শুক্রবার, ৩০ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

৬৮ বসন্তে ববিতা...

আলাউদ্দীন মাজিদ

৬৮ বসন্তে ববিতা...

‘এ দিনটি কখনো ঘটা করে পালন করি না। আত্মীয়স্বজন ফোনে করে। তারপরও প্রতি বছর যেমন হয় পরিচিত বন্ধু ও সহকর্মীদের কেউ কেউ শুভেচ্ছা জানাতে সরাসরি বাসায় আসেন। এবার করোনাকালে সে সুযোগ নেই। তাছাড়া এখন আমি কানাডায় একমাত্র প্রবাসী সন্তান অনিকের কাছে আছি। ঈদুল আজহার তিন দিন আগে কানাডা চলে এসেছি। করোনার কারণে দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় পর পুত্রের কাছে আসতে পেরেছি বলে মনে করছি এটিই আমার জীবনের সেরা জন্মদিন। ঈদে অনিককে নিজ হাতে রেঁধে খাইয়েছি। জন্মদিনেও দুজন খুব মজা করব। ববিতা বলেন, অনিক বলে, ইউ আর দ্য বেস্ট মাদার ইন দ্য ওয়ার্ল্ড। সত্যি বলতে কী সব সন্তানের কাছেই তার মা পৃথিবীর সেরা। আমি বুঝি অনিক আমাকে কতটা ভালোবাসে, অনুভব করে, শ্রদ্ধা করে। যদিও করোনার কারণে মনে খুব একটা স্বস্তি নেই। সবাই দোয়া করবেন যেন ভালো ও সুস্থ থাকি। একই সঙ্গে সবার প্রতি রইল আমার শুভকামনা। অনেকেই করোনার নিষ্ঠুর ছোবলে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। এই অনাকাক্সিক্ষত বিদায় বড়ই বেদনার। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি,  তিনি যেন দ্রুত পৃথিবীকে করোনামুক্ত করে দেন। আর যেন কোনো স্বজন, প্রিয়জন, আপনজনকে অসময়ে হারাতে না হয়। সহসা এক সকালে ঘুম ভেঙে যেন দেখি পৃথিবীতে করোনা বলে আর কিছু নেই।’

আজ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিনেত্রী ববিতার জীবনের ৬৮তম বসন্ত। ১৯৫৩ সালের এই দিনে পৃথিবীতে অভিষেক ঘটে তাঁর। জন্ম বাগেরহাট জেলায়।  ববিতার পুরো নাম ফরিদা আক্তার পপি। প্রথম অভিনীত ‘সংসার’ [১৯৬৮] চলচ্চিত্রে তাঁর নাম ছিল ‘সুবর্ণা’। সে সময় ‘কলম’ নামের একটি টিভি নাটকে অভিনয়ও করেছিলেন তিনি। তাঁর বাবা নিজামুদ্দীন আতাউরের পৈতৃক বাড়ি যশোরে। মা জাহানারা  ছিলেন চিকিৎসক। তিনি চেয়েছিলেন ববিতা ডাক্তার হোক। কিন্তু তাঁর বোন অভিনেত্রী সুচন্দার অনুপ্রেরণায় চলচ্চিত্রে আসেন তিনি। জহির রায়হানের ‘জ্বলতে সুরুজ কি নিচে’ সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে তাঁর নাম হয়ে যায় ‘ববিতা’। সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি-সংকেত’ সিনেমায় ‘অনঙ্গ বউ’ চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক খ্যাতি পান ববিতা। চার দশকেরও বেশি সময়ের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে গ্রামীণ, শহুরে চরিত্র কিংবা সামাজিক অ্যাকশন অথবা পোশাকি সব ধরনের সিনেমায়ই ববিতা ছিলেন সাবলীল। সত্তরের দশকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজপড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। তৎকালে তাঁর ফ্যাশন শহুরে মেয়েদের ভীষণ প্রভাবিত করেছিল। ববিতাই বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে সবচেয়ে বেশিবার আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ করা তারকা। তাঁর অভিনীত সিনেমার সংখ্যা আড়াই শরও বেশি।  সেরা অভিনেত্রী হিসেবে একধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং এই পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পান তিনি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর