মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা
বিশেষ সাক্ষাৎকার : আজমেরী হক বাঁধন

দেশকে রিপ্রেজেন্টস করছি এটা আমার কাছে গর্বের

দেশকে রিপ্রেজেন্টস করছি এটা আমার কাছে গর্বের
কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সাদের ‘রেহানা মরিয়ম নুর’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে দর্শকমুগ্ধতা কেড়েছেন আজমেরী হক বাঁধন। ভারতের কেরালায় সিনেমাটি প্রদর্শিত হওয়ার পর ১৬ এপ্রিল দুপুরে মার্কিন মুলুকের টেক্সাসের অস্ট্রিনে ‘ইন্ডি মিম ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এ অংশ নেয় এই চলচ্চিত্রটি। উৎসবে অংশ নিতে ফ্যাশনেবল সাজে সেখানে ছিলেন বাঁধন। সেখান থেকে আয়োজনটির সার্বিক বিষয় নিয়ে বাঁধনের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

অবশেষে উড়ে গেলেন মার্কিন মুলুকে, কেমন কাটছে?

১৩ এপ্রিল এসেছি। আমেরিকার টেক্সাসের অস্ট্রিনে এবং নিউইয়র্কে ‘রেহানা মরিয়ম নুর’ প্রদর্শিত হচ্ছে বলেই এই উড়ে আসা। এরই মধ্যে ১৬ এপ্রিল দুপুরে টেক্সাসের অস্ট্রিনে ‘ইন্ডি মিম ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এ অংশ নিয়েছে আমার অভিনীত চলচ্চিত্রটি। খুবই আনন্দে কাটছে দিন। সবার এত এত এপ্রিসিয়েশন। এটা সত্যিই ভালো লাগার বিষয়।

 

উৎসবটি নিয়ে বিস্তারিত জানাবেন কি?

অবশ্যই। এই ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের দুটি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়েছে। ১৬ এপ্রিল দুপুরে ‘রেহানা মরিয়ম নুর’ স্ক্রিনিং হয়। একটি মাত্র শো ছিল। বিশ্বাস করেন, পুরো হল হাউসফুল! এই ফেস্টিভ্যালে আমার চলচ্চিত্রটি দেখতে ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে বিখ্যাত সব প্রযোজক, ডিরেক্টর, অভিনেতা এসেছিলেন। আমেরিকায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা দল বেঁধে চলচ্চিত্রটি দেখতে এসেছেন। খুবই ভালো লেগেছে এ বিষয়টি। চলচ্চিত্রটি শেষ হওয়ার পর হাউস থেকে বের হয়ে সবাই অভিনয়, সিনেমার কালার, সংগীত, চিত্রনাট্যসহ নির্মাণদক্ষতা নিয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বাইরে বের হয়ে তাঁরা দীর্ঘ সময় ধরে আমার সঙ্গে আড্ডা দিয়েছেন, চলচ্চিত্রটিতে আমার অভিনয়ের ভালো লাগা দিক সম্পর্কে বলেছেন, ফটোসেশন করেছেন। মজার বিষয় হচ্ছে, বিখ্যাত নির্মাতা নলিন কুমার পান্ডে তাঁর মাথা থেকে হ্যাট খুলে আমাকে পরিয়ে দিয়েছেন। এটা সত্যিই আনন্দের! অন্যদিকে অভিনেতা রজত কাপুরসহ বলিউডের অন্যরা আমার পারফরমেন্সের ভক্ত হয়েছেন,  প্রশংসা করেছেন; একসঙ্গে দাঁড়িয়ে তালিও দিয়েছেন। আমি খুবই আপ্লুত ও মুগ্ধ। আমি বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্টস করছি, তা ভেবে গর্ব হচ্ছিল তখন। আসলেই আমি সৌভাগ্যবতী। এত রথী-মহারথীর সঙ্গে না মিশলে বুঝতেই পারতাম না আমার জন্য সুন্দর একটি পৃথিবী অপেক্ষা করেছিল। খুবই ইনজয় করছি। ভয়, দ্বিধা, অস্বস্তি ছাড়া সময় কাটছে। এই অর্জন কিন্তু আমার একার নয়, পুরো ‘রেহানা মরিয়ম নুর’ টিমের।

 

চলচ্চিত্রটি দেখার পর  সেখানকার বাঙালি কমিউনিটির সবার অনুভূতি কেমন ছিল?

প্রবাসী বাংলাদেশিরা যে দেশীয় চলচ্চিত্র দেখতে উন্মুখ হয়ে থাকেন, তা ওই উৎসবে না গেলে বুঝতেই পারতাম না। এটা অভাবনীয় ব্যাপার ছিল। পুরো বাংলাদেশকে সেদিন দেখতে পেয়েছি অচেনা জায়গায়। অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি চলচ্চিত্রটি দেখতে এসেছেন। অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন, ফটোসেশন করেছেন। এটা যে কি ভালো লাগার, বোঝাতে পারব না! তবে এ উৎসবে বাঙালিদের একত্রিত করতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন রবিউল ইসলাম ও ফারিয়া হোসেন আপু। তাঁরা না থাকলে বাঙালি কমিউনিটির সবাইকে এক জায়গায় আনা সম্ভব হতো না। তাঁদের জানাই অনেক কৃতজ্ঞতা।

 

টেক্সাসের উৎসব তো শেষ। নিউইয়র্কে যাচ্ছেন কবে?

এখানে কিছুদিন ঘুরব, কিছু পরিচিত মানুষের সঙ্গে আড্ডা দেব। ২৫ তারিখের পর যাব নিউইয়র্কে উৎসবে যোগ দিতে। তিন দিন উৎসব-২৯ তারিখ থেকে ১ তারিখ। সেখানে ‘রেহানা মরিয়ম নুর’ সিনেমাটি প্রদর্শিত হবে। আমার তো মনে হয়, ঈদের সময় প্লেনে চড়েই কাটবে সময়।

 

পরবর্তীতে আর কোন কোন উৎসবে অংশ নিচ্ছেন?

নিউইয়র্কের পর স্পেনে ৩০ তারিখ একটি উৎসব রয়েছে। ‘এলে’তে স্ক্রিনিং হবে আমার চলচ্চিত্রটি। তবে এটিতে অংশ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কারণ উৎসবটি নিউইয়র্ক উৎসবের সময়ই হচ্ছে। এরপর কানাডায় প্রদর্শিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানেও যাব কি না দ্বিধায় রয়েছি।

 

বিশাল ভরদ্বাজেরখুফিয়া আপডেট কী?

প্রথমবারের মতো হিন্দি ফিল্মে অভিনয়, আবার বিখ্যাত পরিচালক! সত্যিই সৌভাগ্যের। আমি যতদূর জানি, এটির শুটিং শেষ। আর এ বছরই প্রদর্শিত হবে ফিল্মটি। আরেকটি বিষয়, ‘খুফিয়া’য় অভিনয় করতে গিয়ে বলিউড অভিনেত্রী টাবুর কাছ থেকে একটি পোশাক উপহার পেয়েছিলাম। পোশাকটি পরার জন্য একটা বিশেষ উপলক্ষের অপেক্ষায় ছিলাম। সেটি কিন্তু ‘ইন্ডি মিম ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এ পরেছি।

 

নতুন কোন ওয়েব ফিল্ম বা সিরিজে বাঁধনকে দেখা যাবে?

এখনো আসলে জানি না। অভিনয়টা আমার প্যাশন। ভালো চরিত্র ও গল্প পেলে অবশ্যই করব। আমি ভালো কাজটাই করতে চাই, তবে খুব বেশি নয়। একসময় বেঁচে থাকার জন্য সব করেছি। আগে হয়তো ২০টা নাটকে যা আসত, এখন দুটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করলেই সেই চাহিদা পূরণ হয়। আমি কিন্তু সেই হিসাব কষেই নিজেকে থামিয়েছি।

 

মেয়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ নিয়মিত হয়?

দেশে মেয়েকে রেখে এসেছি, অনেক দিন হলো। তবে, প্রতিদিনই কথা হয় ভিডিও কলে। মেয়ে কল দেয়, সঙ্গে মা থাকেন। সে আমাকে নিয়ে প্রাউড। অনেক কথা হয় মা-মেয়ের। দেশের সবাই আমার এই অর্জনে গর্বিত।

সর্বশেষ খবর