রবিবার, ৭ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : বিদ্যা সিনহা মিম

আমার চারপাশ পরাণময় হয়ে গেছে

আমার চারপাশ পরাণময় হয়ে গেছে

পরাণ ছবির সাফল্যে এখন উচ্ছ্বাসে উত্তাল অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম।  এই খুশিতে বলতে গেলে তিনি এখন হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছেন। ছবিটির অনন্যা চরিত্রটি তাকে নিয়ে গেছে অন্যরকম উচ্চতায়। এ বিষয়ে মিমের অনুভূতি আর ভালো লাগা নিয়ে বলা কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

পরাণ হয়ে উঠেছে সব মানুষের ছবি, কেমন লাগছে?

সত্যিই আমি উচ্ছ্বসিত, খুব ভালো লাগছে। সব শ্রেণির মানুষ ছবিটি দেখছেন। মুক্তির ২৭তম দিনে এসেও হাউসফুল যাচ্ছে। যারা কখনই সিনেমা হলে ছবি দেখতে আসেননি, তারাও ছবিটি দেখছেন। পরনো দর্শকের পাশাপাশি নতুনরাও দেখতে আসছেন। কেউ কেউ আমাকে বলেছেন, তারা দু-তিনবার ছবিটি দেখেছেন। বড় ব্যাপার হলো, অনেকে পরিবার নিয়ে ছবিটি দেখছেন। অনেক বছর পর সিনেমা হলে বাংলা ছবি নিয়ে এমন ঘটনা ঘটল। এটা তো আমার জন্য অসম্ভব ভালো লাগার মতো একটা ব্যাপার।’

 

অনন্যা চরিত্রটি এখন দর্শকদের আলোচনার বিষয়, অনুভূতি কেমন?

‘পরাণ’ দেখে অনেক দর্শকই বলেছেন, এই মিমকে আগে দেখেননি তারা। দর্শকের এই ভালোবাসা ছুঁয়ে গেছে আমাকে, কী পরিমাণ শুভেচ্ছাবার্তা যে পাচ্ছি, বলে শেষ করা যাবে না। যেখানেই যাচ্ছি, অনন্যার প্রশংসা। মনে হচ্ছে পরাণকে ঘিরে সব জায়গায় উৎসব হচ্ছে। আমি পরিবার নিয়ে দেখতে গিয়েছিলাম। শো শেষে মায়ের বয়সী একজন এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে আদর করেছেন। অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন। আমার চোখে পানি এসেছিল। এমন হাজারো দর্শকের প্রশংসায় সিক্ত আমি। বলতে পারেন, ‘পরাণ’ আমাকে সিনেমায় নতুন জীবন দিয়েছে। এর চেয়ে ভালো লাগা আর কিছু হতে পারে না।

 

অনন্যার মতো নেগেটিভ চরিত্র নিয়ে দর্শকরা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে, কী বলবেন?

‘পরাণ’ ছবিতে অনন্যা চরিত্রের একটা নেতিবাচক দিকও দেখানো হয়েছে। তাই দর্শকরা অনন্যাকে গালমন্দ করতেও ছাড়েননি। প্রথম দিকে অনন্যাকে গালমন্দ করা মেনে নিতে পারতাম না। অন্ধকারে এক কোণে দাঁড়িয়ে শো দেখতাম। দর্শক প্রতিক্রিয়া দেখতাম। দর্শক গালমন্দ করতেন। খুব খারাপ লাগত। বাসায় ফিরেও মন খারাপ থাকত। টিমের সবাই বোঝাতেন, একজন অভিনেতার এটাই সার্থকতা। পরে বুঝলাম, চরিত্রটিই তো এমন। তার মানে আমি চরিত্রটিতে অভিনয়ের ক্ষেত্রে শতভাগ সমৃদ্ধ কাজ দিতে পেরেছি বলেই দর্শক এমন প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন।’

 

দর্শকের এই ভালোবাসা ছুঁয়ে গেছে আমাকে, কী পরিমাণ শুভেচ্ছাবার্তা যে পাচ্ছি, বলে শেষ করা যাবে না।  যেখানেই যাচ্ছি, অনন্যার প্রশংসা। মনে হচ্ছে পরাণকে ঘিরে সব জায়গায় উৎসব হচ্ছে। শো শেষে মায়ের বয়সী একজন এসে জড়িয়ে ধরে আদর করেন আমাকে
একটা কাজ নিয়ে এত ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি যে, আমার চারপাশ ‘পরাণ’ময় হয়ে গেছে। পরাণ জনমানুষের সিনেমা।  পরাণ নিয়ে সবার এত উচ্ছ্বাস, আবেগ দেখতে ভীষণ ভালো লাগছে।

 

অনন্যার মতো একটি নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করতে কীভাবে সাহসী হলেন?

দেখুন এখন চলচ্চিত্রের ভাষা পরিবর্তন হয়েছে। কেজিএফে আমরা যাকে হিরো দেখি তার চরিত্রটা কিন্তু নেতিবাচক। বিশ্বব্যাপী গল্প ও চরিত্রের গুরুত্ব বেড়েছে। এখন চেহারার গ্লামারের চেয়ে চরিত্রের গ্লামার আকর্ষণীয় হলে ছবি হিট করছে। আমার কাছে মনে হয়েছে এটা গল্পের হিরোইন। আর সেই চরিত্রটা আমার গল্পের ভিলেন। এটা খুবই ইন্টারেস্টিং। কাজ করতে গিয়ে আমি নিজেই পরিচালককে বলেছি, ভাইয়া এটা কী হচ্ছে? দর্শক তো আমাকে গালি দেবে। গালি দিয়েছেও। দর্শকের গালিই প্রমাণ করে পরাণে এমন চরিত্রে কাজের সিদ্ধান্তটা সঠিক ছিল। আমি তথাকথিত নায়িকা থেকে বেরিয়ে অভিনেত্রী হতে চাই। আমি সেই চরিত্রটা করতে চাই, যেটা কঠিন। যেটা কেউ কখনো করেনি।

 

পরাণ-এর কল্যাণে ফের আলোচনায় এলেন, কেমন লাগছে?

এমন একটি সময়ের অপেক্ষায় ছিলাম। অনেক ছবিই করেছি। কিন্তু সেভাবে আলোচনা হয়নি। আফসোস ছিল। চলচ্চিত্রে নতুন করে আস্থা পেয়েছি। সবাই দেখে খুবই প্রশংসা করল। সবাই যখন ছবিটি দেখে হাততালি দিচ্ছিলেন, সেই সময়ের অনুভূতি বলে বোঝানো যাবে না। একটা কাজ নিয়ে এত ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি যে, আমার চারপাশ ‘পরাণ’ময় হয়ে গেছে। পরাণ জনমানুষের সিনেমা। পরাণ নিয়ে সবার এত উচ্ছ্বাস, আবেগ দেখতে ভীষণ ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে, আমার প্রত্যাশা আর প্রাপ্তি পূর্ণতা পেয়েছে। 

 

লুঙ্গি পরে সামান আলী ছবিটি দেখতে আসায় ভিন্ন আলোচনাকে কীভাবে দেখছেন?

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার শোতে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা পরাণ দেখেছেন। ওই দিন রাতে তার সঙ্গে দেখা করতে ছুটে গিয়েছিলাম। একদম সাদাসিধে একজন মানুষ, ভালো মনের মানুষ। পরাণ নিয়ে চাচার উচ্ছ্বাস আমাকে ছুঁয়ে গেছে।

 

অনেকের ধারণা পরাণ আপনার ক্যারিয়ারটাই ঘুরিয়ে দেবে। সত্যি কী তাই?

এমন ভাবনাকে আমি শ্রদ্ধা করি। আমার শুধু ভালো লাগছে। আজকেও অনেকে ফোন দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন টিকিট পাচ্ছেন না। আগে থেকে টিকিট কাটতে হচ্ছে সেটা জানেন না। এমন অভিযোগ শুনলে কেমন যেন লাগে। একবার মনে হয় আমি তো টিকিট কাউন্টারের কেউ নই। আবার মনে হয়, তারা সিনেমা দেখতে যাচ্ছে এবং টিকিট না পেয়ে আহত মনে আমাকে অভিযোগ জানাচ্ছে,  এটাও সিনেমার জন্য বড় প্রাপ্তি। আবার টিকিট না পেয়ে ফিরে যাওয়াদের জন্য মায়াও লাগে।  এটি আমার অভিনয় ক্যারিয়ারের মুকুটে একটি নতুন পালক যোগ হলো, এটা ভেবে খুব খুশি লাগছে।

সর্বশেষ খবর