বুধবার, ১৪ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

ঈদে ছবি মুক্তি না পাওয়া নিয়ে তারকাদের ক্ষোভ

ঈদে ছবি মুক্তি না পাওয়া নিয়ে তারকাদের ক্ষোভ

করোনা মহামারীর কারণে গত বছর থেকে উৎসবের ঈদে মুক্তি পাচ্ছে না নতুন কোনো ছবি। এবারের ঈদেও মুক্তি পাবে না নতুন ছবি। অথচ আদিকাল থেকে এমন অবস্থা কখনো কেউ দেখেনি। এর আগে থেকেই আমাদের বিপর্যস্ত চলচ্চিত্র এখন প্রায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। ক্ষতির মুখে পড়ছেন প্রদর্শক এবং প্রযোজকরা। একই সঙ্গে নিজেদের ছবি ঈদে মুক্তি না পাওয়ায় ক্ষোভ ঝরছে তারকাদের কণ্ঠে।  সেই ক্ষোভের কথা তুলে ধরেছেন - আলাউদ্দীন মাজিদ

 

উৎসাহ হারিয়ে যায়

শাকিব খান

গত ঈদে মুক্তির জন্য অন্তরাত্মা ছবিটির কাজ শেষ করেছিলাম। করোনার কারণে তা আর হয়নি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক আসনে দর্শক আবার করোনার মধ্যে কতজন দর্শক আসবে, এতে আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় নির্মাতারা ঈদে ছবি মুক্তি দেননি এবং এখনো দিতে চাইছেন না। এ আশঙ্কার অবশ্যই যুক্তি আছে। কিন্তু এভাবে ছবিগুলো দীর্ঘসময় পড়ে থাকলে তো ছবির মেরিট নষ্ট হয়ে যাবে। উৎসবে ছবি মুক্তি দিলে কিছুটা হলেও ক্ষতি কম হতে পারে নির্মাতাদের। সিনেমা হল মালিকরাও ঈদে ব্যবসার মৌসুম বলে  কমবেশি আয়ের মুখ দেখবেন। আমরা যারা অভিনয় করেছি তাদের ছবি ঈদে মুক্তি না পাওয়া মানে আমরা ও আমাদের  দর্শকরা হতাশ হওয়া।

 

ক্ষতির মুখে পড়ব

অনন্ত

আমাদের দেশে চলচ্চিত্র জগৎ অনেক আগে থেকেই নানা সমস্যায় জর্জরিত। এর ওপর করোনার আঘাত এ সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। আসন্ন কোরবানির ঈদে ইরানের সঙ্গে আমার যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘দিন দ্য ডে’ মুক্তির জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে সিনেমা হলে একদিকে দর্শক যাচ্ছে না অন্যদিকে সিনেমা হল বন্ধে সরকারি নিষেধ না থাকলেও জেলা প্রশাসকরা গত রমজানের ঈদ থেকে সিনেমা হল বন্ধ করে দিয়েছেন। এমন অবস্থায় ছবি মুক্তি দেওয়া মানে নিশ্চিত আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়া।  তাই আমার অভিনীত ও প্রযোজিত ‘দিন দ্য ডে’ ছবিটি ঈদে মুক্তি দিতে পারছি না বলে স্বাভাবিকভাবেই দুশ্চিন্তায় আছি।

 

মনটা খারাপ

মিম

গত ঈদেও আমার অভিনীত ‘পরাণ’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা সব কিছু উলট পালট করে দিয়েছে। ছবিটি মুক্তি পেল না। ভেবেছিলাম এবারের ঈদে হয়তো ছবিটি সিনেমা হলে আসবে। কিন্তু না, এবারও নাকি করোনার কারণে এটি মুক্তি পাবে না। শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেল। আমার কথা হলো সরকার যদি করোনার কারণে সিনেমা হল স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখতে বলে তাহলে নির্মাতারা কেন ছবি মুক্তি দেবেন না। ব্যবসায়িক ঝুঁকি তো কয়েক বছর ধরেই চলছে। কোনো ছবি ভালো হলে দর্শক যে কোনো পরিস্থিতিতে সেই ছবি দেখতে সিনেমা হলে যান তার প্রমাণ বহুবার পাওয়া গেছে। তাই  এভাবে ফেলে না  রেখে ছবিটি মুক্তি দেওয়া হোক।

 

ঈদের আনন্দটাই নেই

আরিফিন শুভ

আমার অভিনীত ‘মিশন এক্সট্রিম’ ছবিটি গত বছর ঈদেই মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে ছবিটি এখন পর্যন্ত মুক্তি পায়নি। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ায় এ ঈদেও ছবিটি মুক্তি পাবে না বলে জেনেছি। এতে ঈদের আনন্দ বলে আর কিছুই রইল না। ঈদে যে কোনো তারকার ছবি মুক্তি পাওয়া মানে সেই তারকা ও তার দর্শকভক্তদের উচ্ছ্বাস বেড়ে যাওয়া। কিন্তু এই ঈদেও ছবি মুক্তি না পাওয়া মানে ঈদের আনন্দ ফিকে হয়ে যাওয়া।  চলচ্চিত্রের ব্যবসা এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যায় জর্জরিত।  তাই এ অবস্থার উত্তরণে ঝুঁকি নিয়ে ছবি মুক্তি দেওয়ার বিকল্প নেই। না হলে দেরিতে ছবি মুক্তি দেওয়া মানে ছবিটির মেরিট নষ্ট হয়ে যাওয়া।

 

সময়মতো মুক্তি চাই

সিয়াম

অভিনয় শিল্পীদের কাজ হচ্ছে অভিনয় করে দেওয়া। ছবি মুক্তির এখতিয়ার হচ্ছে নির্মাতার। এ ক্ষেত্রে আমার বলার কোনো অধিকার নেই। তারপরও চলচ্চিত্র ব্যবসার স্বার্থে বলতে হয়, ঈদ বা স্বাভাবিক সময়েও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছবি মুক্তি ও প্রদর্শন করলে শিল্পটি বন্ধ্যত্বের হাত থেকে রক্ষা পাবে। অনেক দিন ধরেই আমার অভিনীত ‘অপারেশন সুন্দরবন’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার অপেক্ষায় ছিল। ভেবেছিলাম এবারের ঈদে হয়তো ছবিটি মুক্তি পাবে। কিন্তু এখন শুনছি তা আর হচ্ছে না। আসলে একটি ছবি সময়মতো মুক্তি দিতে না পারলে সময়-উপযোগিতা হারানোর সেই ছবির প্রতি দর্শক আগ্রহ হারিয়ে যায়।  ফলে এটি চরম ক্ষতির মুখেই পড়ে।

সর্বশেষ খবর