শনিবার, ১০ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

বলিউডের আর যত সুপারস্টার

বলিউডের আর যত সুপারস্টার

সুপারস্টার খেতাব সবার ভাগ্যে জোটে না। দর্শক হৃদয় জয় করার মতো ক্যারিশমা দেখাতে পারলেই এই অর্জন সম্ভব। বলিউডের জন্মলগ্ন থেকে পৃথ্বীরাজ কাপুর থেকে শুরু করে অনেক তারকা সুপারস্টার তকমায় ভূষিত হয়েছেন। বলিউডে বর্তমানে সুপারস্টার হিসেবে কারা রয়েছেন, তাঁদের কথাই তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

ধর্মেন্দ্র

১৯৬০ সালের চলচ্চিত্র দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে ছিল ধর্মেন্দ্র অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র। ফুল অর পাত্থার চলচ্চিত্রটি ১৯৬৬ সালের সবচেয়ে আয়কারী চলচ্চিত্র ছিল এবং ধর্মেন্দ্র তাঁর জীবনের প্রথম ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অনুষ্ঠানে সেরা অভিনেতা শ্রেণিতে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। ১৯৬৬ সালেই ‘অনুপমা’তে ধর্মেন্দ্রর অভিনয় চলচ্চিত্র সমালোচকদের দ্বারা প্রশংসিত হয়। ১৪তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে (১৯৬৭) ধর্মেন্দ্র্রকে উল্লেখ করে কথা বলা হয়েছিল তাঁর অনুপমা চলচ্চিত্রে। অভিনয়ের জন্য তিনি বিভিন্ন চলচ্চিত্রে প্রেমিকের চরিত্রে অভিনয় করে ভালোই পরিচিতি পান। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তাঁর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ছিল।

 

জিতেন্দ্র

জিতেন্দ্রর কর্মজীবনে প্রথম সাফল্য আসে ভি. শান্তরামের ১৯৬৪ সালের ‘গীত গায়া পাত্থরোঁ নে’ চলচ্চিত্র দিয়ে। চার বছর পর ফর্জ (১৯৬৭) ছিল তাঁর আরেকটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। এই চলচ্চিত্রের ‘মস্ত বাহারোঁ কা ম্যায়ঁ আশিক’ গানের জন্য তিনি মুম্বাইয়ের একটি দোকান থেকে নেওয়া টি-শার্ট আর সাদা জুতা পরবর্তীকালে তাঁর প্রতীকী স্টাইল হয়। ফর্জ চলচ্চিত্রটি গোল্ডেন জুবিলি হিট তকমা লাভ করে। ফর্জের সফলতার পর তিনি কারবাঁ, হামজোলি চলচ্চিত্রে অনবদ্য নাচের সুবাদে তিনি জাম্পিং জ্যাক অব বলিউড খ্যাতি লাভ করেন। দেশ-বিদেশের অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হন তিনি।

 

অমিতাভ বচ্চন

পরিচালক প্রকাশ মেহেরা তাঁর জঞ্জির (১৯৭৩) ছবির মুখ্য চরিত্রে তাঁকে নির্বাচন করেন। ছবিটি আগের সব রোমান্টিক ছবি থেকে পুরোপুরি অন্য ঘরানার হওয়ায় অমিতাভ ‘রাগী যুবক’ হিসেবে এক নতুনরূপে বলিউডে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন। এর পরের ছবিগুলোতে তাঁর অভিনীত চরিত্রের আঙ্গিক তাঁর এই নতুন পরিচিতিকে আরও দৃঢ় করেছিলেন। ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এ মুক্তিপ্রাপ্ত শোলে ভারতের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাণিজ্যিক সফল চলচ্চিত্র হিসেবে অভিহিত হয়। মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনা করেও এই ছবির রোজগার হয় প্রায় ২৩৬ কোটি ৪৫ লাখ রুপি। ১৯৯৯-এ বিবিসি ইন্ডিয়া এই ছবিটিকে ‘সহস্রাব্দের সেরা ছবি’ বলে ঘোষণা দিয়েছিল। ইন্ডিয়া টাইমস মুভিস অমিতাভের ‘দিওয়ার’ ছবির মতো এই ছবিটিকেও প্রথম ২৫টি অবিস্মরণীয় বলিউড ছবির তালিকায় রেখেছে। বক্স অফিসে শোলের অভাবনীয় সাফল্যের পর বচ্চন মুম্বাই ফিল্ম জগতে তার জায়গা পাকা করে নেন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত তিনি অজস্র ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার এবং মনোনয়ন পেয়েছিলেন। এরপরও প্রবাদপ্রতিম অভিনেতা দিলীপ কুমার তাঁর সময়ের শ্রেষ্ঠ অভিনেতা। এবং মহাতারকা হিসেবে গণ্য করা হতো।

শাহরুখ খান

১৯৯০ এবং ২০০০-এর দশকে তিনি সবচেয়ে সফল ভারতীয় অভিনেতা শাহরুখ খান এসআরকে নামে জনপ্রিয়। মাঝে মধ্যে গণমাধ্যমে বলা হয়ে থাকে ‘বলিউড বাদশাহ’, ‘বলিউডের রাজা’, ‘কিং খান’, ‘প্রেমের রাজা’। তিনি একজন স্বপ্রতিষ্ঠিত সুপারস্টার হিসেবে বিবেচিত। তিনি বলিউডের সবচেয়ে সফল অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। বেশ কয়েকটি সফল রোমান্টিক চলচ্চিত্রে কাজ করে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।

 

আমির খান

আমির খান। ভারতের সবচেয়ে বড় তারকা এবং বাণিজ্যিকভাবে সফল সুপারস্টারদের একজন। তাঁর বেছে বেছে অল্পসংখ্যক চলচ্চিত্রে কাজ করার জন্য খ্যাতি রয়েছে। চলচ্চিত্রের গুণগত মান বিবেচনা, কাহিনি, অবস্থানসহ বিস্তারিত অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে চলচ্চিত্রে কাজ করতেন তিনি। হিন্দি চলচ্চিত্রে তাঁর সফল কর্মজীবনে নিজেকে ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি বিদেশেও অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন চিত্রনায়ক হিসেবে সুপরিচিত, বিশেষ করে চীনে তাঁর অসংখ্য ভক্ত ও অনুরাগী রয়েছে। যার কারণে ব্যবসায়িক দিক থেকে ভারতের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম চলচ্চিত্র বাজার হিসেবে চীনের নাম চলে আসে। তিনি চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং সাতবার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, ভারতের সর্বোচ্চ সম্মানীয় পুরস্কার পদ্মশ্রী (২০০৩) এবং পদ্মভূষণ (২০১০) লাভ করেন।

 

সালমান খান

‘আবদুল রশিদ সেলিম সালমান খান’ প্রকৃত নাম হলেও সালমান খান নামে অধিক পরিচিত। ভারতের অন্যতম বড় তারকা এবং অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে প্রভাবশালী অভিনেতাদের একজন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাঁর প্রতিটি চলচ্চিত্র ১০০ কোটির ওপরে ব্যবসা করেছে। গণমাধ্যমে তাঁকে ‘বলিউডের বাঘ’, ‘ব্লকবাস্টার খান’, ‘বক্স অফিসের রাজা’ ইত্যাদি নামে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়াও তিনি ভক্তদের কাছে ‘ভাইজান’ এবং ‘সাল্লু’ নামে জনপ্রিয়।

 

অক্ষয় কুমার

অক্ষয় কুমার চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব। তাঁর প্রকৃত নাম রাজীব হরি ওম ভাটিয়া। ২৯ বছরের বেশি অভিনয় জীবনে তিনি শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন এবং কয়েকটি পুরস্কার অর্জন করেছেন। তন্মধ্যে রয়েছে রুস্তম (২০১৬) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং অজনবী (২০০১) ও গরম মসলা (২০০৫) চলচ্চিত্রের জন্য দুটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পান তিনি। তিনি প্রথম বলিউড অভিনেতা যাঁর চলচ্চিত্রের সংগ্রহ ২০ বিলিয়ন রুপি ছাড়িয়ে যায় ২০১৩ সালে এবং ৩০ বিলিয়ন রুপি ছাড়িয়ে যায় ২০১৬ সালে। এর মাধ্যমে তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রের অন্যতম অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। নব্বইয়ের দশকে তিনি মূলত মারপিটধর্মী চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন।

পরবর্তীকালে তিনি নাট্যধর্মী, প্রণয়ধর্মী ও হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেও বেশ জনপ্রিয়তা পান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর