বুধবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

বছর শেষে বড় পর্দায় যত ছবি

আলাউদ্দীন মাজিদ

বছর শেষে বড় পর্দায় যত ছবি

বৈশ্বিক মহামারী করোনা আটকে দিয়েছিল নতুন ছবি মুক্তি। এখন দেশে করোনা মহামারী পরিস্থিতির উন্নতি হলে নির্মাতারা আবার তাঁদের আটকে পড়া নতুন ছবি মুক্তি দেওয়ার উদ্যোগ নিতে শুরু করেছেন। করোনার কারণে বিশ্বজুড়েই লকডাউনের কবলে পড়ে থমকে যায় নতুন ছবি মুক্তি। এখন করোনা পরিস্থিতি বলতে গেলে নিয়ন্ত্রণে। তাই আবার জেগে উঠেছে চলচ্চিত্র পাড়া। শুরু হয়েছে শুটিং, নতুন চলচ্চিত্র মুক্তি আর নির্মাণ। এরই মধ্যে নতুন ছবি মুক্তি পেয়ে দর্শকগ্রহণযোগ্যতা পেয়ে গেছে। এসব ছবির মধ্যে চলতি মাসে মুক্তি পাওয়া ‘পদ্মাপুরাণ’ আর ‘চন্দ্রাবতী কথা’- এই সফল ছবি দুটির কথা উল্লেখ করা যায়। এখন বছরের শেষ দুই মাস অর্থাৎ নভেম্বর ও ডিসেম্বরে মুক্তি প্রতীক্ষিত বেশ কটি ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ৫ নভেম্বর ডিপজল প্রযোজিত ও এফ আই মানিক পরিচালিত ও ডিপজল, সোহেল রানা, দিতি, রোমানা, জায়েদ খান প্রমুখ অভিনীত ‘এদেশ তোমার আমার’, ১২ নভেম্বর প্রটোকল ও মেট্রো প্রযোজিত আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ পরিচালিত আজমেরী বাঁধন, জাইমা, সাবেরি আলম প্রমুখ অভিনীত ‘রেহানা মরিয়ম নূর’, ১২ নভেম্বর এম কে জামান পরিচালিত, রাফাত রউফ ও রোজ অভিনীত ‘তোর মাঝে আমার প্রেম’, ১৯ নভেম্বর অনন্য মামুন পরিচালিত নিরব, প্রিয়মণি, নওশাবা, রাশেদ মামুন অপু প্রমুখ অভিনীত ‘কসাই’, ২৬ নভেম্বর মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত জয়, আঁচল, আমান, তানহা মৌমাছি অভিনীত ‘আয়না’ এবং ইলান জিরার্ড ও রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত প্রযোজিত এবং রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত পরিচালিত ফজলুর রহমান বাবু, শতাব্দী ওয়াদুদ, তিতাস জিয়া, তাসনুভা তামান্না, রোজী সিদ্দিকী প্রমুখ অভিনীত ‘নোনা জলের কাব্য’, ৩ ডিসেম্বর ক্রপ ক্রিয়েশন প্রযোজিত ফয়সাল আহমেদ পরিচালিত ও আরিফিন শুভ, ঐশী, তাসকিন, রাইসুল ইসলাম আসাদ, ফজলুর রহমান বাবু, শহীদুজ্জামান সেলিম, ইরেশ যাকের, শতাব্দী ওয়াদুদ ও মিশা সওদাগর প্রমুখ অভিনীত ‘মিশন এক্সট্রিম’ ও ২৪ ডিসেম্বর ইরান ও বাংলাদেশের আয়োজিত এবং মনসুন ফিল্মস ও ফারাবি সিনেমা ফাউন্ডেশন প্রযোজিত ইরানি পরিচালক মর্তুজা আতাশ জমজম পরিচালিত অনন্ত, বর্ষা, সজিব, নিক্সন প্রমুখ অভিনীত ‘দিন : দ্য ডে’। চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি জানিয়েছে গতকাল পর্যন্ত আগামী দুই মাসে মুক্তির জন্য এসব ছবি সমিতিতে আবেদন করেছে এবং মুক্তির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। সমিতি জানায় এরই মধ্যে আরও ছবি বছর শেষে মুক্তির জন্য আসছে।

গত বছরের মতো চলতি বছরের মার্চ থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত করোনা লকডাউনের কারণে চলচ্চিত্র নির্মাণ ও মুক্তি থেমে ছিল। গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে করোনা লকডাউন শুরু হলে সিনেমা হলও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মুক্তি আটকা পড়ে যায় নতুন ছবি। চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন চলচ্চিত্র প্রযোজক ও প্রদর্শকরা। প্রায় ৭ মাস পর ১৬ অক্টোবর সিনেমা হল খুললেও দর্শক আসার নিশ্চয়তা না থাকায় লোকসানের ভয়ে কোনো বিগ বাজেটের ছবি মুক্তি দিতে সাহস পাননি প্রযোজকরা। সিনেমা হল মালিকরা প্রযোজকদের কাছে ছবি চাইলে তাঁরা লোকসান হবে না- এই মর্মে সিনেমা হল মালিকদের কাছে গ্যারান্টি চাইলে তা দিতে রাজি হননি তাঁরা। প্রযোজকদের কথায় করোনার ভয়ে সিনেমা হলে দর্শক কতটা আসবে তাতে সন্দেহ থেকেই যায়। তার ওপর স্বাস্থ্যবিধি মেনে হলের অর্ধেক আসন খালি রাখতে গিয়ে চলচ্চিত্রে লগ্নিকৃত অর্থ কতটা ফেরত আসবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। প্রযোজকরা টাকা ফেরত দেওয়ার গ্যারান্টি চেয়েছেন প্রদর্শকদের কাছে আর প্রদর্শকরা বলেছেন, ছবি যে মানসম্মত এই গ্যারান্টি আগে দিতে হবে প্রযোজকদের। এই পাল্টাপাল্টি অবস্থানের কারণে অক্টোবরে সিনেমা হল খোলার পরও ঝুলে যায় বড় তারকাদের নিয়ে বিগ বাজেটের ছবি মুক্তি। এতে হতাশ প্রদর্শকরা। এ অবস্থা প্রায় ১১ মাস ধরে চলছে। চলতি বছরের মার্চে সরকার আবার করোনা সতর্কতার লকডাউন জারি করলেও এ সম্পর্কিত সরকারি প্রজ্ঞাপনে সিনেমা হল বন্ধের কথা উল্লেখ ছিল না। তাই গত রমজানের ঈদে ‘সৌভাগ্য’ শিরোনামে ডিপজল প্রযোজিত ও অভিনীত একটি নতুন ছবি মুক্তি দিলেও স্থানীয় জেলা প্রশাসন ঢাকাসহ দেশের বেশির ভাগ স্থানে করোনার কারণে সিনেমা হল খুলতে বাধা দেয় এবং ‘সৌভাগ্য’ ছবিটি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে। এতে অন্য প্রযোজকরা নতুন ছবি মুক্তি দিতে লোকসানের ভয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।

এমন অবস্থা যখন চলতেই থাকে তখন প্রযোজক-প্রদর্শক উভয়েই অনবরত লোকসান গুনতে গিয়ে তাঁদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায়। বর্তমানে দেশ-বিদেশে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি শুরু হলে প্রযোজকরা এবার তাঁদের বিগ বাজেট ও তারকাবহুল ছবি মুক্তি দিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এখন আরও যেসব ছবি মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো- প্রথমেই দীপংকর দীপেন তাঁর ‘অপারেশন সুন্দরবন’, সোহানী হোসেন প্রযোজিত ও সুমন ওয়াজেদ পরিচালিত শাকিব খান ও দর্শনা অভিনীত ‘অন্তরাত্মা’, জাজ মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত ‘জিন’, মোস্তাফিজুর রহমান মানিক জানান, অচিরেই ‘স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা’, দেবাশীষ বিশ্বাস পরিচালিত ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ-২’, ‘শান’, ‘বিদ্রোহী’, ‘পরাণ’,  ‘ক্যাসিনো’, ‘বর্ডার’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘বিউটি সার্কাস’, ‘কমান্ডো’, ‘সাইকো’, ‘সাহসী যোদ্ধা’, ‘তালাশ’,   ‘লিডার’ প্রভৃতি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর