শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

মিষ্টি মেয়ে কবরীর জন্মদিন আজ

মিষ্টি মেয়ে কবরীর জন্মদিন আজ

দেশীয় চলচ্চিত্রের মিষ্টি মেয়ে খ্যাত অভিনেত্রী কবরী। গত বছরের ১৭ এপ্রিল সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি। আজ এই ক্ষণজন্মা প্রয়াত অভিনেত্রীর জন্মদিনে তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছে বাংলাদেশ প্রতিদিন পরিবার। শ্রদ্ধাভরে তাঁর জীবনের নানা দিক তুলে ধরেছেন - আলাউদ্দীন মাজিদ

 

চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত গ্রাম আলো করা মীনা পাল

১৯৫০ সাল। চট্টগ্রাম জেলার প্রত্যন্ত একটি গ্রাম। বোয়ালখালী উপজেলা। এখানেই শ্রীকৃষ্ণ দাস পাল এবং মা শ্রীমতী লাবণ্য প্রভা পালের ঘর আলো করে পৃথিবীতে অভিষেক ঘটে ফুটফুটে চেহারার একটি মেয়ের। বাবা-মা আদর করে যার নাম রাখেন মীনা পাল। মীনার জন্মগ্রহণ বোয়ালখালীতে হলেও শৈশব ও কৈশোর বেড়ে ওঠে ইট-কাঠের নগরী চট্টগ্রামে। শৈশব থেকেই সংস্কৃতির প্রতি মায়া তাঁর মনে বাসা বাঁধে। ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে আবির্ভাব কবরীর। ১৯৬৪ সালে পা রাখেন চলচ্চিত্রে। তারপর তো দক্ষ অভিনেত্রী হিসেবে শুধুই এ দেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাস হয়ে যাওয়া একটি সম্মানের নাম কবরী।

 

চলচ্চিত্রে অভিষেকের গল্প

১৯৬৪ সাল। প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সুভাষ দত্ত নির্মাণ করবেন ‘সুতরাং’ নামের একটি ছবি। এ ছবির ‘জরিনা’ চরিত্রের জন্য একটি মেয়ে খুঁজছিলেন তিনি। ছবির সংগীত পরিচালক সত্য সাহা কবরীর সন্ধান দিলেন সুভাষ দত্তকে। দত্ত বাবু জানালেন, জরিনা চরিত্রের জন্য তাঁকে তাঁর পছন্দ হয়েছে।

 

মীনা পাল থেকে যেভাবে কবরী

শুরু হলো নাম নিয়ে গবেষণা। একবার ঠিক হলো ‘করবী’ দেওয়া হবে। কেউ আবার বলল না, ‘কবরী’। দুটো নাম নিয়ে বেশ ভাবনাচিন্তা চলল। শেষতক ‘কবরী’ নামটাই টিকে গেল। আর ‘মীনা পাল’ হয়ে গেলেন ‘কবরী।’

 

যত সম্মাননা

১৯৭৮ সালে শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে আবদুল্লাহ আল মামুন নির্মিত ‘সারেং বউ’ ছবির জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন তিনি। ২০১৩ সালে তাঁকে দেওয়া হয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা। এ ছাড়া বাচসাসসহ আরও অনেক সম্মাননা লাভ করেন তিনি। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকা তাঁকে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করে।

 

লেখিকা...

বর্ণাঢ্য ও সংগ্রামী জীবন কবরীর। ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনেও রয়েছে বিপুল ঘটনা-অভিজ্ঞতা। এসব নিয়ে সারাহ বেগম কবরী ২০১৭ সালে অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশ করেন তাঁর বই ‘স্মৃতিটুকু থাক’।

 

নির্মাতা...

২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে কবরী তাঁর পরিচালিত দ্বিতীয় ছবি ‘এই তুমি সেই তুমি’র শুটিং শুরু করেন। করোনার কারণে পরে অবশ্য এ ছবির শুটিং বন্ধ রাখতে বাধ্য হন তিনি। ২০২১ সালের শুরুতে শুটিং শেষ করেন ছবিটির। ২০০৫ সালে তিনি প্রথম ‘আয়না’ শিরোনামের একটি ছবি নির্মাণ করেছিলেন। এটি প্রশংসিত ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের বিভিন্ন শাখায় সম্মাননা লাভ করেন তিনি। এ ছাড়া তিনি ছোট পর্দার নাটকও নির্মাণ করেন।

 

গীতিকার...

সফল অভিনেত্রী, চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখিকা ও রাজনীতিবিদ একসময় গীতিকার হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন। তাঁর সরকারি অনুদানে নির্মিতব্য ‘এই তুমি সেই তুমি’ নামে সিনেমার মাধ্যমে গীতিকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ কবরীর। ‘তুমি সত্যি করে বলো তো’ শিরোনামের গানটিতে কণ্ঠ দেবেন সাবিনা ইয়াসমিন। আর এই কণ্ঠশিল্পী কবরীর রচিত গানটিকে দশ এ নয় দেন।

 


জন্মদিনে সতীর্থের শুভেচ্ছা

শ্রদ্ধা রইল : ববিতা

চলচ্চিত্রে তাঁর ডেডিকেশন কখনো কেউ ভুলতে পারবে না। তিনি পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে গেছেন সত্যি, এ দেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল। জন্মদিনে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রইল।

 

তাঁকে ভোলার নয় : শাবানা

তাঁকে কখনো ভোলার নয়। সৃষ্টিকর্তাকে বলব কবরী যেখানেই থাকেন তাঁকে যেন শান্তিতে রাখেন। আজ তাঁর জন্মদিনে হৃদয়ের গভীর থেকে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা আর দোয়া রইল।

 

বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই : আলমগীর

আমার জীবনের ছবির প্রথম নায়িকা তিনি। তিনি কেমন অভিনেত্রী ছিলেন তা বিচারের ধৃষ্টতা আমার নেই। মানুষ হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত মানবিক। আজ তাঁর জন্মদিনে তাঁর স্মৃতির প্রতি রইল আমার বিনম্র শ্রদ্ধা।

সর্বশেষ খবর