বুধবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
ই ন্টা র ভি উ

দুই সভাপতি প্রার্থীর প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি

দুই সভাপতি প্রার্থীর প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির আসন্ন নির্বাচনে দুটি প্যানেল থেকে সভাপতি পদে নির্বাচন করছেন দুই শিল্পী। ইলিয়াস কাঞ্চন ও মিশা সওদাগর। বিজয়ী হলে কার মিশন কেমন হবে?  তাঁদের দেওয়া সেই প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরেছেন - আলাউদ্দীন মাজিদ

 

সব সমিতিকে একসঙ্গে নিয়ে কাজ করব : ইলিয়াস কাঞ্চন

ভোটের মূল্য বুঝতে হবে এবং যোগ্য লোককে দায়িত্বের চেয়ারে বসাতে হবে। এটিই আমার প্রত্যাশা

 

হুট করেই নির্বাচনে এলেন? মূল মিশনটা কী?

ঠিকই বলেছেন, আসলে এই হুট করে নির্বাচনে আসার কারণটা হলো বর্তমানে শিল্পীদের জীবনমান ও চলচ্চিত্রের যে অবস্থা দেখছি তাতে মনে হচ্ছে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে  এগোতে না পারায় পুরো শিল্পটিই স্থবির হয়ে পড়েছে। তাই সময়ের পথে হেঁটে শুধু সমিতি নয়, পুরো শিল্পটিকে ঢেলে সাজাতে চাই। চলচ্চিত্রের সবার এবং সব সংগঠনের সঙ্গে বসে একতাবদ্ধ হয়ে শিল্পী ও শিল্পের উন্নয়নের মিশন নিয়েই নির্বাচনে এসেছি। কারণ চলচ্চিত্র শিল্প না থাকলে শিল্পী সমিতি থাকবে কীভাবে?  আমার মধ্যে কোনো দুর্নীতি নেই। পৃথিবীতে এসেছি সবার কল্যাণ করতে। সব সদস্যের প্রতি অনুরোধ, প্লিজ আপনাদের ভোটের মূল্য বুঝতে হবে এবং যোগ্য লোককে দায়িত্বের চেয়ারে বসাতে হবে। এটিই আমার প্রত্যাশা।

 

ভোটের সময় সবাই তো প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরিতে ভাসায়, আপনি কতটা ব্যতিক্রম?

এই পরীক্ষায় আমি বারবার উত্তীর্ণ হয়েছি। যখন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলাম এবং পরে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনসহ নানা কাজে যে সফলতা অর্জন করেছি তা সবার জানা। শিল্পীরা কিন্তু সব সময় চলচ্চিত্রের উন্নয়নের চেষ্টা করেন। শিল্পীরা ক্যাপাসিটি ট্যাক্স দূর করার জন্য আন্দোলন করায় তখন ছবির সংখ্যা বেড়ে যায়। শিল্পী-সম্মানীও দ্বিগুণ হয়। ডাইরেক্টর, প্রোডিউসার, আর্টিস্ট, টেকনিশিয়ানরা রমরমা অবস্থা পার করেন। সেই জায়গা থেকে বলতে চাই, ফিল্মের যে কোনো সংকট যখনই আসে, তখনই শিল্পীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এখন যেসব শিল্পী বেকার, যাঁদের কাজ নেই, আটা, গম, চাল দিয়ে কতদিন তাঁদের বাঁচিয়ে রাখা যাবে, কিংবা ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচিয়ে রাখবেন। ক্যাপাসিটি ট্যাক্সের সময় কাজ বাড়ানোর জন্য শিল্পীরা যে রকম মার খেয়েছেন প্রয়োজনে এখনকার সংকট দূর করতেও আমাদের অনেক কিছু করতে হবে। সিনেমা হলের উন্নয়নে সরকার ১ হাজার কোটি টাকা দিয়ে রেখেছে। কিন্তু পর্যাপ্ত ছবি ও দর্শক না থাকায় সিনেমা হল মালিকরা এই ঋণ নিতে সাহস পাচ্ছেন না। আসলে আমাদের এখন পলিসি তৈরি করতে হবে। এটা মনে করেই আমি এসেছি। যথাযথ পলিসি অ্যাপ্লাই করলেই ছবির সংখ্যা বাড়বে।  ছবির সংখ্যা বাড়লে সবাই কাজ করতে পারবে।  এতে রাষ্ট্রও উপকৃত হবে।


 

ভূমিহীন শিল্পীদের ভূমির ব্যবস্থা করব : মিশা সওদাগর

সেবা করাটা আমি এনজয় করি। সেবা করা আমার ধর্ম। আজীবন সবার কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই

 

তৃতীয়বারের মতো সভাপতি পদে নির্বাচন করছেন,  প্রার্থী হিসেবে আপনি নিজেকে কতটা যোগ্য মনে করেন?

সবার ভালোবাসা আর অনুরোধে আবার প্রার্থী হয়েছি। চলচ্চিত্রের সিনিয়র থেকে জুনিয়র- সব শিল্পীই আমাকে ও আমার সাংগঠনিক কাজকে ভালোবাসেন। তাঁরা আমাকে সমিতির পদ থেকে ছাড়তে চান না। সবার অনুরোধ রাখতে গিয়েই আবার নির্বাচন করছি। সবার কথা হলো, যে কোনো প্রয়োজনে  আমাকে তাঁরা সবসময় পাশে পায়। তাই আমাকে কেউই হারাতে চান না। মূল কথা হলো সেবা করাটা আমি এনজয় করি। সেবা করা আমার ধর্ম। আজীবন সবার কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই।

 

গত টার্মে সভাপতি হিসেবে কতটা সেবা দিতে পেরেছেন?

নিঃসন্দেহে নব্বই ভাগ সেবা দিতে পেরেছি বলে মনে করি। করোনাকালের কথাই ধরুন, কবরী আপা থেকে শুরু করে শিল্পীদের মধ্যে যাঁরাই মারা গেছেন তাঁদের ধারেকাছে আমি, জায়েদ খান ও কমিটির অন্যরা ছাড়া কেউই যাননি। অসুস্থদের পাশে কেউ দাঁড়াননি। অসহায়দের ১৮ বারের মতো খাবার পৌঁছে দিয়েছি। সমিতির ফান্ডে ১২ লাখ টাকা জমা রেখেছি। সরকারের সহযেগিতায় শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট করেছি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, অনুদান কমিটি ও সেন্সর বোর্ডসহ বিভিন্ন সেক্টরের জুরি বোর্ডে শিল্পীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেছি। যা আগে কখনই ছিল না। এসব কী কিছুটা হলেও অর্জন নয়?

 

অপূর্ণতার হিসাব কতটুকু?

অবশ্যই অপূর্ণতা কিছুটা রয়ে গেছে। যেমন সমিতির ফান্ডে ৫০ লাখ টাকা রাখতে চেয়েছিলাম। এবার বিজয়ী হলে তা পূরণ করব ইনশা আল্লাহ। ভূমিহীন শিল্পীদের জন্য সরকারি সহযোগিতায় ভূমির ব্যবস্থা করব। এ ছাড়া শিল্পী ও চলচ্চিত্রের উন্নয়নে আরও অনেক পরিকল্পনা রয়েছে।

 

সমিতির যেসব সদস্যের সদস্যপদ বাতিল করেছিলেন তাঁদের কী হবে?

এদের মধ্য থেকে যোগ্যদের বাছাই করে সহযোগী থেকে পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়া হবে। তাঁদের সদস্যপদের বিষয়ে অ্যাডভাইজার কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ওই কমিটিতে ছিলেন- অভিনেতা আলমগীর, সোহেল রানা, উজ্জ্বল, রিয়াজ, নিপুণ, ফেরদৌসসহ অনেকে। আর এখন অনেকে দোষ দিচ্ছেন আমাকে ও জায়েদ খানকে।  অ্যাডভাইজার কমিটি ও সমিতির গঠনতন্ত্রের বাইরে কোনো বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আমার কমিটি কখনো নেয়নি।

সর্বশেষ খবর