সোমবার, ২২ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

পরিচালনায়ও সফল যত চলচ্চিত্র তারকা

পরিচালনায়ও সফল যত চলচ্চিত্র তারকা

সুচন্দা

কথায় আছে, ‘যে রাঁধতে পারে সে চুলও বাঁধতে পারে’। ঢাকাই চলচ্চিত্রে অনেক শিল্পী অভিনয়ে এসে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন। পরবর্তীতে তাঁদের অনেকেই আবার চলচ্চিত্র পরিচালনায় এসেও সমান মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন। অভিনয় ও নির্মাণে এসে পেয়েছেন দর্শকপ্রিয়তা এবং জাতীয়সহ নানা সম্মাননা।  এমন কয়েকজন সফল তারকা-নির্মাতার কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

রাজ্জাক

১৯৬৮ সালে ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে নায়ক হয়ে সাড়া জাগান। প্রায় ৪০০ ছবিতে অভিনয় করেছেন এবং আজীবন সম্মাননাসহ পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৭ সালে প্রথম নির্মাণ করেন ‘অনন্ত প্রেম’। ব্যাপক জনপ্রিয় হয় ছবিটি। এরপর ‘বদনাম’, ‘চাপাডাঙ্গার বউ’, ‘সৎভাই’, ‘বাবা  কেন চাকর’, ‘উত্তর ফাল্গুনী’, ‘অভিযান’, ‘মৌচোর’, ‘আমি বাঁচতে চাই’সহ অনেক ছবি নির্মাণ করেন এবং নির্মাতা হিসেবেও সফল হন। নায়করাজ রাজ্জাক সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পদক’ও লাভ করেন।

 

সুচন্দা

ষাটের দশকে সুভাষ দত্তের ‘কাগজের নৌকা’র মাধ্যমে অভিনয়ে আসা এ নায়িকা প্রায় দেড় শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেন। বাংলার পাশাপাশি উর্দু ছবিতে অভিনয় করে পাকিস্তান থেকে নিগার পুরস্কারও লাভ করেন তিনি। ‘হাজার বছর ধরে’ ছবিগুলো নির্মাণ করে প্রশংসিত ও জাতীয় চলচ্চিত্র এবং বাচসাসসহ নানা সম্মাননায় ভূষিত হন।

 

কবরী

১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ ছবির নায়িকা হিসেবে অভিনয় শুরু। অভিনয় করেছেন দুই শতাধিক ছবিতে। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ২০০৫ সালে পরিচালনায় এসে নির্মাণ করেন ‘আয়না’ ছবিটি। এটি বেশ প্রশংসিত ও পুরস্কৃত হয়। সর্বশেষ গত বছর প্রয়াণের পূর্ব মুহূর্তে তিনি নির্মাণ করছিলেন ‘এই তুমি সেই তুমি’ শিরোনামের একটি ছবি।

 

সোহেল রানা

সোহেল রানা

মাসুদ পারভেজ নামে স্বাধীন দেশে প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবি ‘ওরা ১১ জন’ প্রযোজনা করেন। ১৯৭৩ সালে সোহেল রানা নাম ধারণ করে কাজী আনোয়ার হোসেনের বিখ্যাত কাল্পনিক চরিত্র মাসুদ রানার একটি গল্প অবলম্বনে মাসুদ রানা ছবির নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং একই ছবির মাধ্যমে তিনি মাসুদ পারভেজ নামে পরিচালক হিসেবেও যাত্রা শুরু করেন। দেড় শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেন ও জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হন। এ ছাড়া ২০১৯ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা লাভ করেন। তাঁর পরিচালিত উল্লেখযোগ্য ছবি হচ্ছে- ‘এপার ওপার’, ‘গুনাহগার’, ‘জবাব’, ‘যাদুনগর’, ‘জীবন নৌকা’।

 

আলমগীর

আলমগীর

১৯৭৩ সালে ‘আমার জন্মভূমি’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন আলমগীর। অসংখ্য ছবিতে দক্ষ অভিনয় দিয়ে দর্শক-ভালোবাসা কুড়ান। ১৯৮৫ সালে প্রথম নির্মাণ করেন ‘নিষ্পাপ’ ছবিটি। এরপর ‘নির্মম’, ‘বৌমা’, ‘মায়ের দোয়া’, ‘একটি সিনেমার গল্প’ ছবিগুলো দিয়ে নির্মাতা হিসেবেও সফল হন। তাঁর অভিনীত ও নির্মিত প্রতিটি ছবিই দর্শকপ্রিয়তা লাভ করে। নয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও আজীবন সম্মাননা পান তিনি।

 

বুলবুল আহমেদ

সত্তরের দশকে অভিনয়ে এসে ‘জীবন নিয়ে জুয়া’, ‘ওয়াদা’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘আরাধনা’, ‘সীমানা পেরিয়ে’, ‘সূর্যকন্যা’, ‘দেবদাস’, ‘ছোট মা’, ‘সোহাগ’, ‘ঘরসংসার’, ‘বৌরানী’সহ অসংখ্য ছবির জনপ্রিয় এ নায়ক আশির দশকে নির্মাণ করেন ‘ভালো মানুষ’, ‘মহানায়ক’, ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’সহ বেশ কিছু ছবি।  তাঁর অভিনীত ও নির্মিত সব ছবিই সফল হয়।

 

ইলিয়াস কাঞ্চন

ইলিয়াস কাঞ্চন

১৯৭৭ সালে বসুন্ধরা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু। তিন শটিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এই জনপ্রিয় অভিনেতা। তাঁর অভিনীত বেদের মেয়ে জোছনা (১৯৮৯) ছবিটি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সর্বাধিক ব্যবসাসফল ও জনপ্রিয় চলচ্চিত্র হিসেবে স্বীকৃত। তিনি একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন। ২০০৮ সালে তিনি প্রথম পরিচালনা করেন ‘বাবা আমার বাবা’ ছবিটি। এটি জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর ‘মায়ের স্বপ্ন’ নামে আরেকটি ছবি পরিচালনা করে খ্যাতি পান।

 

রহমান

১৯৬০ সালে ‘হারানো দিন’ ছবির মাধ্যমে অভিনয়ে এসে খ্যাতি পান।  ১৯৬৭ সালে নির্মাণ করেন ‘দরশন’। এটি বাম্পার হিট হয়। এরপর আরও অনেক ছবি নির্মাণ করে অভিনেতার মতো নির্মাতা হিসেবেও সফল হন তিনি।

 

মৌসুমী

মৌসুমী

১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবিটি দিয়ে চলচ্চিত্রে মৌসুমীর অভিষেক। এরপর জনপ্রিয়তার পথ ধরে একাধারে এগিয়ে চলেছেন তিনি। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এ ছাড়াও অর্জন করেন একাধিক বাচসাস পুরস্কার। ২০০৩ সালে চলচ্চিত্র কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি পরিচালনার মাধ্যমে একজন পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন ও সফল হন।  ২০০৫ সালে ‘মেহের নিগার’ ছবিটি নির্মাণ করেও জনপ্রিয় নির্মাতা হন তিনি।

সর্বশেষ খবর