বুধবার, ২৯ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

বুড়ো বয়সেও যাঁরা বক্স অফিস কাঁপাচ্ছেন

বুড়ো বয়সেও যাঁরা বক্স অফিস কাঁপাচ্ছেন

বয়স একটা সংখ্যা! বলিউড থেকে শুরু করে অনেক দক্ষিণী সুপারস্টার তা প্রমাণ করে চলেছেন। বুড়ো বয়সেও তাঁদের পর্দায় উপস্থিতি সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে বাড়তি উত্তেজনার জন্ম দেয়।  তাঁদের তোপে তছনছ হচ্ছে বক্স অফিস পরিসংখ্যান। সেসব কিছু মেগাস্টার নিয়ে লিখেছেন- পান্থ আফজাল

 

কমল হাসান- ৬৭

দক্ষিণী সুপারস্টার কমল হাসান। তাঁর মেয়ে শ্রুতি হাসান এ সময়ের তারকামুখ। কমলের কাছে বয়স একটা সংখ্যাই! অন্তত তাই প্রমাণ করে চলেছেন এই সময়েও। ৬৭ বছর বয়সেও ক্যারিয়ার সেরা আয় করেছে তাঁর নতুন ছবি ‘বিক্রম’। তাঁর তোপে তছনছ হচ্ছে পরিসংখ্যান। ১৫০ কোটি রুপির সিনেমাটি ইতোমধ্যেই ভেঙেছে ‘বাহুবলি ২’র রেকর্ডও। লোকেশ কঙ্গরাজের পরিচালনায় এই ছবিটি বক্স অফিসে ৪০৯ কোটি রুপি আয় করেছে এ পর্যন্ত। কমল হাসানের ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ আয় করা ছবি এটি। এ সিনেমা দিয়েই কমল হাসান আবারও ফিরে আসেন সিনেমা জগতে। আর প্রত্যাবর্তনেই বাজিমাত করে দিয়েছেন তিনি।

 

অমিতাভ বচ্চন – ৭৯

‘ঈশ্বরের বিরল সৃষ্টি’ অমিতাভ বচ্চন।  যে অভিনেতার কীর্তি দেখে হাঁ হয়ে যায় ছেলে-বুড়ো সবাই। বয়স ৮০ ছুঁই ছুঁই। তবু যেন তিনি এখনো চিরতরুণ। তিনি এখনো নায়ক চরিত্রে চুটিয়ে অভিনয় করে যাচ্ছেন হাঁটু বয়সী নায়িকাদের সঙ্গে। বলিউডের এই ‘অ্যাংরি ইয়াংম্যান’ সর্বদা বুঝিয়ে দিচ্ছেন তাঁর প্রয়োজনীয়তা। সম্প্রতি বিগ বি-কে একটি অ্যাকশন সিকুয়েন্স শুটের মাঝে দেখা গেছে। ছবির ক্যাপশনে ‘শাহেনশাহ’ লিখেছেন, ‘৫৩ বছর পর, আশিতে এসেও কিছু জিনিস পালটায় না অ্যাকশন’। ঠিক যেন বুড়ো হাড়ের ভেলকিতে কুপোকাত সবাই! এ বয়সেও এক টেকেই ভয়ংকর স্ট্যান্ট করেন বিগ-বি।

 

রজনীকান্ত -৭২

দক্ষিণী সুপারস্টার রজনীকান্ত। ৭২ বছর বয়সী এই মেগাস্টার এখনো দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন শোবিজ অঙ্গন। ঐশ্বর্য রায় থেকে শুরু করে এমি জ্যাকসন- যে কোনো বয়সের নায়িকার সঙ্গেই তিনি মানানসই। রজনীকান্তকে দক্ষিণের বহু মানুষ ভগবানের মতো শ্রদ্ধা করে। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্রসহ অন্যান্য দেশের সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। ‘শিবাজী’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য ২৬০ মিলিয়ন রুপি সম্মানী নেওয়ার পর তিনি জ্যাকি চ্যানের পর এশিয়ার সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক গ্রহণকারী তারকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন।

 

মামুট্টি - ৭১

এই চলচ্চিত্র অভিনেতা-প্রযোজকের এখন বয়স ৭১। মালয়ালাম ছবিতে কাজ করলেও তিনি অসংখ্য তামিল, হিন্দি, তেলুগু এবং কন্নড় সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তিন যুগের অধিক সময়ের ক্যারিয়ারে তিনি ৩৬০টির বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন। তিনি মালয়ালাম ছবিতে দ্বৈত ভূমিকায় (৯টি) সর্বোচ্চ সংখ্যক অভিনয় করেছেন। মানবহিতৈষী কাজেও তিনি নিবেদিতপ্রাণ। তাঁকে ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে মহাতারকা হিসেবে গণ্য করা হয়।

 

আক্কিনেনি নাগার্জুন -  ৬৩

দক্ষিণ ভারতীয় সুপারস্টার আক্কিনেনি নাগার্জুন। তিনি বিখ্যাত অভিনেতা আক্কিনেনি নাগেস্বরা রাওয়ের ছেলে, যিনি ষাট ও সত্তরের দশকের জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন। আর আক্কিনেনি নাগার্জুনের ছেলে নাগা চৈতন্যও তেলেগু ফিল্মের উঠতি তারকা। যাঁরা নিয়মিত দক্ষিণ ভারতের সিনেমা দেখেন, তাঁদের কাছে নায়ক নাগার্জুন খুবই পরিচিত। রজনীকান্ত, কমল হাসান-পরবর্তী সময় দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন যাঁরা, নাগার্জুন তাঁদের অন্যতম। দক্ষিণ ভারতের নায়কদের অন্যতম প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ পুরুষালি গোঁফ। নাগার্জুনের তা আছে। সুঠাম স্বাস্থ্যের সুদর্শন নায়ক। তিনি অনেক সুপারহিট ব্লকব্লাস্টার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।

 

নন্দমুরি বলকৃষ্ণ - ৬২

তেলেগু চলচ্চিত্রের স্টার! তেলেগু চলচ্চিত্রের ধ্রুপদী অভিনেতা এন টি রামা রাওয়ের ষষ্ঠ পুত্র তিনি। ১৯৭৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘টাটামা কালা’ নামের একটি তেলেগু চলচ্চিত্রে নন্দমুরি বলকৃষ্ণ প্রথম অভিনয় করেছিলেন মাত্র ১৪ বছর বয়সে। যুবরত্ন, নাটাসিমহাম এবং বোনানজা নামে পরিচিত এই তারকা ৪০ বছরের ক্যারিয়ারে শতাধিক চলচ্চিত্রে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন। পর্দায় দাদা, বাবা ও নাতি হিসেবে তিনটি ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন।

 

চিরঞ্জীবী - ৬৬

বয়স ৬৬। এই বয়সেও পর্দায় তাঁর দীপ্ত উপস্থিতি সবার কাছে অন্যরকম আবেদন ছড়ায়। তাঁকে তেলেগু চলচ্চিত্রের মেগাস্টার বলা হয়ে থাকে। তাঁর ছেলে রামচরণ। তাঁর ছেলে দক্ষিণী চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম স্টার এখন। চিরঞ্জীবী একজন রাজনীতিবিদও। পদ্মভূষণে ভূষিত এই অভিনেতা নিজের ছেলে রামচরণের সঙ্গে দাপিয়ে অভিনয়ও করেছেন ‘আচার্য’ সিনেমায়। এটি এ বছরই মুক্তি পায়। নায়িকা ছিলেন পূজা হেগড়ে।

 

মোহনলাল বিশ্বনাথন - ৬২

অভিনেতা ও প্রযোজক হিসেবে সমাদৃত মোহনলাল। মালয়ালাম চলচ্চিত্রের পাশাপাশি তিনি ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের চলচ্চিত্রেও কাজ করেছেন। চার দশকে ৩৪১টি সিনেমা, ২০টি ব্লকবাস্টার উপহার দিয়েছেন মোহনলাল। মজার বিষয় হচ্ছে, ‘দৃশ্যম’র মোহনলাল ছিলেন ঐশ্বরিয়ার প্রথম নায়ক। সিনেমার নাম ‘ইরুবার’। ‘কমপ্লিট অ্যাক্টর’খ্যাত এই অভিনেতাকে তাঁর অঞ্চলের মানুষ ‘লালেট্টা’ বলে ডাকে। সেই লালেট্টা মলিউডের বক্স অফিসে সৌভাগ্যের জাদুর কাঠি! ছোট্ট এক ফিল্মপাড়ায় মোহনলাল বের করেছেন ১০০ কোটির সিনেমাও।

 

অজিত কুমার - ৫১

তামিল নায়ক অজিত কুমার। তিনি ফরমুলা ২’র একজন রেসারও। ২০১৪ সালে ‘ফোর্বস’র সেরা ১০০ সেলিব্রেটির তালিকায় কুমারের নাম ওঠে আসে। অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমা হচ্ছে ভালিমাই, বিশ্বাসম, ভিভেগাম, ভেদালাম।

 

বিক্রম - ৫৬

পুরো নাম ‘কেনেডি জন ভিক্টর’। তিনি মঞ্চনাম বিক্রম অথবা চিয়াঁ বিক্রম নামেও বেশ পরিচিত। তিনি একাধারে একজন অভিনেতা, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী। তিনি তামিলনাড়ুর শ্রেষ্ঠ একজন অভিনেতা। বিক্রম নায়ক ছাড়াও ব্যতিক্রমধর্মী চরিত্রে অভিনয় করে থাকেন। কখনো তিনি অন্ধ গ্রাম্য, কখনো রবিনহুডের মতো শারীরিক গঠনে, বডি-বিল্ডার,  আদর্শবাদী আইনজীবী, ট্রাইবাল লিডার কিংবা সুপারহিরোর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।

সর্বশেষ খবর