বুধবার, ৩ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

যে নায়িকাদের নাচেই ছবি মাত

যে নায়িকাদের নাচেই ছবি মাত

মধুবালা

‘পেয়ার কিয়া তো ডরনা কেয়া’ মুঘল-ই-আজম ছবির অনবদ্য একটি গান। এ গানের সঙ্গে নায়িকা মধুবালার অসাধারণ নাচ দেখে এখনো মুগ্ধ হন দর্শক। এমনই কিছু নাচে ঝড় তোলা বলিউড নায়িকা ও সেই গান এবং ছবির কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

মধুবালা : পেয়ার কিয়া তো

‘পেয়ার কিয়া তো ডরনা কেয়া, পেয়ার কিয়া তো ছুপ ছুপ করকে মরনা কেয়া, পেয়ার কিয়া তো চুরি নেহি কেয়া’- ষাটের দশকে বলিউডের কে আসিফ নির্মিত ‘মুঘল-ই-আজম’ ছবির এ গানে নায়িকা মধুবালার অসাধারণ নাচ ছবিটিকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেয়। এ ছবির গানে নাচ যখন করেন তখন এ নায়িকা হৃদযন্ত্রের রোগে ভুগছিলেন। নাচ করার সময় হৃদরোগের কারণে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন তিনি। বিরতি দিয়ে বারবার ধারণ করা হয়েছিল ‘পেয়ার কিয়া তো ডরনা কিয়া’ গানটি। তারপরও গানটি দেখলে বোঝার উপায় নেই মধুবালা অসুস্থতা নিয়ে এ গানে অসাধারণ নাচটি করেন। ১৯৪৯ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত মাত্র ২৯ বছরের অভিনয় জীবনে প্রায় ৭০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করলেও ‘মুঘল-ই-আজম’ (১৯৬০) মধুবালার জীবনের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র।

 

মীনা কুমারী

মীনা কুমারী : ইনহি লোগোনে

মীনা কুমারী ১৯৫২ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত ৯০টির বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করলেও ১৯৭২ সালে কামাল আমরোহি পরিচালিত ‘পাকিজা’ ছবিটি তাঁকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেয়। এ ছবিতে অভিনয়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর তুখোড় নাচ দর্শক-মনে এখনো জীবন্ত হয়ে আছে। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও এ ছবির ‘চলতে চলতে কই মিল গিয়া’, ‘মৌসুম হ্যায় আশিকানা’, ‘ইনহি লোগোনে’, ‘চল দিলদার চল’-এর মতো অসাধারণ সব গানে অনবদ্য নাচের ঝড় তোলেন মীনা কুমারী। লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কারণে মীনা কুমারী গানের দৃশ্য ধারণের সময় বারবার অসুস্থ হয়ে পড়তেন। এ কারণে ছবিটি শেষ করতে প্রায় ৯ বছর সময় লেগে যায়।

 

বৈজয়ন্তী মালা : মন ডোলে মেরা

বৈজয়ন্তী মালা। নৃত্যকলায়ও পারঙ্গমতা দেখান এবং বলিউডে অর্ধ-ধ্রæপদী নৃত্যের অন্তর্ভুক্তিতে অন্যতম ভূমিকা রাখেন। বেশ কিছু চলচ্চিত্রে নৃত্য সহযোগে অভিনয়ের কারণে তিনি ‘টুইঙ্কল টোজ’ পদবি লাভ করেন। ১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকে তাঁর বর্ণাঢ্য চলচ্চিত্র জীবনের কারণে তাঁকে ‘নুমেরো ইউনো অভিনেত্রী’ হিসেবে আখ্যায়িত করা এ নায়িকা ষাটের দশকে ‘নয়া দৌড়’ ছবিতে ‘উড়ে যব যব তেরে জুলফে’ এবং ‘নাগিন’ ছবির ‘মন ডোলে মেরা’ গান দুটির সঙ্গে ঝড় তোলা নাচ দর্শকদের হৃদয়কে নাচিয়ে দেয়।

 

রেখা

রেখা : ইন আখোকে মাস্তি মে

অভিনেত্রী রেখাকে বলিউডের চিরসবুজ আবেদনময়ী হিসেবে গণ্য করা হয়। ৪০ বছরের অভিনয় জীবনে রেখা ১৮০টির অধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৮১ সালে ‘উমরাহ জান’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এ চলচ্চিত্রের ‘ইন আখোকে মাস্তি মে’ এবং ‘দিল চিজ কেয়া হ্যায়’-এর মতো গানগুলোতে তাঁর নৃত্য পারঙ্গমতাও দর্শকদের দৃষ্টি শুধুই তাঁর ওপর আটকে রাখে।

 

জয়া প্রদা : ডাফলিওয়ালে

সত্তরের দশকের এই অভিনেত্রী নাচের জন্য রীতিমতো বিখ্যাত ছিলেন। জয়া প্রদার ছবিতে নাচের অংশই থাকত আলাদাভাবে। ‘সারগাম’ ছবিতে ‘ডাফলিওয়ালে’ গানটি এখনো অনেকের মুখে মুখে ফেরে। এর বড় কারণ কিন্তু জয়া প্রদার নাচ!

 

শ্রীদেবী

শ্রীদেবী : মে তেরা দুশমন

ওয়েস্টার্ন, ক্লাসিক্যাল থেকে কনটেম্পোরারি ভারতীয় নাচ, শ্রীদেবীর প্রশিক্ষণ ছিল সব ক্ষেত্রেই। ‘নাগিনা’ ছবির সাফল্যের পর ১৯৮৭ সালে শ্রীদেবী ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আইকনিক বলে অভিহিত হন। এ চলচ্চিত্রের ‘হাওয়া হাওয়াই’ গানের নৃত্যটিকে দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া ‘শ্রীদেবীর অন্যতম স্মরণীয় নৃত্য’ বলে উল্লেখ করে। ‘নাগিনা’ ছবিতে ‘মে তেরা দুশমন’ গানটির সঙ্গে শ্রীদেবীর প্রলয় সৃষ্টি করা নাচের কথা দর্শক ভুলবে কী করে।

 

মাধুরী দীক্ষিত

মাধুরী : এক দো তিন

দ্য হিন্দুস্থান টাইমসের মতে মাধুরীকে বলা হয় বলিউডের ‘ড্যান্সিং কুইন’। নাচের প্রশিক্ষণের জন্য তাঁর নিজেরই স্কুল রয়েছে। অভিনয় দক্ষতার সঙ্গে তাঁর নৃত্যকলাও সবার দৃষ্টি কাড়ে। ‘এক দো তিন’ (তেজাব), ‘ধক ধক করনে লাগা’ (বেটা), ‘দিদি তেরা দেবর দিওয়ানা’ (হাম আপকে হে কৌন), ‘চোলি কি পিছে কেয়া হ্যায়’ (খলনায়ক), ‘আখিয়া মিলাও কাভি’ (রাজা), ‘মেরা পিয়া ঘর আয়া’ (ইয়ারানা), ‘মার ডালা’ (দেবদাস) গানগুলোতে তাঁর পারফরম্যান্স ইতিহাস হয়ে থাকবে। তাঁর নাচের কারণেই ছবিগুলো বাজিমাত করে।

 

ঐশ্বরিয়া : ডোলা রে ডোলা রে

ছোটবেলা থেকেই ক্লাসিক্যাল নাচের তালিম নিয়েছেন ঐশ্বরিয়া। চমকদার নাচেও যে তিনি কম যান না, তা তো দর্শক দেখেছেনই। ‘দেবদাস’ ছবির ‘ডোলা রে’, ‘হাম দিল দে চুকে সনম’- এর ‘নিম্বুড়া’, ‘বান্টি আউর বাবলী’, ‘কাজরা রে’ কিংবা ‘ধুম টু’-এর ‘ধুম মাচালে’সহ সব নাচেই সেরা ঐশ্বরিয়া।

 

ক্যাটরিনা : শিলা কি জওয়ানি

‘বুম’ দিয়ে অভিষেক। তারপর ধীরে ধীরে অভিনয়ে যোগ্যতা অর্জন করতে হয়েছে ক্যাটরিনাকে। তবে বড় পর্দায় তাঁর আকর্ষণীয় উপস্থিতিই এখন পর্যন্ত বড় আকর্ষণ। আর এখানে বিশাল ভূমিকা ক্যাটের নাচের ক্ষমতা। ‘শিলা কি জওয়ানি’, ‘চিকনি চামেলি’, ‘কামলি’র মতো গানগুলোয় ক্যাটরিনার পারফরম্যান্স তো তাই বলে।

 

সর্বশেষ খবর