মঙ্গলবার, ২৪ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
সা ক্ষা ৎ কা র

সাধারণ মানুষের ছবি ‘পাপ-পুণ্য’

চ ঞ্চ ল চৌ ধু রী

সাধারণ মানুষের ছবি ‘পাপ-পুণ্য’

বহুমাত্রিক অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। মঞ্চ, বিজ্ঞাপন, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র- সব মাধ্যমেই তিনি দর্শকপ্রশংসিত। যে কোনো চরিত্রে সাবলীল অভিনয়ের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। সম্প্রতি তাঁর ‘পাপ-পুণ্য’ মুক্তি পেয়েছে; মুক্তির অপেক্ষায় ‘হাওয়া’। ব্যস্ত রয়েছেন একাধিক ওয়েব সিরিজ-নাটকে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন --পান্থ আফজাল

 

শুনেছি শুটিংয়ে আছেন। কোন কাজের শুটিং?

নতুন একটি ওয়েব সিরিজের শুটিংয়ে আছি। ‘কারাগার’। নির্মাতা সৈয়দ আহমেদ শাওকী। বেশ কিছুদিন একটানা চলবে শুটিং। আশা করছি দর্শক উপভোগ্য এমন একটি ওয়েব সিরিজ হবে ‘কারাগার’। আমি মনে করি, যার যার কাজ সততার সঙ্গে করলে দর্শকের মন কাড়বেই।

 

যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার শতাধিক প্রেক্ষাগৃহ ছাড়াও বাংলাদেশের ‘পাপ-পুণ্য’ মুক্তি পেয়েছে। দর্শক সাড়া কেমন পাচ্ছেন?

আরও কিছুদিন পর বলা যাবে, দর্শক সিনেমাটি কেমনভাবে নিচ্ছেন। তবে এটুকু সবাই জানে, আমি কী ধরনের কাজ করি। সেই ধারাবাহিকতায় ‘পাপ-পুণ্য’ করেছি। শতভাগ যত্ন দিয়ে কাজটি করেছি। প্রদর্শনীর আগে আমি, সিয়ামসহ টিমের সবাই সোশ্যাল মিডিয়ায় এ সিনেমা দেখার জন্য প্রচার করেছি। আমি তো বলব, এটি সাধারণ মানুষের সিনেমা। গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘মনপুরা’র দর্শক যারা, তাদের জন্যই এই সিনেমা। তাই চাই সবাই সিনেমাটি দেখুক। তারপর বলুক আরেকজনকে। অনেকে বলছেন, সিনেমা শিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। তবে এ অবস্থা উত্তরণের জন্য হলেও সবাইকে সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখা দরকার। আমাদের আছে কয়েক হাজার নির্মাতা, শিল্পী, সাংবাদিক। তাঁরা পাশে থাকলে সিনেমা শিল্প এগোবেই। শুধু ভালো কাজ করে বসে থাকলেই হবে না, সবাইকে তা জানাতে হবে। আমি কিন্তু নিজের স্বার্থের কথা কখনোই চিন্তা করিনি। দর্শকের কথা চিন্তা করেই কজি করি। আমি কখনো দর্শককে হতাশ করতে চাই না। কেন সিনেমা শিল্প ধ্বংস হচ্ছে, কেন এগোচ্ছে না? তা খুঁজে বের করে বলতে হবে সবাইকে। তাই দর্শককে বলব, ‘পাপ-পুণ্য’ খাঁটি বাংলাদেশি সিনেমা। দেখলে ঠকবেন না, বাংলা সিনেমায় আপনার অবদান থেকে যাবে। নিকটবর্তী সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমাটি দেখার আমন্ত্রণ আপনাদের সবাইকে। বাংলা সিনেমার জয় হোক।

 

মুক্তি প্রতীক্ষিত ‘হাওয়া’ নিয়ে কতটা আশাবাদী?

গল্প একেবারেই আলাদা। আমার চরিত্রও ভিন্নধর্মী। মেজবাউর রহমান সুমন ভালো কষ্ট করেছেন কাজটি নিয়ে। আমি আসলে নির্মাতার ওপর আস্থা না রাখতে পারলে কাজ করি না।  সেদিক থেকে সিনেমাটি নিয়ে আমি আশাবাদী।

 

‘স্ক্রিপ্ট নেই, শুধু গল্পেই নির্মিত হচ্ছে নাটক’-অভিমত কী?

স্ক্রিপ্টিং দুর্বলতা রয়েই গেছে। অনেক ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক গল্প দিয়েই নাটক নির্মিত হচ্ছে। তাই স্ক্রিপ্টিং নিয়ে খুবই বিব্রত ও বিরক্ত! ভালো স্ক্রিপ্টের অভাব খুব অনুভব করি। হুটহাট করে লিখলেই তো আর হয় না! বেশির ভাগ সময় শুটিং করতে গিয়ে  প্যারালাল ক্যারেক্টার তেমন করে নেই। দু-একজনের বেশি চরিত্র নেই। কারও কোনো প্রিপারেশনও নেই। এখন তো স্ক্রিপ্ট ছাড়াই শুধু গল্পের ওপর ভর করে নাটকের শুটিং হয়। আগে তো ফুল স্ক্রিপ্ট পড়ে শুটিং করতাম। এখন মূল স্ক্রিপ্ট হাতে পাই শুটিংয়ের এক দিন আগে বা আগের দিন রাতে। অনেকেই সিস্টেম ব্রেক করছেন। এ সমস্যা পরিচিত নির্মাতাদের মধ্যেই বেশি। তাঁদের অনুরোধে সিনোপসিস পছন্দ হলে শুটিং করতে হয়।

 

প্রচারসর্বস্ব পোস্টার, এটা নিয়ে কিছু বলবেন?

নাটকের পোস্টার; নতুন একটা ট্রেন্ড। তবে যতটা গুরুত্ব দিয়ে একজন ডিজাইনারকে দিয়ে ইদানীং নাটকের পোস্টার তৈরি হচ্ছে বা নাটক-সিনেমার প্রোমো তৈরি হচ্ছে, সে তুলনায় মূল কাজটায় অধিকাংশ নির্মাতা যথেষ্ট গুরুত্ব  দিচ্ছেন না। এটা খুবই দুঃখজনক।

 

নাটকের দর্শক মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এই দায়বদ্ধতা আসলে কার?

এই দায়বদ্ধতা শিল্পী এবং দর্শক দুই পক্ষেরই। আর্টিস্টকে যেমন মানসম্পন্ন কাজ উপহার দিতে হবে, তেমনি দর্শককেও ভালো কাজের সাপোর্ট দিতে হবে। শুধু ভিউয়ের পেছনে ছুটলেই হবে না। আমরা সামগ্রিকভাবে ভুল রাস্তায় ছুটছি।

সর্বশেষ খবর