বুধবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

এফডিসিতে ঘটে যাওয়া যত ঘটনা

বিতর্ক যেন থামছেই না সদ্য অনুষ্ঠিত শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে। বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত জায়েদ খান ও পরাজিত প্রার্থী নিপুণের পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তাল এফডিসি। প্রতিদিন ঘটছে নানা ঘটনা। এমন কিছু ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

এফডিসিতে ঘটে যাওয়া যত ঘটনা

নিপুণের বিরুদ্ধে মামলা করবেন জায়েদ

রবিবার প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ডেকে জায়েদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ আনেন নিপুণ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুনকে নিয়ে ‘জালিয়াতি’র মাধ্যমে নির্বাচনে জায়েদ পাস করেছেন অভিযোগ তুলে নিপুণ আবারও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন দাবি করেন। ওই দিন সংবাদ সম্মেলনে নিপুণ ম্যাসেঞ্জারে চ্যাটের কিছু স্ক্রিনশট দেখান। তিনি দাবি করেন, এই স্ক্রিনশটগুলো জায়েদ খানের। নিপুণের এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলনে জায়েদ বলেন, নিপুণের বিরুদ্ধে আমি বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করব। কারণ ডিজিটাল আইনে স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ আছে, কোনো সমর্থিত সূত্র কিংবা সত্যিকারের সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়া কারও ছবি, কারও লেখা আপনি কোনো ডিজিটাল মাধ্যমে ব্যবহার করে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অপপ্রাচার বা মিথ্যা প্রচার চালাতে পারবেন না। আমি মনে করি, যিনি সংবাদ সম্মেলনে স্ক্রিনশটগুলো দেখিয়েছেন, শুধু তিনি নন, তাঁর সঙ্গে যাঁরা সহায়ক হিসেবে ছিলেন, সবার নামে আমি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করব। আমার স্ক্রিনশটটি তিনি যাচাই-বাছাই না করে আমার নাম বলে নিজে পড়ে দেশবাসীর সামনে আমাকে ছোট করেছেন।  এটা একটা মানহানিকর কাজ। মামলাটি করব।

 

আমি এফডিসির এমডি হওয়ার যোগ্যতা রাখি না : আলমগীর

সোমবার থেকেই শোনা যায়, এফডিসির বর্তমান এমডির অপসারণ দাবি করে অনেকে তাঁর পরিবর্তে সেই পদে অভিনেতা আলমগীরকে চাইছেন। এ বিষয়ে এই অভিনেতা বলেন, ‘আমি এফডিসির এমডি হওয়ার যোগ্যতা রাখি না। আমি নিজেকে যোগ্য মনে করি না। এফডিসির এমডি হলে তা আরও পাঁচ-সাত বছর আগেই হতে পারতাম।’ আলমগীর বলেন, ‘আগেও এই পদে চলচ্চিত্রের অনেকেই ছিলেন, কিন্তু তাতে কি আমি যে আজ এখানে বসে সমালোচনা করলাম, ওই পদে আমি বসলে তিন বছর পর একই সমালোচনা আমাকে নিয়েও হবে।’

 

সাধারণ সম্পাদক পদে ফের ভোট গণনা চান নিপুণ

শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে ফের ভোট ও ভোট গণনার দাবি করেছেন নিপুণ এবং তাঁর প্যানেল। শিল্পী সমিতির ভোট সুষ্ঠু হয়নি বলে অভিযোগ তুলে নিপুণ সাধারণ সম্পাদক পদে আবারও ভোটের দাবি জানিয়েছেন। তাঁর এ দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন সভাপতি পদে জয়ী ইলিয়াস কাঞ্চন। নিপুণ এই নির্বাচনে কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদ থেকে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। এদিকে নিপুণের আবেদনে একবার ভোট পুনঃগণনা হয় এবং তাতে আগের ফলাফলই বহাল থাকে। তারপরও আবার ভোট পুনঃগণনা চান নিপুণ। তাঁর এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন বলেন, ফলাফল প্রকাশের পর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যে কোনো অভিযোগ নিয়ে আপিল করতে হয়। এ সময়ের পর কারও কোনো অভিযোগ থাকলে কমিশনের কিছু করার এখতিয়ার থাকে না, আদালতে যেতে পারেন অভিযোগকারী।

 

কাঞ্চনদের ছাড়াই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে জায়েদ খান নিজের প্যানেলের জয়ী প্রার্থীদের নিয়ে রবিবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বাসায় উপস্থিত হন। সেখানে ছিলেন না সভাপতি পদে জয় পাওয়া ইলিয়াস কাঞ্চনসহ তাঁর প্যানেলের অন্য জয়ী প্রার্থীরা। সোমবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন জায়েদ খান নিজেই। নির্বাচন-পরবর্তী সৌজন্য সাক্ষাৎকারের জন্য সেখানে গিয়েছিলেন বলে ক্যাপশনে উল্লেখ করেন তিনি। এ নিয়ে কাঞ্চন প্যানেলের জয়ীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

 

মুনমুনকে কী দিয়েছিলেন জায়েদ 

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের দিন মুনমুনকে কী দিয়েছিলেন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জায়েদ খান? অভিযোগ তোলা হয়, জায়েদ খানের কাছ থেকে টাকা নিয়ে হাতে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগে রেখেছেন মুনমুন। এ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে মুনমুন জানান, নির্বাচনের দিন জায়েদ খানের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের সময় ভ্যানিটি ব্যাগের মধ্যে টাকার নোট নয়, নিজের ব্যবহৃত কালো মাস্কটি রেখেছিলেন তিনি। আর জায়েদ তাঁকে টাকা নয়, তাঁদের প্যানেল পরিচিতির লিফলেট দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

 

টয়লেট নিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চনের অভিযোগ

সভাপতি পদে জয়ী ইলিয়াস কাঞ্চন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ভাবতে কষ্ট হয়, এই নির্বাচনে আমার মতো একজন শিল্পীকে প্রস্রাব করার জন্য জায়গা খুঁজতে হয়েছে। পরে দেয়ালে দাঁড়িয়ে আমি প্রস্রাব করেছি। নির্বাচন কমিশনার আমাদের প্যানেলের অংশের জন্য একটি টয়লেটের ব্যবস্থাও রাখেননি। এতটাই প্রতিকূল ছিল আমাদের জন্য।

 

নিপুণের সঙ্গে ফান করেছি

পীরজাদা

নিপুণ অভিযোগ করেছেন নির্বাচনের দিন তাঁর কাছে দুটি চুমু চেয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুন। বিষয়টি অস্বীকার করেন পীরজাদা। তিনি বলেন, ‘এটা সত্য নয়। প্রকাশ্যে এমন কিছু করাটা কি স্বাভাবিক মনে হয় কারও কাছে? এটা একটা ফান করেছি। ফানটাকে সবার সামনে নিয়ে আসা নিপুণের ঠিক হয়নি।’ নিপুণ অভিযোগ করে বলেছিলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন ভোটের দিন সকালে আমার কাছে দুটো চুমু চেয়েছিলেন।  সেখানে আমাদের প্যানেলের  জেসমিন ছিল।’

 

মুনমুনের প্রশ্ন          

তুমি নেত্রী হতে চাইছ?

নিপুণের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে মুনমুন বলেন, জায়েদ কখনই কোনো শিল্পীর বিরুদ্ধে আঙুল তোলেননি। বিপদ-আপদে সবসময় শিল্পীদের পাশে ছিলেন। তিনি আমাদের নেতা হবেন না কেন? যে নিপুণ আমার ওপর আজকে আঙুল তুললেন, তুমি আমাদের নেত্রী হতে চাইছ?

সর্বশেষ খবর