শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২০ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

হার মানতে শিখিনি আমি

অপু বিশ্বাস। দেশীয় চলচ্চিত্রের একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী। তিনি শুধু একজন শিল্পীই নন, জীবনযোদ্ধাও বটে। বিশেষ করে পারিবারিক নানা ঘাত-প্রতিঘাতের সঙ্গে লড়াই করে ভালোভাবেই টিকে আছেন তিনি। ব্যক্তি ও চলচ্চিত্র জীবন নিয়ে এই জনপ্রিয় অভিনেত্রীর বলা কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

হার মানতে শিখিনি আমি

নতুন চলচ্চিত্রে কাজ শুরু, কেমন লাগছে?

আসলেই ভালো লাগার মতো একটা ব্যাপার। কারণ করোনার কারণে দীর্ঘ সময় ধরে চলচ্চিত্রশিল্প স্থবির হয়ে আছে। চলচ্চিত্রের সাধারণ মানুষ কাজের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ অবস্থায় নতুন করে কোনো ছবির কাজ শুরু হওয়া মানে সবার মুখে হাসি ফুটে ওঠা, আশার আলো দেখা। আসলে করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করেই আমাদের বাঁচতে হবে। কারণ করোনার কারণে কখনো জীবন বা জীবিকা থেমে থাকবে না।

 

নতুন ছবিটি সম্পর্কে জানতে চাই

গত সোমবার থেকে আমার অভিনয় করা নতুন ছবিটির নাম ‘প্রেম প্রীতির বন্ধন’। এটি পরিচালনা করছেন সোলায়মান আলী লেবু। এখানে আমার কো-আর্টিস্ট হলেন জয়। চমৎকার এবং ব্যতিক্রমধর্মী একটি পারিবারিক ও প্রেমের গল্পের ছবি। এতে আমার চরিত্রের নাম প্রীতি। এই ছবিতে আমার অভিনয় সম্পর্কে আপাতত এতটুকুই বলব। দর্শক এই ছবিতে আবার আগের অভিনেত্রী অপু বিশ্বাসের ফ্লেভার খুঁজে পাবেন।

 

সংসার সন্তান প্রসঙ্গে জানতে চাই

দেখুন, ২০১৮ সালে শাকিব আমাদের দাম্পত্য জীবনের সমাধি রচনা করে দেওয়ার পর মা আর আদরের পুত্র জয়কে নিয়ে আমার সংসার জীবন ভালোই চলছিল। কিন্তু গত বছরের শেষদিকে প্রিয় মাকে হারিয়ে আমি দিশাহারা হয়ে পড়ি। কারণ মা ছিলেন আমার সব কাজের উৎসাহ, আমার শক্তি ও সাহসদাতা। আজ মা নেই, আমি বড় একা। তারপরও জীবন তো আর আমার জন্য থেমে থাকবে না। বিশেষ করে পুত্র জয়ের জন্য আমাকে কাজ করে যেতেই হবে, বাঁচতে হবে, জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। তা-ই করে যাচ্ছি। ঈশ্বর আর মায়ের আশীর্বাদে আমি ভালোই আছি।

 

আপনার কথায় মন খারাপের একটা আভাস পাচ্ছি, কেন?

আমার জীবনটা তো একটা খোলা বই। এটি কারও অজানা নয়। একজন মানুষকে বিশ্বাস করে বিয়ে করেছিলাম। পরিণতিতে কী পেয়েছি, লাঞ্ছনা, যন্ত্রণা আর মিথ্যা অপবাদ। নিজ ধর্ম ত্যাগ করে তাঁকে নিয়ে সুখী হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার সুখ তাঁর কাম্য ছিল না। যাক, এ নিয়ে আর নতুন করে কিছু বলতে চাই না। কারণ বিষয়টি সবাই জানেন। আমি শুধু একটি কথাই জানি, যত ঝড়-ঝঞ্ঝাই আসুক না কেন, হার আমি কখনই মানব না। মানতেও শিখিনি। যেখানে বাধা আসবে সেখান থেকেই নতুন করে আমার যাত্রা শুরু হবে। এই চ্যালেঞ্জ শুধু প্রতিটি মেয়ের নয়, প্রত্যেক মানুষেরই থাকা দরকার। না হলে সে অল্পতে ভেঙে পড়বে। নিকষ কালো অন্ধকার তাকে ঘিরে ধরবে। সুযোগসন্ধানীরা তার দুর্বলতার সুযোগ নিতে চাইবে। আর তার দুঃসময়ে কেউ পাশে দাঁড়াবে না। এটিই বাস্তবতা। জীবন যার সিদ্ধান্ত তার। সাহসের ওপর ভর করে নিজের জীবনকে নিজেরই চালাতে হবে। মোটেও পরনির্ভরশীল হওয়া চলবে না। তবে যদি সত্যিকারের সৎ মানুষের সন্ধান পাওয়া যায় তাকে অবলম্বন করে এগিয়ে যেতে হবে। কারণ মানুষ কখনো একা বাঁচতে পারে না। একাকিত্ব মানেই হতাশার সূচনা।

 

তেমন মানুষের দেখা কি মিলেছে?

হা...হা...হা..., না মেলেনি। খোঁজারও চেষ্টা করিনি। কারণ এখন আমার ধ্যান-জ্ঞান হলো আমার একমাত্র আদরের পুত্র জয়কে সত্যিকারের মানুষ করে গড়ে তোলা। আমার এখনকার যত ব্যস্ততা আর হাসি-খুশি গান সবই আদরের জয়কে ঘিরে। জয়কে পেয়ে আমার সব একাকিত্ব কেটে গেছে। এভাবেই থাকতে চাই।

 

হাতে থাকা আগের ছবির কাজগুলোর খবর কী?

‘ছায়াবৃক্ষ’ ছবির সামান্য কাজ বাকি আছে। কলকাতার শর্টকাট ছবিটিও মুক্তির পথে। শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদও মুক্তির জন্য প্রস্তুত। এ ছাড়া আরও কিছু ছবিতে অভিনয়ের কথা চলছে। গল্প আর চরিত্র পছন্দ হলে কাজ শুরু করব। তাছাড়া স্টেজ ও টিভি শো নিয়েও ব্যস্ততায় সময় কাটছে।

 

এখনো মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন, কেমন লাগছে?

অবশ্যই ভালো লাগছে। যে বা যারাই আমাকে যত অপবাদ দিক না কেন, যত গসিপ ছড়াক না কেন মানুষ জানে অপু বিশ্বাস আসলে কেমন স্বভাবের মেয়ে। আমি যদি মন্দ হতাম তাহলে অনেক আগেই জীবনযুদ্ধে হেরে যেতাম। মানুষের ভালোবাসা চিরদিনই আমার চলার পথের পাথেয়। সবার সুখে-দুঃখে পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি, এটিই করে যাব।  বিনিময়ে সবার আশীর্বাদ চাই, আর কিছু নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর