সোমবার, ৩ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

ঈদে সিনেমা হল খুলতে চান মালিকরা ছবি মুক্তি দিতে চান না নির্মাতারা

ঈদে সিনেমা হল খুলতে চান মালিকরা ছবি মুক্তি দিতে চান না নির্মাতারা

চলচ্চিত্র ব্যবসার প্রধান মৌসুম হলো ঈদ। এ আনন্দ-উৎসবে ছবি মুক্তি দিয়ে কাক্সিক্ষত ব্যবসা করেন নির্মাতা ও সিনেমা হল মালিকরা। তবে গত বছর থেকে করোনার কারণে এই চিত্র বদলে গেছে। প্রযোজক-প্রদর্শক উভয়পক্ষই চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে। গত বছর করোনা লকডাউনের কারণে সিনেমা হল ছিল বন্ধ। এতে ঈদে মুক্তি পায়নি কোনো ছবি। লোকসান গুনতে গিয়ে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে প্রযোজক ও প্রদর্শকদের। সেই মন্দাবস্থা এখনো কাটেনি। তাই এবারের ঈদেও ছবি মুক্তি নিয়ে তৈরি হয়েছে চরম অনিশ্চয়তা। এ বিষয়ে সিনেমা হল মালিক ও নির্মাতারা  পড়েছেন বিপাকে। তাঁদের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

আর লোকসান গুনতে চান না  নির্মাতারা

       খোরশেদ আলম খসরু (প্রযোজক)

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে এখন চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে ইতিমধ্যেই শপিং মল খুলে দিলেও সেগুলোতে আশানুরূপ ক্রেতা নেই। তাই ঈদে সিনেমা হল খুললে সেখানে যে দর্শক ছবি দেখতে যাবে এমন নিশ্চয়তা কোথায়? গত বছর করোনার কারণে প্রায় সাত মাস সিনেমা হল বন্ধ থাকার পর গত বছরের অক্টোবর থেকে আবার খুলে দেওয়া হয়। এরপর এখন পর্যন্ত মুক্তি পেয়েছে ১৪টি ছবি। এর মধ্যে দুই-একটি ছাড়া সবই প্রচ- আর্থিক লোকসানের কবলে পড়েছে। কারণ করোনাভীতি। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির যে ভয়াবহতা চলছে তাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দর্শক যে সিনেমা হলে যাবে এমন ভরসা সংগত কারণেই প্রযোজকরা করতে পারছেন না। কোনো নির্মাতা চাইবেন না তাঁদের বিগ বাজেটের ছবিগুলো করোনার মধ্যে মুক্তি দিয়ে আর্থিক ক্ষতি গুনতে। যখন তাগিদটা জীবন বাঁচানোর তখন কেউ কি বিলাসিতা করতে চাইবেন। ফলে আমার মনে হচ্ছে না ঈদে সিনেমা হল খুললেও বিগ বাজেটের ছবি কোনো প্রযোজক মুক্তি দিতে আগ্রহী হবেন।

 

ছবি পেলে সিনেমা হল খুলবে

               মিয়া আলাউদ্দীন (প্রদর্শক)

দীর্ঘদিন ধরে পর্যাপ্ত ও মানসম্মত ছবির অভাবে এমনিতেই সিনেমা হল মালিকরা করুণ অবস্থায় পড়েছেন। এর ওপর করোনাকাল প্রদর্শকদের বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। আমাদের পিঠ এখন দেয়ালে ঠেকে গেছে। বছরের দুটি ঈদ হল সিনেমা ব্যবসার প্রধান মৌসুম। এই দুই ঈদে ছবি চালিয়ে সিনেমা হল মালিকরা সারা বছরের আর্থিক ক্ষতি অনেকটাই কাটিয়ে আনেন। আশা করছি ঈদে করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সিনেমা হল খুললে এই উৎসবে দর্শক আসবে। তাই প্রযোজকদের প্রতি আমার অনুরোধ আপনারা মানসম্মত ছবি মুক্তি দিন। আপনারা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বেন না। আর যদি ভালো ছবি পাওয়া না যায় তাহলে ছোট মাপের বা পুরনো ছবি চালিয়ে সিনেমা হল মালিকরা আবারও ক্ষতির মুখে পড়বেন। এ অবস্থায় কোনো মালিক সিনেমা হল খুলতে রাজি হবেন না।

 

সিনেমা হল খুলতে চাই

       আওলাদ হোসেন উজ্জল (প্রদর্শক)

এভাবে সিনেমা হল দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে সিনেমা হলের অস্তিত্ব বলে আর কিছু থাকবে না। প্রথমত, বলতে চাই ৫ মে করোনা লকডাউন শেষ হলে সিনেমা হল ঈদে খোলার প্রস্তুতি আমরা নেব। এক সপ্তাহের মধ্যে ঈদের জন্য সিনেমা হল দর্শক উপযোগী করে খোলার কাজ শুরু করব। দ্বিতীয়ত. প্রযোজকদের অনুরোধ করব আপনারা ছবি দেন ঈদের এই সিনেমা ব্যবসার মৌসুমে অন্তত লোকসানের কবলে পড়বেন না, নিশ্চয়তা প্রদর্শকরা আপনাদের দিচ্ছে। সবশেষ কথা হলো তারপরও যদি প্রযোজকরা দর্শক ও প্রদর্শকদের ওপর আস্থা রাখতে না পারেন তাহলে আমরা  বাধ্য হয়েই ঈদে সিনেমা হল বন্ধ রাখব।

সর্বশেষ খবর