সোমবার, ১১ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

৭৯ তেও চিরতরুণ বিগ বি

৭৯ তেও চিরতরুণ বিগ বি

বয়সটা অঙ্কে বুড়িয়ে গেলেও এখনো টগবগে যুবকের মতো কর্মক্ষেত্রে শুদ্ধ ছন্দের হিসাব কষেন। প্রচন্ড ঝড় তোলেন অভিনয় আর উপস্থাপনায়। আজ জীবনের ৭৯ বসন্তে পা রাখছেন বলিউড শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চন। বলিউডের ‘ওয়ান ম্যান ইন্ডাস্ট্রি’ খ্যাত বিগ বি অমিতাভ বচ্চনের জীবনের সাতসতেরো তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

ইনকিলাব থেকে বিগ বি

যাঁর নামই ‘ইনকিলাব’, মানে যাঁর মন আর মননে শুধু অগ্নিঝরা কর্ম আর ব্যক্তিত্ব তিনিই তো বলিউডের শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চন। প্রকৃত নাম ইনকিলাব শ্রীবাস্তব। সিনেমায় তাঁর সম্মানসূচক নাম বিগ বি, অর্থাৎ বড় বচ্চন। এখনো যাঁর কর্মমুখর অসাধারণ মনের  জোরের কাছে বয়স হার মানে, তিনিই বলিউডের প্রকৃত শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চন। কিরোরিমল কলেজ থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক হন।

 

কর্মজীবন

অমিতাভ বচ্চন কলকাতার ব্ল্যাকার অ্যান্ড  কোং নামে একটি জাহাজ  কোম্পানিতে প্রথমে চাকরি  নেন। বেতন ছিল ৩০০ রুপি। পরে অভিনেতা হওয়ার উদ্দেশে ২০ বছর বয়সে তিনি চাকরিতে ইস্তফা দেন। ১৯৬৯ সালে ‘সাত হিন্দুস্তানি’ ছবি দিয়ে রুপালি পর্দায় তাঁর অভিষেক। এ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ নতুন অভিনেতার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ১৯৭৩ সালে ‘জঞ্জির’ ছবিতে রাগী যুবকরূপে নিজেকে বলিউডে প্রতিষ্ঠিত করে অর্জন করেন ‘অ্যাংরি ইয়ংম্যান’ অর্থাৎ রাগী যুবক খ্যাতি।

 

সহস্রাব্দের সেরা তারকা

অমিতাভকে ভারতীয় চলচ্চিত্র তথা বিশ্ব চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা ও প্রভাবশালী অভিনেতা হিসেবে গণ্য করা হয়। পাঁচটি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ১৫টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারসহ নানা আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯৮৪ সালে পদ্মশ্রী, ২০০১ সালে পদ্মভূষণ, ২০১৫ পদ্মবিভূষণ সম্মানে ভূষিত করে ভারত সরকার। ২০০৭ সালে ফ্রান্স সরকার তাঁকে লেজিওঁ দ্য নাইট উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে ভারতীয় চলচ্চিত্রে তাঁর একচ্ছত্র আধিপত্যের জন্য ফরাসি চলচ্চিত্র সমালোচক ও পরিচালক ফ্রাঁসোয়া ত্রাফো তাঁকে ‘ওয়ান ম্যান ইন্ডাস্ট্রি’ মানে একক-ব্যক্তি চলচ্চিত্র শিল্প বলে অভিহিত করেন।

 

টার্নিং পয়েন্ট ১৯৭৫

১৯৭৫ সালেই তাঁকে দুটি ছবিতে দেখা গিয়েছিল যা হিন্দি ছবির ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। যশ চোপড়া পরিচালিত ছবি ‘দিওয়ার’ ছবির জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মান পান। ১৯৭৫-এ ছবিটি বক্স অফিসে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পায় এবং চতুর্থ স্থান লাভ করে। ইন্ডিয়া টাইমস মুভিসের তালিকা অনুযায়ী দিওয়ার প্রথম ২৫টি অবিস্মরণীয় বলিউড ছবির মধ্যে একটি। একই বছর মানে ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এ মুক্তিপ্রাপ্ত ‘শোলে’ চলচ্চিত্রটি ভারতের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাণিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্র হিসেবে অভিহিত হয়েছিল। ১৯৯৯ সালে বিবিসি ইন্ডিয়া এই ছবিটিকে ‘সহস্রাব্দের সেরা ছবি’ বলে ঘোষণা দিয়েছিল।

 

সফল টিভি উপস্থাপক

টিভি গেম শো ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ অনুষ্ঠানের একজন সফল সঞ্চালক তিনি। এই অনুষ্ঠান এখনো শুরু হলে অমিতাভের জাদুকরী উপস্থাপনা দেখতে শুধু ভারত নয়, বিশ্বের অনেক দেশেরই রাস্তাঘাট প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ে।

 

রাজনীতিবিদ

১৯৮০-এর দশকে তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৭ পর্যন্ত ভারতীয় সংসদে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছিলেন।

 

গায়ক অমিতাভ

১৯৭৯ সালে মিস্টার নটবরলাল ছবিতে প্রথমবার প্লেব্যাক করেন। এরপর লাওয়ারিশ, সিলসিলা, ম্যায় আজাদ হু, মহান, বাগবান, শামিতাভসহ বেশ কিছু ছবির গানে কণ্ঠ দেন এবং গায়ক হিসেবেও জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।

 

দরাজ কণ্ঠের খ্যাতি

অমিতাভ বচ্চন তাঁর গম্ভীর, ব্যারিটোন কণ্ঠস্বরের জন্য বিখ্যাত। প্রথিতযশা চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় বচ্চনের কণ্ঠস্বর শুনে এত মুগ্ধ হয়েছিলেন যে, তিনি তাঁর ছবি ‘শতরঞ্জ কে খিলাড়ি’তে তাঁকে ভাষ্যকারের ভূমিকা দিয়েছিলেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর