শিরোনাম
রবিবার, ১ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

ঈদ আনন্দ

ঈদ আনন্দ

ইত্যাদি এখন ঈদ ঐতিহ্য : হানিফ সংকেত

আনন্দের উৎসব মানেই ঈদ। ঈদে বড় আর ছোট পর্দায় আনন্দ অনুষ্ঠান থাকবে না এমনটা কখনই হওয়ার নয়। এবারের ঈদেও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না।  দুই পর্দা জুড়েই থাকছে দর্শকমন রাঙাতে আকর্ষণীয় সব আয়োজন। নতুন সিনেমা, নাটক, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান, গান আরও কত কি। আর ঈদের এসব অনুষ্ঠান মানেই দর্শকের মনে ঈদের আনন্দ বহুগুণে বাড়িয়ে তোলা। এমনই কিছু আয়োজনের কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

ইত্যাদিকে কেন গণমানুষের অনুষ্ঠান বলা হয়?

টেলিভিশন তো কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য নয়। টেলিভিশন সবার। তাই ইত্যাদিতে আমরা সমাজের উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত, খেটে খাওয়া সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কথা বলি। ওঠে আসে তাদের সুখ-দুঃখের কথা, ওঠে আসে আগামী প্রজন্মের বিজয় ও স্বপ্নের কথা। আর সে জন্যই হয়তো বলা হয় ইত্যাদি গণমানুষের অনুষ্ঠান।

এবারের ঈদের বিশেষত্ব কী? কী কী থাকছে অনুষ্ঠানে?

ইত্যাদির প্রতিটি পর্বই মূল পরিকল্পনার সঙ্গে সংগতি রেখে সমসাময়িক বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করা হয়। এ জন্যই  হয়তো দর্শকরা প্রতিটি বিষয়ে বৈচিত্র্য ও আলাদা স্বাদ খুঁজে পায়। এবারের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে একটি ভিন্নধর্মী দেশাত্মবোধক গান। গানটির কথা ও সুরে বৈচিত্র্য খুঁজে পাবে দর্শক। এবারের ইত্যাদিতে নৃত্যেও বৈচিত্র্য আনতে চেষ্টা করেছি। রয়েছে পারিবারিক বন্ধন নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী পরিবেশনা। রয়েছে একাল-সেকালের দস্যু সংলাপ, এক দম্পতির তিন সময়ের ঈদ উদযাপনের কথা। রয়েছে করোনা নিয়ে একটি অন্যরকম গান। এবারকার দলীয় সংগীতে ওঠে এসেছে সমাজের নানা অনিয়ম, অসঙ্গতির চিত্র। দর্শকপর্বেও রয়েছে তারকা বনাম দর্শকদের মুখোমুখি অভিনয়। উল্লেখ্য, প্রতিটি পর্বেই দেশের খ্যাতিমান শিল্পীরা অংশগ্রহণ করেছেন। এ ছাড়াও বিদেশে ঈদের খাবার এবং গ্রিস প্রবাসী কজন কৃষিকর্মীর প্রবাসের ঈদের অনুভূতি নিয়েও একটি বিশেষ পর্ব রয়েছে। আর অন্যান্য নিয়মিত পর্ব তো রয়েছেই।

ঈদ ইত্যাদির একটি জনপ্রিয় পর্ব হচ্ছে বিদেশিদের দিয়ে অভিনয়। প্রতিবার এত বিদেশি কীভাবে জোগাড় করেন? এই পর্বের নির্মাণ সম্পর্কে জানতে চাই। করোনায় কোনো প্রভাব ফেলেছে কী?

জোগাড় করতে হয় না, দর্শকরা যেমন এই পর্বটির জন্য অপেক্ষায় থাকেন, তেমনি ঢাকায় বসবাসরত বিদেশিরাও অপেক্ষা করতে থাকেন কখন তাঁদের ডাক পড়বে ইত্যাদি থেকে। তাঁরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই পর্বটিতে অংশগ্রহণ করেন। তবে করোনার কারণে গত দুই বছর পর্বটি করা যায়নি। করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় সীমিত সংখ্যক বিদেশিকে নিয়ে এবারের পর্বটি করা হয়েছে।

 

হানিফ সংকেত। বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। অনবদ্য প্রতিভা, কর্ম নৈপুণ্য ও সাহসিকতায় এখন নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। কয়েক দশক ধরে এ দেশের মিডিয়া জগতে তিনি সবার জন্য পথপ্রদর্শক হয়ে আছেন। সময়কে ধারণ করে বিষয়-বৈচিত্র্যে সাজান তাঁর অনুষ্ঠান।

 

ইত্যাদির প্রাপ্তি কী?

এই বিষয়টি ওভাবে চিন্তা করিনি। তবে প্রধান প্রাপ্তি মানুষের ভালোবাসা ও কিছু অসহায় মানুষ ও তাদের পরিবারের মুখের হাসি। যখন দেখি ইত্যাদিতে দেখানো প্রচারবিমুখ মানুষগুলো রাষ্ট্রীয় সম্মান পান, ইত্যাদির প্রতিবেদন দেখে কেউ অনুপ্রাণিত হয়ে জনকল্যাণে এগিয়ে আসেন তখন আনন্দ পাই। যখন দেখি এসব মানুষের কাজ দেখে মমতায় আর্দ্র হয়েছে কোটি দর্শকের চোখ। তখন আবেগে আপ্লুত হই। এদের কারোরই পুরস্কার পেয়ে দায়িত্ব বাড়েনি। বরং তাঁরা দায়িত্ববান বলেই পুরস্কৃত হয়েছেন।

প্রতি বছর দুই ঈদে দুটি নাটক নির্মাণ করেন। বরাবরের মতো এবার নির্মাণ করেছেন পারিবারিক গল্পে সামাজিক বক্তব্যনির্ভর নাটক। এবারের নাটকটি সম্পর্কে কিছু বলুন।

আমি বেশি নাটক নির্মাণ করি না। আপনি নিজেই বলছেন, আমি পারিবারিক ও সামাজিক বক্তব্যনির্ভর নাটক করি, আসলে তাই। তবে যে কটিই নির্মাণ করি চেষ্টা করি, যাতে পরিবারের সবাই মিলে নাটকটি দেখতে পারেন। গল্পের মাধ্যমে সমাজের ক্ষতগুলোকে তুলে ধরার চেষ্টা করি।

সব শেষে জানতে চাইব, অনুষ্ঠানের পর যখন দর্শকের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা পান তখন কেমন লাগে?

মনে হয় আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। দর্শকদের এই প্রতিক্রিয়া অন্তর থেকে দেওয়া।  আমাদের কাছে দর্শক রায়ই চূড়ান্ত। আর এই ভালোবাসায় ধন্য হয়েই আমরা তিনটি দশক পাড়ি দিয়ে চার দশকের পথে চলছি।

 

ড. মাহফুজুর রহমানের তুমি আমার প্রেয়সী

প্রতিবারের মতো এবারের ঈদেও গান শোনাবেন বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান। তাঁর একক সংগীতানুষ্ঠানের নাম ‘তুমি আমার প্রেয়সী’।

  প্রচার হবে ঈদের দিন রাত ১০টা ৩০ মিনিটে। এটিএন বাংলা সূত্রে জানা গেছে, এবারের অনুষ্ঠানে রয়েছে মোট ১০টি গান। অ্যালবামের গানগুলোতে সুরারোপ করেছেন মান্নান মোহাম্মদ ও রাজেশ ঘোষ। গানের কথা লিখেছেন শেখ রেজা শানু, নাজমা মোহাম্মদ ও রাজেশ ঘোষ।

অ্যালবামে রয়েছে প্রেম করলেই, ভালোবাসা দাও, চাই চাই চাই, আমার জীবন, নয়নে রাখিব নয়ন, মুক্তি চেয়েছ, লক্ষ্মী মেয়ে, ললনা, পরান পাখি ও প্রেয়সী শিরোনামের গান। গানগুলো চিত্রায়িত হয়েছে এটিএন বাংলার স্টুডিওতে।  ২০১৬ সালের পবিত্র ঈদুল আজহায় নিজের টেলিভিশন চ্যানেলে একক সংগীতানুষ্ঠানে গান পরিবেশন করে আলোচনা-সমালোচনায় আসেন ড. মাহফুজুর রহমান।

 

ঈদের ছবি দিয়ে ঘুরে দাঁড়াবে চলচ্চিত্র জগৎ : শাকিব

ঈদে আপনার ছবি দুটি নিয়ে দর্শকদের কী বলবেন?

আমার প্রিয় দর্শকদের আবারও ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়ে বলব দুটি অসাধারণ গল্প ও নির্মাণের ছবি হলো গলুই এবং বিদ্রোহী। ‘গলুই’ হলো পিরিওডিক্যাল রোমান্টিক ছবি। এতে বিনোদনের পাশাপাশি দেশের বিলুপ্তপ্রায় কৃষ্টি-কালচার ও ঐত্যিহ্যের চিত্র সুনিপুণভাবে তুলে ধরা হয়েছে। মানে আমাদের দেশের স্বকীয়তা ফুটিয়ে ওঠানো হয়েছে। যেমন বাংলার গান, নৌকাবাইচ ইত্যাদি। অন্যদিকে ‘বিদ্রোহী’ হলো অ্যাকশন ওরিয়েন্টেড ছবি। এটিতেও বিনোদনের পাশাপাশি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রয়েছে। করোনা-পরবর্তীকালে এ দুটিই হচ্ছে সিনেমা হলে মুক্তি পেতে যাওয়া আমার নতুন ছবি। আমার বিশ্বাস দর্শকের ভালোবাসায় এই সুন্দর, মার্জিত ও পরিচ্ছন্ন গল্পের ছবি দুটো সফল হবে এবং এই সফলতার মাধ্যমে আমাদের দেশের চলচ্চিত্র শিল্প আবার ঘুরে দাঁড়াবে।

আমার প্রিয় দর্শক-প্রদর্শকদের প্রতি রইল আসন্ন ঈদের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। সবার প্রতি আমার প্রত্যাশা ও অনুরোধ, আপনারা সিনেমা হলে গিয়ে ঈদের ছবিগুলো দেখুন ও দেশীয় চলচ্চিত্রের সুদিন ফিরিয়ে আনুন।

 

দর্শকের সঙ্গে ছবি দেখব : বুবলী

ঈদে আপনার বিদ্রোহী নিয়ে কী বলবেন?

ঈদে আমার ‘বিদ্রোহী’ ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে। ঈদের দিন সম্ভব হলে সিনেমা হলে গিয়ে দর্শকদের সঙ্গে বসে নিজের অভিনীত ছবিটি দেখব। 

এ ছাড়া দিনটি কীভাবে কাটবে?

ঈদের দিন বাসায় পরিবারের সঙ্গেই কাটাব। এ ছাড়া প্রতি ঈদে আমার হাতে তৈরি করা একটি স্পেশাল আইটেম থাকে খাবারে। এবারও ইচ্ছা আছে গরুর মাংসের কোনো একটি স্পেশাল আইটেম রাখার। একই সঙ্গে আমার দর্শক-ভক্তদের জানাই ঈদের শুভেচ্ছা। অনুরোধ আপনারা হলে গিয়ে ছবি দেখুন।

 

চাঁদরাতে জেমসের গান

 জেমস, যাঁর গান না থাকলে জমে না কোনো উৎসবের আসর। এমন একটা সময় ছিল বিশেষ করে চাঁদরাতে প্রকাশ হতো জেমসের নতুন গান। অবশেষে এক যুগ পর ঈদের চাঁদরাতে নতুন গান নিয়ে আসছেন দেশের জনপ্রিয় এই রকস্টার।

 জেমস জানালেন কেন এত দিন পর গান করছেন। মঞ্চে নির্ধারিত সময়ে বক্তব্যের জন্য বাংলাদেশের এই রকস্টারকে ডাকা হয়। কেন এত দিন পর গান? এ প্রশ্নের জবাবে অকপটেই জেমস বললেন, ‘কারণ একটাই যে, ওরা আমাকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছে, বলেছে আপনার যা ইচ্ছা যেভাবে ইচ্ছা গান করতে পারেন, এটা একজন শিল্পীর জন্য অনেক সম্মানের। নিজের মতো করে কাজ করা তো একজন শিল্পীর জন্য ভালো।’ বসুন্ধরার অ্যাপ্রোচ ভালো লাগার কারণেই নতুন গান করলেন বলে জানালেন লেইস ফিতা লেইস খ্যাত এই গায়ক। তিনি বলেন, এত দিন পর, মে বি বসুন্ধরার অ্যাপ্রোচটা আমার ভালো লেগেছে। এটা বোধ হয়, কেন আমি নতুন গান করছি, অ্যাপ্রোচটা ভালো লেগে গেছে। এ জন্যই করছি গান। চাঁদরাতে বসুন্ধরা ডিজিটাল নামের ইউটিউবে গানটি মুক্তি পাবে। গানটি পৃষ্ঠপোষকতা করছে বসুন্ধরা মসলা।

 

উৎসব সবারই : পূজা

ঈদে আপনার দুটি ছবি, কোনটিকে এগিয়ে রাখবেন?

শান যদি হয় বাবা গলুই আমার মা। আবার গলুই যদি মা হয় তবে শান আমার কাছে বাবা। একটাকে বাদ দিয়ে আরেকটিকে ভাবতে পারি না। দুটি ছবিই আমার কাছে সমান প্রিয়। দুুটি ছবির গল্প ও বাণী একেবারেই ভিন্ন। দুটিতেই সুস্থ বিনোদন রয়েছে শতভাগ। আমার বিশ্বাস দর্শক দুটি ছবিই বারবার দেখবেন এবং ভিন্ন আমেজ ও মজার অনুভূতি পাবেন।

গলুই ও শান নিয়ে আলাদা করে কিছু বলবেন?

গলুই হচ্ছে নিজস্ব সংস্কৃতিতে মোড়ানো দেশজ ছবি। এতে সমানভাবে প্রেম, দেশীয় ঐতিহ্য ও হারানো সময়কে তুলে ধরা হয়েছে। ছবিটিতে দেশীয় চলচ্চিত্রের শীর্ষনায়ক শাকিব খানের সঙ্গে অভিনয় করার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। হলফ করে বলতে পারি গলুই দেখে দর্শক মুগ্ধতায় ভাসবেন।

শান নিয়েও আমার প্রত্যাশার লেভেল হাই। একেবারেই অন্যরকম ভালো লাগার গল্পে নির্মাণ। ছবিটি ঈদে দর্শকদের অন্যরকম আনন্দ দেবে বলে আমার বিশ্বাস।

 

ঈদ মানেই ধুমধাড়াক্কা গান নয় : ফাহমিদা নবী

ঈদে দুটি গান নিয়ে আসছেন সংগীতশিল্পী ফাহমিদা নবী।  দুটি গানের সুরই করেছেন তিনি। এই তারকার সঙ্গে আলাপন-

ঈদে দুটি গান নিয়ে আসছেন। বিস্তারিত বলবেন কি?

ঈদ উপলক্ষে আমার গাওয়া ও সুর করা দুটি নতুন গান ভিডিওসহ ২৭ এপ্রিল মুক্তি পায় আমার ইউটিউব চ্যানেল আনমোল প্রেজেন্টস-এ। গান দুটি হচ্ছে ‘আমি তোমার সমাধিতে এসেছি’ এবং ‘এমন কেন হয়’। প্রথমটি লিখেছেন মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী, সংগীতায়োজন করেছেন তানভীর দাউদ রনি ও শুভেন্দু দাস।

মিউজিক ভিডিওটি নির্মাণ করা হয়েছে দেশের বাইরে। নির্দেশনায় ছিল আনমোল। এই গানটির কথা, সুর ও সংগীত এমনভাবে করা, যেন গানটি শোনার পর সবাই নস্টালজিক হয়ে পড়ছে। সঙ্গে একটা মন খারাপের বার্তা। যাদের শুনিয়েছি তারা আমাকে বলেছেন, ঈদের সময় কেন এমন স্যাড গান? আসলে দর্শকরাই আমাকে স্যাড মেলোডি কুইন বলে ডাকেন। আমি ভালো কথার একটি গান পেলে তা দিয়ে অন্যরকম কিছু করার চেষ্টা করি। ঈদ মানেই যে একটা ধুমধাড়াক্কা গান করে ফেলব, তা আমার দ্বারা কখনই সম্ভব নয়। এসব গান আমি গাইতে চাই না, আমার দ্বারা হবেও না।

সিনেমার ঢংয়ে আনন্দ মেলা

সিনেমা নির্মাণের আঙ্গিকে তৈরি হয়েছে বিটিভির ঈদের ‘আনন্দ মেলা’। এটি উপস্থাপনা করছেন সাজু খাদেম ও নাদিয়া আহমেদ। বিগত পাঁচ দশকের সিনেমার জনপ্রিয় পাঁচ গানের সঙ্গে থাকছে তুষার খান, চিত্রলেখা গুহ, মুরাদ, চাঁদনী, নিরব, রুহি, মাহিয়া মাহি, সাব্বির, সাজু খাদেম ও নাদিয়ার পারফরমেন্স। আরও থাকছেন তিন পুরুষ সংগীতশিল্পী। প্রচার হবে ঈদের দিন রাত ১০টার ইংরেজি সংবাদের পর।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর