শুক্রবার, ২০ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রস্থানের চার বছর কাল

আলাউদ্দীন মাজিদ

প্রস্থানের চার বছর কাল

নায়করাজ রাজ্জাক। এমন উচ্চতায় যে রাজার আসন, মৃত্যু তাঁকে কখনো ছুঁতে পারে না। তিনি অমর হয়ে আছেন, থাকবেন এ দেশের মানুষের হৃদয়ে। আজ তাঁর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি  একাধারে অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্র অঙ্গনে ভূমিকা রেখেছেন।  নায়করাজের জন্ম ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতায়। কিশোর বয়সে কলকাতার নাটক দিয়ে অভিনয়ে যাত্রা শুরু তাঁর। ১৯৬৪ সালে নতুন জীবন গড়তে সাধারণ মানুষ হিসেবে রাজ্জাক পরিবারসহ ঢাকায় চলে আসেন প্রায় অসহায় অবস্থায়। কঠোর পরিশ্রম আর জীবনে প্রতিটি মুহুর্তের সঙ্গে সংগ্রাম করে হয়েছেন নায়করাজ রাজ্জাক। তৎকালীন পাকিস্তান আমলে   টেলিভিশনে ‘ঘরোয়া’ নামের ধারাবাহিক নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে সবার কাছে জনপ্রিয় হন তিনি। ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে সুচন্দার বিপরীতে নায়ক হিসেবে ঢালিউডে প্রথম উপস্থিত হন এবং সবার মন জয় করে নেন। ২০১১ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তিনি আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন। চারবার জাতীয় সম্মাননা লাভ করেন। তাঁর সফল কাজের স্বীকৃতি হিসেবে রাষ্ট্র তাঁকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পদক’-এ ভূষিত করে। ‘উজালা’ ছবির মধ্য দিয়ে শুরু হলো রাজ্জাকের ঢাকার চলচ্চিত্র জীবন। একসময় জহির রায়হানের সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। লোককাহিনি নিয়ে জহির রায়হান তখন ‘বেহুলা’ ছবিটি নির্মাণ করতে যাচ্ছেন। জহির রায়হান তাঁকে বললেন আপনিই আমার ছবির নায়ক। জহির রায়হানের সুনিপুণ হাতের ছোঁয়ায় অসাধারণ লখিন্দর হয়ে দর্শকের সামনে উপস্থিত হলেন রাজ্জাক। বেহুলা ১৯৬৬ সালে মুক্তি পায়। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পায় আরেকজন অপরিহার্য নায়ক।  ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে সবাইকে কাঁদিয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন দেশীয় চলচ্চিত্রের এই অবিসংবাদিত রাজা।

 

রাজ্জাক ছিলেন পূর্ণাঙ্গ শিল্পী : সুচন্দা

রাজ্জাক ছিলেন পূর্ণাঙ্গ শিল্পী। তাঁর শূন্যতা আমরা অনুভব করছি। বাংলা চলচ্চিত্রে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ‘বেহুলা’ দিয়ে যাত্রা শুরু করে আনোয়ারা, জুলেখা, দুই ভাই, সংসার, প্রতিশোধ, অশ্রু দিয়ে লেখা, রাজবন্দী. জীবনতৃষ্ণাসহ প্রায় ২৫-৩০টি চলচ্চিত্রে রাজ্জাকের সঙ্গে অভিনয় করেছি। রাজ্জাক শিল্পী হিসেবে যেমন ছিলেন কাজের প্রতি আন্তরিক, তেমনি মানুষ হিসেবে ছিলেন বিনয়ী এবং সজ্জন। সহশিল্পীদের সহযোগিতায় তিনি সব সময় এগিয়ে আসতেন। জন্মদিনে তাঁর আত্মা শান্তিতে থাকুক  এটাই আমার প্রার্থনা।

 

কী এমন তাড়া ছিল : ববিতা

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে রাজ্জাক এক স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান। রাজ্জাকের নিজস্ব প্রোডাকশন হাউস ‘রাজলক্ষী’র বেশির ভাগ ছবিতে অভিনয় করতে পেরে আমি গর্বিত। আমার ডাকনাম পপি। তিনি আমাকে পপ বলে ডাকতেন। সেই ডাকটি এখনো কানে বাজে। স্মৃতি আজও অম্লান প্রিয় মানুষটি। জীবনের প্রতি তাঁর অগাধ মমতা ছিল। রাজ্জাক ভাইয়ের সঙ্গে ৪০টি ছবিতে নায়িকা হয়েছি। ভাবতে কষ্ট হয়, কী এমন তাড়া ছিল  এত তাড়াতাড়ি চলে যাওয়ার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর