি করে সংসারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছিল। হলটি বন্ধ হওয়ার পরে সংসারে অভাব-অনটন লেগেই আছে। বর্তমানে তিনি ফুটপাতে চা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তিনি জানান, এক সময় ঈদের দিনে কিছু দর্শক বেশি করে টিকিট কেটে নিয়ে পাঁচ টাকার টিকিট সাত টাকা আবার ১০ টাকার টিকিট ১৫ টাকাতেও বিক্রি হতো। তারপরও টিকিট পেত না কিছু দর্শক। পরের শোতে আবার দর্শকরা ফিরে আসতেন। টিকিটের জন্য হাহাকার ছিল। কিন্তু সে সব এখন স্মৃতি।

সর্বশেষ খবর